বর্ষা নামলেই রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে ডেঙ্গুর ভয়। সেই সঙ্গে বাড়ে মশা নিয়ন্ত্রণের তৎপরতা। সাধারণত পুরসভা কিংবা পঞ্চায়েত স্তরে নালা-নর্দমায় গাপ্পি মাছ ছেড়ে মশার বংশবৃদ্ধি ঠেকানোর চেষ্টা করে থাকে প্রশাসন। এবার সেই লড়াইয়ে নতুন দিক উন্মোচন করল রাজ্য মৎস্য দফতর। কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে তারা তৈরি করেছে উন্নত প্রজাতির গাপ্পি মাছ। এই মাছ আগের চেয়ে বেশি সময় বেঁচে থাকতে পারবে নোংরা জলেও। আর সেইসঙ্গে আরও বেশি করে ধ্বংস করতে পারবে মশার লার্ভা।
আরও পড়ুন: বড় সাফল্য, রাজ্যের প্রথম ডেঙ্গু মুক্ত অঞ্চল হয়ে উঠল পানিহাটি, রিপোর্ট সুডার
এত দিন ধরে গাপ্পি মাছের জোগান বেসরকারি সংস্থা বা চাষিদের কাছ থেকেই নিতে হত প্রশাসনকে। তবে এবার মৎস্য দফতর নিজেরাই বড়সড় পরিকাঠামো গড়ে তুলে এই মাছ উৎপাদনে স্বনির্ভর হওয়ার পথে হাঁটছে। মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী জানালেন, গাপ্পির দুটি ভিন্ন ভ্যারাইটিকে সংকরায়ণের মাধ্যমে উন্নত প্রজাতি তৈরি করা হয়েছে। এগুলির টিকে থাকার ক্ষমতা অনেক বেশি। ফলে মশা নিধনে কার্যকারিতা আগের তুলনায় বহুগুণ বাড়বে।
এই প্রকল্পের কেন্দ্রবিন্দু পূর্ব কলকাতার নলবন। মৎস্য দফতরের অধীনে থাকা ১৬টি বৃহৎ প্রকল্পের অন্যতম এটি। সেখানেই শুরু হয়েছে ৫০ লক্ষ গাপ্পি মাছ চাষের বৃহৎ কর্মসূচি। দফতরের আধিকারিকদের মতে, এই প্রথম কোনও সরকারি প্রকল্পে এত বড় আকারে গাপ্পি মাছ উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দফতর সূত্রে খবর, মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত এই মাছগুলোর জোগান আগামী দিনে রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভা ও গ্রামীণ প্রশাসনকে দেওয়া হবে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় মাছ চাষ হওয়ায় খরচ অনেকটাই কমবে বলেই মনে করছেন কর্তারা।
বিপ্লব রায়চৌধুরীর বক্তব্য, এখন আর সম্পূর্ণভাবে বাইরে থেকে মাছ কিনতে চায় না রাজ্য। নিজেদের উৎপাদনে ভরসা রেখে আগামী দিনে মৎস্য দফতর গাপ্পি সরবরাহে আত্মনির্ভর হয়ে উঠতে চায়। এই প্রকল্প সফল হলে একদিকে যেমন ডেঙ্গু মোকাবিলায় আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে রাজ্য, অন্যদিকে সরকারি অর্থব্যয়েও আসবে সাশ্রয়। এমনটাই আশা করছে প্রশাসন।