এবার ডোমজুড় এবং সাঁকরাইল থানা ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন। এই দুটি থানা এলাকায় একাধিকবার অবরোধ–বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে। তার জেরে উত্তাল হয়েছে দুটি থানা এলাকা। এমনকী কয়েক ঘন্টা অবরুদ্ধ থেকেছে ১৬ নম্বর জাতীয় সড়ক। এই ঘটনার মধ্যেই ভাঙচুর হয়েছে দু’টি থানা এবং পুড়েছে পুলিশের গাড়ি। এই পরিস্থিতিতে গোলমাল ঠেকাতে এবং স্পর্শকাতর এলাকায় নজরদারি বাড়াতে সাঁকরাইল ও ডোমজুড় থানাকে ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন বলে সূত্রের খবর।
কী হবে থানা দুটি ভেঙে? এই দুটি থানা ভেঙে মোট পাঁচটি থানা গড়ে তোলা হবে। ফলে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এই পাঁচটি থানার মধ্যে তিনটিই হবে নতুন থানা। ইতিমধ্যেই এই প্রস্তাব অর্থদফতরের কাছে পৌঁছে গিয়েছে। সেখান থেকে সবুজ সংকেত মিললেই থানা তৈরির কাজ শুরু হয়ে যাবে। ২০২২ সালের জুন মাসে বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্যকে ঘিরে উত্তাল হয়েছিল সাঁকরাইল এলাকা। জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখে স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশকে ইট ছোড়া হয়। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় পুলিশের গাড়ি। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে পাঁচলা, ডোমজুড়, সলপ এলাকায়। তারপর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আর কী জানা যাচ্ছে? এই ঘটনার পর ডোমজুড় থানায় ভাঙচুর চালানো হয়েছিল। এই ঘটনার পর বদলি হয়ে যান হাওড়ার পুলিশ কমিশনার সি সুধাকর। ২০১৬ সালে ধূলাগড়ে গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছিল। পোড়ানো হয় পুলিশের গাড়ি। এমনকী এই ঘটনার জেরে দায়িত্ব নেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে বদলি হয়ে যান তদানীন্তন এসপি (গ্রামীণ) সব্যসাচী রমণ মিশ্র। এই দুটি থানা এলাকা বারবার উত্তপ্ত হচ্ছে কেন? সেটা নিয়ে রিভিউ করেন হাওড়া সিটি পুলিশের কর্তারা।
বৈঠকে ঠিক কী উঠে আসে? সাঁকরাইল থানার সীমানা ৯৬ বর্গ কিলোমিটার। আর ডোমজুড় থানার অধীনে রয়েছে ৯৭.৩০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা। এই দুই থানার সঙ্গে সীমানা রয়েছে পাঁচলা, জগাছা, দাশনগর এবং জেবিপুর থানার। এখানে আনাগোনা বাড়ছে দুষ্কৃতীদের। সেখানে থানায় পর্যাপ্ত পুলিশবাহিনী নেই। তাই পুলিশ দেরিতে ঘটনাস্থলে গেলে ক্ষোভ বাড়ছে মানুষের মনে। সাঁকরাইল এবং ডোমজুড় থানা এলাকায় প্রায়ই উত্তেজনা তৈরি হয়। ডোমজুড় এবং সাঁকরাইলে গড়ে উঠেছে একাধিক বহুতল। তাই নিরাপত্তার গুরুত্বও বেড়েছে।
ঠিক কী প্রস্তাব গিয়েছিল নবান্নে? পুলিশ সূত্রে খবর, হাওড়া সিটি পুলিশের পক্ষ থেকে নবান্নে সাঁকরাইল ও ডোমজুড় থানা ভেঙে আরও তিনটি থানা করার প্রস্তাব পাঠানো হয়। সেখানে সলপ, মানিকপুর এবং ধূলাগড়— তিনটি নতুন থানার কথা বলা হয়। তিনটি থানায় একজন করে ইনসপেক্টর, থানা পিছু পাঁচজন করে এসআই ও এএসআই এবং তিনটি থানা মিলিয়ে ১৮২ জন কনস্টেবল দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তা দিয়ে সমস্যা মেটানো হবে। থানার জন্য জায়গা দেখা হয়ে গিয়েছে। পরিকাঠামো তৈরি হয়ে গেলে থানা থেকে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাওয়া যাবে।