ছেলে বড় হয়ে ডাক্তার হবে। এই স্বপ্ন নিয়েই ছেলেকে ইউক্রেনে পাঠিয়েছিলেন মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের মিটনা হাইস্কুলের শিক্ষক মুহাম্মদ মোমিনুদ্দিন। ১৫ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষা শেষ করে বাড়ি ফেরার কথা ছিল ছেলে মাসুদ হামিদ পারভেজের। কিন্তু, এখনও যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে আটকে রয়েছেন মাসুদ। টানা কয়েকদিন ধরে মাসুদের সঙ্গে একেবারেই যোগাযোগ করতে পারছেন না তার পরিবার। এখন ছেলে কোথায় বা কি অবস্থায় রয়েছে সেই দুশ্চিন্তায় ঘুম উড়ে গিয়েছে পরিবারের সদস্যদের। এই অবস্থায় তারা চাইছেন ছেলে এবং তার বন্ধুদের ফিরিয়ে আনতে ব্যবস্থা করুক সরকার।
মালদহ জেলার হরিশচন্দ্রপুর থানার অন্তর্গত মজ্জিদ পাড়ার বাসিন্দা মাসুম হামিদ পারভেজ। তিনি কিভ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। বাবা মুহাম্মদ মোমিনউদ্দীন স্থানীয় ওই হাইস্কুলের শিক্ষক। মা হামেদা খাতুন গৃহবধূ। মাসুমের ২ দিদি রয়েছে এবং এক ছোট ভাই রয়েছে।
মোমিনুদ্দিনের কথায়, ‘ যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ধ্বংসস্তুপ কিভে হস্টেলের বাঙ্কারের মধ্যে আশ্রয় নিয়েছিল ছেলে। তাদের কাছে খাবার বা জল সেই অর্থে ছিল না। যখন শেষ যোগাযোগ হয় তখন জানতে পারি এখন তারা বাঙ্কারে লুকিয়ে আছে, খাবার শেষ। বাইরে অনবরত গোলাবর্ষণ চলছে আর সাইরেনের আওয়াজ। এর পরেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।’ ছেলের খোঁজ না পেয়ে চরম উৎকন্ঠায় আতঙ্কে দিন কাটছে মোমিনুদ্দিনের। রাতেও ঠিকমত ঘুমাতে পারছেন না। একরাশ শুন্যতা বাড়ি জুড়ে। যখন বিভিন্ন জায়গায় একে একে ইউক্রেনে আটকে থাকা ডাক্তারি পড়ুয়াদের ঘরে ফেরার খবর মিলছে তখন মাসুম হামিদ পারভেজের কোনও খবর না পাওয়ায় মাসুদের পরিবারের চিন্তা আরও বেড়ে যাচ্ছে।
মাসুমের মা হামেদা খাতুন বলেন, ‘ছেলে বলেছিল পরীক্ষাটা শেষ করে আসবে। কিন্তু রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধ বেঁধে গেল। খবর নেই।এরকম অবস্থায় ওরা কিভাবে বেশিদিন থাকবে! তাই আমরা চাইছি সকলে দেশে ফিরে আসুক। ছেলে না ফেরা পর্যন্ত প্রবল দুশ্চিন্তায় আছি।’