আবারও বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে মধ্যযুগীয় বর্বরতার শিকার গৃহবধূ। ঘটনাস্থল উত্তরবঙ্গ। পরকীয়ার অভিযোগে মহিলাকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে। এমনকী, নির্যাতিতার মাথার চুল কামিয়ে ন্যাড়া করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এখানেই থেমে থাকেননি পড়শীরা। এরপর জুতোর মালা পরিয়ে নির্যাতিতা ওই মহিলাকে গোটা গ্রামে ঘোরানো হয় বলেও অভিযোগ। শুক্রবার রাতে মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে রাজগঞ্জের পানিকৌড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের পোষ্কার পাড়ায়। ঘটনার জেরে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে রাজগঞ্জ থানার পুলিশ। উত্তেজনা সামাল দিতে বেগ পেতে হয় পুলিশ বাহিনীকে। যদিও এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করার খবর পাওয়া যায়নি।স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিবাহিত হওয়ার সত্ত্বেও বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে একাধিকবার পরপুরুষের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিলেন ওই মহিলা। সেই অভিযোগে লাঠিসোটা নিয়ে তাঁর বাড়িতে চড়াও হন গ্রামবাসীরা। তারপর বেধড়ক মারধর করে মহিলার মাথা মুড়িয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে গোটা গ্রাম ঘোরানোর অভিযোগ উঠেছে পাড়া প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্নদা রায় নামে নির্যাতিতা ওই মহিলা দু'বার তাঁর স্বামী সদানন্দ রায়কে ছেড়ে অন্য যুবকের সঙ্গে চলে গিয়েছিলেন। অবশ্য সেই দু'বার নিজেই পুনরায় বাড়িতে ফিরে আসেন। তারপরও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে এই নিয়ে কোনও সমস্যা তৈরি হয়নি বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু কয়েক মাস আগে তৃতীয়বার বাড়ি ছেড়ে চলে যান ওই বধূ। তারপরে গত শনিবার আবারও বাড়ি ফিরে আসেন অন্নদা। তার ফেরার খবর জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা। লাঠিসোটা নিয়ে তার বাড়িতে চড়াও হন তাঁরা। তারপর বেধড়ক মারধর করা হয় ওই মহিলাকে। এমনকী, তার মাথা কামিয়ে ফেলা হয় বলে অভিযোগ। পরে তাঁর গলায় জুতার মালা পরিয়ে গোটা গ্রাম ঘোরান প্রতিবেশীরা। প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাসের মধ্যেই পরকীয়া সন্দেহে গ্রামবাসীদের রোষের শিকার হয়েছেন উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকজন মহিলা।কিছু মাস আগেই জলপাইগুড়িতে পরকীয়ার অভিযোগে একইভাবে গ্রামবাসীদের নীতি পুলিশির শিকার হয়েছিলেন একাধিক মহিলা। ফের একই ধরনের ঘটনা ঘটায়, কপালে চিন্তায় পড়েছে পুলিশ প্রশাসনের।