পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ প্রশাসন অত্যন্ত 'স্ট্রং'। এখানকার পুলিশ 'রাফ অ্যান্ড টাফ'। তাই, যে বা যারা ট্যাব দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, তারা কেউ রেহাই পাবে না। প্রত্যেককে শনাক্ত করবে পাকড়াও করা হবে এবং যে পড়ুয়ারা তাদের ট্যাবের জন্য বরাদ্দ টাকা পায়নি, তাদের প্রত্যককে রাজ্য প্রশাসন সেই টাকা দিয়ে দেবে।
রাজ্যের ট্যাব দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলে এমনই বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উল্লেখ্য, পাঁচদিনের পাহাড় সফর সেরে শুক্রবারই কলকাতা ফেরেন তিনি।
কলকাতাগামী বিমানে ওঠার আগে বাগডোগরা বিমানবন্দরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বুঝিয়ে দেন, ট্যাব দুর্নীতি নিয়ে রাজ্য সরকার কড়া অবস্থান নিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা এক্ষেত্রে খুবই স্পষ্ট। তিনি বলেন, 'এই ঘটনা মহারাষ্ট্র, রাজস্থান-সহ একাধিক রাজ্যে ঘটেছে। এই গ্রুপটাকে আমরাই ধরতে পেরেছি। সুতরাং, আমাদের প্রশাসন খুব স্ট্রং। রাফ অ্যান্ড টাফ। তারা ইতিমধ্যেই ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে। বাকি যা যা করার, তারা করবে। ট্যাবের টাকা যারা পায়নি, তারা পেয়ে যাবে।'
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ট্যাব দুর্নীতি নিয়ে প্রশাসনিক তদন্ত চলছে। এবং এই বিষয়ে প্রশাসনই যা করার করবে। প্রশাসনকে সেই কাজ করতে দেওয়া হোক। এটা মিডিয়ায় ট্রায়ালের বিষয় নয়।
প্রসঙ্গত, ট্যাব দুর্নীতি নিয়ে ইতিমধ্যেই সংবাদমাধ্যমে প্রচার, খবর, আলোচনা, সমালোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই এই ঘটনার জন্য রাজ্য সরকার ও প্রশাসনকে দায়ী করেছেন।
সংবাদমাধ্যমে এভাবে রাজ্য প্রশাসনকে কাঠগড়ায় তোলার বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী যে মোটেও ভালো চোখে দেখছেন না, তা তাঁর এদিনের মন্তব্যেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, অন্যান্য রাজ্যে এই ধরনের অপরাধ ঘটলেও, বাংলার পুলিশই দ্রুততার সঙ্গে অপরাধীদের শনাক্ত করে পাকড়াও করতে সক্ষম হয়েছে।
প্রসঙ্গত, 'তরুণের স্বপ্ন' প্রকল্পের অধীনে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার জন্য এককালীন ১০ হাজার টাকা দেয় রাজ্য সরকার।
অভিযোগ, এবছর সেই প্রকল্পের অধীনে বহু পড়ুয়াই তাদের প্রাপ্য টাকা পায়নি। পরবর্তীতে জানা যায়, সেই টাকা অন্য বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্যের ১৫টি জেলার অন্তত ১,৩৫০ জন পড়ুয়া ট্যাব কেলেঙ্কারির শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ।
রাজ্যের পুলিশ ও প্রশাসনের দাবি, চোপড়া ও তার আশপাশের এলাকা থেকে এই দুর্নীতি চক্র চালানো হয়েছে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মালদহ ও কলকাতার পুলিশকে নিয়ে বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করা হয়েছে।
বিহারের কুখ্যাত জামতাড়া গ্যাং-সহ এই কেলেঙ্কারিতে একাধিক আন্তঃরাজ্য অপরাধ চক্র জড়িত থাকতে পারে বলে আশঙ্কার করা হচ্ছে।