কালীগঞ্জের মোলান্দি গ্রামে বোমার আঘাতে মৃত্যু হয়েছে তামান্না খাতুনের। পুলিশের দাবি, এই এলাকায় প্রায়ই রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা ঘটে। তারপরেই গোটা গ্রামে নিরাপত্তা জোরদার করতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। গ্রামজুড়ে বসানো হচ্ছে সিসিটিভি ক্যামেরা। পাশাপাশি গড়ে উঠেছে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পও। (আরও পড়ুন: কসবা কলেজে এসব কী হত? ক্লাস থেকে মেয়েদের উঠিয়ে নিয়ে যেত মনোজিৎ)
আরও পড়ুন: খুনের হুমকি পাচ্ছে তামন্নার পরিবার, বিমানের সামনে অভিযোগ মায়ের, কাঠগড়ায় TMC
পুলিশ সূত্রের খবর, প্রাথমিক পর্যায়ে গ্রামে আটটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। এমন এলাকাগুলোকেই বেছে নেওয়া হয়েছে, যেখান থেকে বিভিন্ন পাড়ার গতিবিধি সহজেই নজরে আনা যাবে। ভবিষ্যতে পরিস্থিতি বিবেচনা করে ক্যামেরার সংখ্যা আরও বাড়ানো হতে পারে। সঙ্গে গ্রামে তৈরি হয়েছে পুলিশ ক্যাম্প। সেখানে নিয়মিত থাকছেন দুই সাব-ইন্সপেক্টর, পাঁচজন কনস্টেবল ও দশজন সিভিক ভলান্টিয়ার।গত ২৩ জুন যেখানে সিপিএম কর্মীদের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়েছিল, সেই অঞ্চল থেকে অল্প দূরেই এই ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। (আরও পড়ুন: বাংলার ভোটের আগে BJP-র সভাপতি নির্বাচনে থাকতে পারে বড় চমক, চর্চায় আছেন কারা?)
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রামে বোমা লুকিয়ে রাখার বেশ কিছু ঘটনা সম্প্রতি সামনে এসেছে। উদ্ধার হয়েছে প্রায় দেড়শোটি সকেট ও তাজা বোমা। বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার বাড়ির কাছেও নজরদারির ক্যামেরা বসানো হয়েছে। তৃণমূল নেতা আনোয়ার শেখ ও হকসাদ মণ্ডলের বাড়ির আশপাশে আলাদাভাবে নজর রাখা হচ্ছে। (আরও পড়ুন: ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে সংযোজন, নয়া বিজ্ঞপ্তি জারি সেন্ট্রাল স্কুল সার্ভিস কমিশনের)
উল্লেখ্য, গ্রামে রাজনৈতিক অশান্তি নতুন নয়। ২০২২ সালে তৃণমূল নেতা আনোয়ার শেখকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে সিপিএমের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা মোলান্দি। কালীগঞ্জ থানায় দায়ের হয় ১১৪ জনের নামে মামলা। এরপর ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখেও ফের বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। অভিযোগ ওঠে সিপিএম কর্মীদের দিকেই। সেবার পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয় বলে এফআইআর-এ উল্লেখ রয়েছে।
আরও পড়ুন: ২৫% বকেয়া ডিএ ইস্যুতে রাজ্যকে চাপে ফেলার 'হাতিয়ারে' ধরা পড়ে ত্রুটি, তারপর...
সবশেষে, ২০২৫-এর উপনির্বাচনের ফলপ্রকাশের দিন বিজয় মিছিল চলাকালীন তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে। সেই বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় ছোট্ট তামান্না খাতুনের। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।এইসব ঘটনার প্রেক্ষিতে এবার কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে প্রশাসন। নজরদারির জন্য প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে, তৈরি করা হচ্ছে কড়া নিরাপত্তা বলয়। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বছরের পর বছর ধরে রাজনৈতিক সংঘর্ষ, দখলদারি, বোমাবাজি সবই দেখে আসছেন। এবার শান্তি চান।