গত কদিন ধরে পানীয় জলের সংকট দেখা দিয়েছে হাওড়ার বেলগাছিয়া–সহ বিস্তীর্ণ এলাকায়। আবার বেশ কিছু বাড়িতে নেমেছে ধস এবং ফাটলও। যার জেরে দুর্ভোগে পড়েছেন হাওড়াবাসী। এবার এই বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে আজ, সোমবার পুলিশের বিরুদ্ধে শারীরিক হেনস্থার অভিযোগ আনলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে তুমুল বচসায় জড়ালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এখানে এসে ঘুরে গিয়েছেন। বাসিন্দাদের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। তারপরই এলেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু এলাকার ভিতরে ঢুকতে যেতেই ব্যারিকেড করে দেয় পুলিশ। তখনই ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। তার জেরে পড়ে যান এক বিজেপি নেতা।
এদিকে শুভেন্দু অধিকারী এই ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে অভিযোগ করতে থাকেন, গোলাম মুস্তার্জা নামে এক সাব ইনস্পেক্টর তাঁর হাতে আঘাত করেছেন। হাত থেকে রক্ত বেরিয়ে যায় বলেও দেখাতে থাকেন সংবাদমাধ্যমে। হাতে আঁচড়ের দাগ দেখিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘আমাকে রক্তাক্ত করেছে পুলিশ। এই রক্ত আমি গুছিয়ে রাখলাম। আমি কি বাড়ি থেকে ব্লেড দিয়ে হাত কেটে এসেছি? আপনি মারলেন কেন? সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দিতে পারেন না। আপনি আটকাবেন না কেন?’ এই পরিস্থিতিতে বিজেপি কর্মীরা স্লোগান দিতে থাকেন পুলিশের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: বংশীহারীতে দেহব্যবসা চালানোর অভিযোগে তোলপাড় কাণ্ড, গ্রেফতার হোটেল মালিক
অন্যদিকে আজ সোমবার সকালে ধস বিপর্যস্ত বেলগাছিয়ায় যান পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলেছেন। আগামী তিনদিনের মধ্যে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও আশ্বাস দেন কলকাতা পুরসভার মেয়র। তারপরই আজ দুপুরে বেলগাছিয়ায় যান শুভেন্দু অধিকারী। তার সঙ্গে ছিলেন শঙ্কর ঘোষ। বিরোধী দলনেতার দাবি, তাঁকে পুলিশ বাধা দেয়, হেনস্থা করেছে। তারপরই সাংবাদিকদের সামনে শুভেন্দু বক্তব্য রাখেন, ‘পুলিশ আমাকে ধাক্কা দিয়েছে। আমাকে রক্তাক্ত করেছে। এই রক্ত গুছিয়ে রাখলাম। ২০০ শতাংশ কাজের নমুনা দেখুন। গরিবের খাবার নেই। মিথেন গ্যাস বেরচ্ছে। আরও বড় ঘটনা ঘটবে যদি রাজ্য সরকার উন্নাসিকতা করে।’
এছাড়া গত ১৯ মার্চ হাওড়ার বেলগাছিয়ার ভাগাড়ে ধস নেমে যায়। দ্রুত ধস ভয়াবহ রূপ নেয়। পরে ফেটে যায় শিবপুর এবং উত্তর হাওড়া কেন্দ্রের জল সরবরাহের পাইপলাইন। চরম সমস্যায় বাসিন্দারা। এমনকী মাটি থেকে বেরতে শুরু হয় মিথেন গ্যাস। এই আবহে শুভেন্দুর কথায়, ‘হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ পানীয় জল পাচ্ছেন না। বসতিতে ফাটল। বহু মানুষ নিরাশ্রয়। অথচ বিরোধী দলনেতাকে সেখানে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে পুলিশ। বাংলায় কোনও গণতান্ত্রিক সরকার নেই। মমতার পুলিশের হাতে বিরোধী দলনেতা আক্রান্ত হল। আমাকে রক্তাক্ত করা হল। বুঝে নিন বাংলার কী অবস্থা। আসলে হাওড়ার মানুষজন রোহিঙ্গা হলে তৃণমূলের সরকার নিশ্চয়ই সাহায্য করত।’ পাল্টা সাংসদ দোলা সেন বলেছেন, ‘বেশি কথা বলে শুভেন্দুর গুরুত্ব বাড়াতে চাই না। ওদের মন্ত্রী–সাংসদরা সংসদে দাঁড়িয়ে মিথ্যে কথা বলে। তাহলে নেতারা তো এভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে মিথ্যে কথা বলবেই।’