নদিয়ার তেহট্টে সাধু বেশে বসবাস করছিল এক বাংলাদেশি দুষ্কৃতী। দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে একজন নিরীহ বৃদ্ধ সাধু বলে উল্লেখ করে এলাকায় থাকলেও, শেষ রক্ষা হল না। শেষ পর্যন্ত পুলিশের গোয়েন্দা তথ্য ও তদন্তে ফাঁস হয়ে গেল তার আসল পরিচয়। এসটিএফ ও স্থানীয় পুলিশের যৌথ অভিযানে শেষমেশ গ্রেফতার হল সেই বাংলাদেশি নাগরিক। ধৃতের নাম মহম্মদ হাসেম মল্লিক ওরফে হাসেম আলি মল্লিক (৬০)।
আরও পড়ুন: কালীঘাটে ধৃত বাংলাদেশি কীভাবে পেলেন ‘খাঁটি ভারতীয়’ ড্রাইভিং লাইসেন্স?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসেম বাংলাদেশে একাধিক গুরুতর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। মামলা থেকে বাঁচতে তিনি সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পালিয়ে আসেন এবং ভুয়ো ভারতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে তেহট্টের বালিউরা পূর্ব পাড়ায় আশ্রয় নেন। এসটিএফের এসআই মহম্মদ আবদুন নূর চৌধুরীর করা একটি লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়। গোপন সূত্রে নিশ্চিত হয়ে অভিযানে নামে পুলিশ বাহিনী। অভিযান চলাকালীন হাসেমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে, তিনি ভারতীয় পরিচয়ের কোনও বৈধ নথি দেখাতে পারেননি। পরবর্তীতে পুলিশের দাবি অনুযায়ী, প্রাথমিক জেরায় তিনি স্বীকার করেন যে বাংলাদেশে অপরাধ করে পালিয়ে ভারতে এসেছিলেন। পরে এখানে জাল পরিচয়পত্র তৈরি করেছিলেন।
পুলিশ আরও জানায়, ধৃত ব্যক্তি একাই ভারতে প্রবেশ করেছিলেন, নাকি একটি বড় চক্রের অংশ তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি, ভারতে তাঁর উপস্থিতি কোনও বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ কিনা, বিশেষ করে নাশকতার উদ্দেশ্যে এদেশে প্রবেশ করেছিলেন কি না সে দিকেও নজর রেখেছে তদন্তকারী দল। তার বিরুদ্ধে ফরেনার্স অ্যাক্ট সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত চলছে। আজ রবিবার ধৃতকে তেহট্ট মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়েছে। এসটিএফ তাকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে। এই ঘটনায় তেহট্ট এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনা আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, কীভাবে ছদ্মবেশে দেশের নিরাপত্তাকে উপেক্ষা করেই বাংলাদেশিরা সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করছে।