শৈলশহরের রাজনীতি প্রতিনিয়ত রঙিন হয়ে উঠছে। কারণ হঠাৎ করে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার পদ ছেড়েছেন বিনয় তামাং। আর ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন বিমল গুরংয়ের হাতে। ফলে একঘরে হয়ে পড়েন অনীত থাপা। তারপরই নতুন দল গড়তে তৎপর হয়েছেন অনীত। আগামী সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহেই নতুন দল ঘোষণা করতে চলেছেন অনীত থাপা বলে সাংবাদিক বৈঠকে জানান তিনি।শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে অনীত থাপা বলেন, ‘পাহাড় সমস্যার সমাধান কেউ করতে পারেনি। উন্নয়ন নিয়ে কেউ চিন্তা করেনি। তাই নতুন দল গড়তে চলেছি। এই বছরের সেপ্টেম্বর মাসেই নতুন দলের নাম ঘোষণা করব। আমাদের দল পাহাড়ের কথা বলবে। পাহাড়ের মানুষের কথা, তাঁদের উন্নয়নের জন্য চিন্তা করবে।’২০০৭ থেকে ২০২১—টানা ১৪টি বছরে পাহাড়ের রাজনীতিতে ঘটেছে অনেক পরিবর্তন। কিছুদিন আগেই, রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন বিমল গুরুঙ্গ এবং বিনয় তামাং। বৈঠক শেষে বিনয় বলেছিলেন, ‘পাহাড়ের উন্নয়নের জন্য কোনও রাজনৈতিক দলই কাজ করেনি। আমরা পাহাড়ের উন্নয়ন নিয়ে চিন্তিত। যা যা করতে হয় সব পদক্ষেপ করতে রাজি।’ তারপরই বিনয়কে সঙ্গে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী–সহ শীর্ষ তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে দেখা করবেন বলে বিমল ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তবে এখনও তা ঘটেনি।উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে বিনয় তামাং, বিমল গুরুঙ্গ এবং অনীত থাপার মিলিত প্রয়াসে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা তৈরি হয়। ২০১৭ সালে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে অশান্ত হয়ে ওঠে পাহাড়। তখন বিমল গুরুঙ্গ, রোশন গিরিদের বিরুদ্ধে খুন, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, হিংসা ছড়ানো–সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করে রাজ্য সরকার। তারপর প্রায় সাড়ে তিন বছর আত্মগোপন বিমলের। একুশের নির্বাচনের আগে সাড়ে তিন বছরের অজ্ঞাতবাস কাটিয়ে পাহাড়ে ফেরেন গুরুঙ্গ। পাহাড়ে প্রার্থী দেয়নি তৃণমূল কংগ্রেস। তিনটি আসনই ছেড়ে দেন মমতা। পাল্টে যায় রাজনীতির সমীকরণ।একুশের নির্বাচনের পর বিনয়–বিমল কাছাকাছি আসতেই অনীত কোণঠাসা হয়ে পড়ে। তখন থেকেই পৃথক দল করবে বলে শোনা যাচ্ছিল। যা এবার নিজের মুখেই স্বাকীর করলেন অনীত থাপা। তাহলে দেখা যাচ্ছে ফের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা বিমলের হাতেই ফিরে এলো ফাঁকা অবস্থায়। আবার পাল্টে যেতে বসেছে পাহাড়ের রাজনৈতিক সমীকরণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।