আবারও বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলার শ্রমিকদের নির্যাতনের অভিযোগ। ভুবনেশ্বরে বাংলাদেশি সন্দেহে মুর্শিদাবাদ জেলার আটজন পরিযায়ী শ্রমিকের উপর চলল রাতভর নির্যাতন। বাঁশ, লাঠি, লোহার রড দিয়ে চলল বেধড়ক মারধর। অভিযোগ, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেও হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি, উলটে শ্রমিকদের রাজ্য ছেড়ে চলে যেতে চাপ দেয়। ঘটনায় গুরুতর আহত সাতজনকে ভুবনেশ্বর এইমসে ভর্তি করা হয়েছে। আরেকজন শ্রমিক মুর্শিদাবাদে ফিরে এসে এখন লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আরও পড়ুন: চেন্নাইয়ে কাজে গিয়ে মৃত্যু পুরুলিয়ার পরিযায়ী শ্রমিকের, নিখোঁজ একই গ্রামের যুবক
স্থানীয় সূত্রে খবর, ফরাক্কা, লালগোলা এবং ভগবানগোলা থানা এলাকার আটজন শ্রমিক কিছুদিন আগে ভুবনেশ্বরের মহাবীরনগরে কাজ করতে গিয়েছিলেন। গত ২৪ অগস্ট রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ হঠাৎই একদল স্থানীয় বাসিন্দা শ্রমিকদের ঘরে চড়াও হয়। বাংলাদেশি সন্দেহে অকথ্য গালিগালাজের পাশাপাশি শুরু হয় মারধর। ভোর চারটে পর্যন্ত অব্যাহত ছিল নির্যাতন। শ্রমিকদের দাবি, তাঁদের মোবাইল, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড এবং নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়।গুরুতর আহত শ্রমিক আবদুল আলিম জানান, বাংলাদেশি তকমা দিয়ে তাঁদের বাঁশ-লাঠি, লোহার রড দিয়ে মারধর করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা, কাগজপত্র সব নিয়ে নিয়েছে।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে, উলটে ভুবনেশ্বর থেকে চলে যাওয়ার জন্য পুলিশ চাপ সৃষ্টি করেছে বলেও অভিযোগ। যদিও শেষ পর্যন্ত স্থানীয়দের চাপে আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া। ফরাক্কার তৃণমূল বিধায়ক মণিরুল ইসলাম বলেন, এক রাজ্যের মানুষ অন্য রাজ্যে কাজ করতে যাবেন, এটাই তো যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর মূল কথা। অথচ বাংলার শ্রমিকেরা নিরাপত্তা পাচ্ছেন না। কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যর্থতা এ ঘটনার মধ্যে স্পষ্ট। তাঁর পদত্যাগ করা উচিত। ভগবানগোলার তৃণমূল বিধায়ক রেয়াত হোসেন সরকার বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলন দমন করতেই বিজেপি বাংলাকে টার্গেট করছে। বাংলার শ্রমিকদের উপর এই হামলা তারই বহিঃপ্রকাশ। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি শাসিত একের পর এক রাজ্যে এভাবে পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর আক্রমণ চালানো হচ্ছে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্যই। তবে ওড়িশা প্রশাসনের তরফে এই ঘটনার বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া মেলেনি।