নৌকায় চড়ে সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে গিয়েছিলেন মাছ ধরতে। কিন্তু, সেখান থেকে আর বাড়ি ফেরা হল না। রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় নৌকায় ঝাঁপিয়ে পড়ে মৎস্যজীবীকে তুলে নিয়ে গেল বাঘ। তাকে দক্ষিণ রায়ের হাত থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হননি অন্যান্য মৎস্যজীবীরা। সুন্দরবনের দোবাঁকি জঙ্গলে এই ঘটনা ঘটেছে। মৃত মৎস্যজীবীর নাম আবুর আলি মোল্লা ওরফে বাবুসোনা। তার দেহ উদ্ধার করা এখনও সম্ভব হয়নি। বনদফতরের তরফে জঙ্গলে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনের জঙ্গলে মধু সংগ্রহে গিয়ে বিপত্তি, মউলিকে টেনে নিয়ে গেল দক্ষিণরায়
জানা গিয়েছে, তিন জন মৎস্যজীবী মিলে নৌকায় করে ওই জঙ্গলে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। এর জন্য তাদের কাছে সরকারের অনুমতিও ছিল। এরপর রাত হয়ে যাওয়ায় ১০টার পর জঙ্গলের কাছকাছি নৌকা খাওয়া দাওয়া সারেন মৎস্যজীবীরা। পরে ঘুমিয়ে পড়েন তিন মৎস্যজীবী। কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা ঘুমিয়ে পড়েছিলেন । তারপরেই ঘটে বিপত্তি। সেই সময় আচমকা নৌকায় হানা দেয় রয়্যাল বেঙ্গল। আবুরকে মুখে করে তুলে নিয়ে যায় বাঘটি। তার চিৎকার চেঁচামেচি শুনে তখন উঠে পড়েন অন্যান্য মৎস্যজীবীরা। কিন্তু, ততক্ষণে নৌকা থেকে লাফিয়ে বাঘটি গভীর জঙ্গলের দিকে ছুটে যায়। ফলে আবুরকে বাঁচাতে সক্ষম হননি অন্যান্য মৎস্যজীবীরা। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে মৃত মৎস্যজীবীর পরিবারে। এদিকে, খবর পাওয়ার পরেই তার দেহ উদ্ধার করতে তল্লাশিট নেমেছে বন বিভাগ।
উল্লেখ্য, গতমাসেই সুন্দরবনে বাঘের হানায় মৃত্যু হয়েছিল গোপাল মল্লিক (৩০) নামে এক মউলির। অন্যান্য সঙ্গীদের সঙ্গে সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে মধু সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় বাঘ তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তখন তাঁর সঙ্গীরা বাঘের মুখ থেকে ছড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন।
এভাবে প্রায়ই সুন্দরবনে বাঘের হানায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। যদিও বন দফতরের তরফে বার বার মৎস্যজীবীদের সতর্ক করা হয়। গভীর জঙ্গলে না যাওয়ার জন্য নিষেধ করা হয়। অথচ সরকারি নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রুজি রুটির জন্য পেটের টানে গভীর জঙ্গলে কখনও কাঁকড়া অথবা কখনও মাছ ধরতে গভীর জঙ্গলে চলে যাচ্ছেন মৎস্যজীবীরা। আর তাতেই ঘটে বিপত্তি। তবে এ দিনের ঘটনায় মৎস্যজীবীর কাছে বৈধ কাগজপত্র ছিল। তবে বার বার এমন ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে বন বিভাগের খামতি নিয়েও। কেন নজরদারি থাকছে না? তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।