মার্ক কার্নি নাকি পিয়েরে পয়লিয়েভ। ৪৫তম জাতীয় নির্বাচনে দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীকে বেছে নেবেন কানাডার জনগণ। ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধের মধ্যে কানাডার ইতিহাসে এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। তারমধ্যে উৎসব চলাকালীন বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় কমপক্ষে ১১ জনের মৃত্যুর ঘটনা এই নির্বাচনে প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন কানাডার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন জাস্টিন ট্রুডো। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের চাপে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন ট্রুডো। (আরও পড়ুন: ভারত-পাক উত্তেজনার আবহে মুখ খুলল মার্কিন বিদেশ দফতর, কী আহ্বান আমেরিকার?)
আরও পড়ুন-শিমলা চুক্তি স্থগিত! হিমাচল রাজভবনের ঐতিহাসিক টেবিল থেকে উধাও পাকিস্তানের পতাকা
রবিবার কানাডায় নির্বাচনী প্রচার শেষ হয়েছে। পুরো কানাডায় এখন নির্বাচনের আমেজ। রাস্তার দুই পাশে বড় বড় রোড সাইন, কমিউনিটিতে ছোট ছোট সাইন, ইনডোর মিটিংয়ের এন্টারটেইনমেন্ট, রেন্ট এ কার-সহ আরও অনেক কিছুতেই ভরে গেছে। কানাডার পার্লামেন্ট হাউজ অফ কমেন্সের মোট আসন সংখ্যা ৩৪৩টি। গত নির্বাচনের চেয়ে ৬টি আসন বেড়েছে। প্রতিবছর জনসংখা বৃদ্ধির সঙ্গে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এবারের মোট ভোটার সংখ্যা ২ কোটি ৮৫ লাখ। এর মধ্যে চার দিনের অগ্রিম ভোট পড়েছে প্রায় ৭৩ লাখ, যা প্রায় পঁচিশ শতাংশের বেশি। যে কোনে দলের এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন ১৭২টি আসন।জাতীয় নির্বাচনে এখন পর্যন্ত পাঁচটি দল অংশ নিচ্ছে। এরমধ্যে মার্ক কার্নির লিবারেল পার্টি, পিয়েরে পয়লিয়েভ কনজারভেটিভ পার্টি, জাগমিত সিং-র এনডিপি পার্টি, ইভস ফ্রান্সসয়েন্স ব্লানচেট, ব্লক কুইবেক পার্টি এবং এলিজাবেথ মে অ্যান্ড জোনাথান পেডনলট যৌথভাবে গ্রীন পার্টি অফ কানাডা। এছাড়াও বেশ কিছু স্বতন্ত্র প্রার্থী আছে। (আরও পড়ুন: স্তব্ধ সিন্ধু প্রদেশ, জল নিয়ে 'গৃহযুদ্ধে' ঝরল রক্ত, সংঘর্ষ পুলিশ ও আন্দোলনকারীদে)
কানাডার সর্বশেষ জনমত ও আসনভিত্তিক সমীক্ষায় মার্ক কার্নির লিবারেল পার্টি এগিয়ে রয়েছে। যদিও বড় দুই দল লিবারেল পার্টি এবং কনজারভেটিভ পার্টির পলিসিতে বড় ধরনের কোন পার্থক্য নেই।
আরও পড়ুন: বন্ধুত্ব নয়, আদতে CPEC-এর জন্যেই ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের পাশে চিন?
লিবারেল পার্টির নেতা মার্ক কার্নি
৫৯ বছর বয়সি মার্ক কার্নি বর্তমানে কানাডার প্রধানমন্ত্রী, তবে তিনি মাত্র কয়েক দিন আগে এ দায়িত্ব পেয়েছেন। জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের পর লিবারেল পার্টির নেতা হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। কার্নি কানাডা ও ব্রিটেনের পরিচিত মুখ, কারণ তিনি কানাডা ও ইংল্যান্ডের ব্যাঙ্কের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।মার্ক কার্নি উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের ফোর্ট স্মিথে জন্মগ্রহণ করেন, যা তাঁকে কানাডার প্রথম উত্তরাঞ্চলীয় প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছে। তিনি হার্ভার্ড ও অক্সফোর্ডে অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন এবং আর্থিক দক্ষতার জন্য প্রশংসিত হন। তবে তিনি রাজনৈতিকভাবে অনভিজ্ঞ এবং তাঁর ফরাসি ভাষার দক্ষতা দুর্বল, যা কুইবেক প্রদেশের ভোটারদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে।
কনজারভেটিভ পার্টির নেতা পিয়েরে পয়লিয়েভ
৪৫ বছর বয়সি পিয়েরে কানাডার রাজনীতিতে দুই দশক ধরে সক্রিয়। তিনি কম কর ও ছোট সরকারের পক্ষে অবস্থান নেন এবং লিবারেল পার্টি ও ট্রুডোর নীতির তীব্র সমালোচক। পয়লিয়েভ কানাডার আবাসনসংকট, মজুরি স্থবিরতা ও উচ্চ জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ে উদ্বিগ্ন ভোটারদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। তবে তাঁর পপুলিস্ট রাজনৈতিক স্টাইল ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তুলনা তাঁকে সমালোচনার মুখে ফেলেছে। পয়লিয়েভ ট্রাম্পের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে ‘কানাডাকে প্রথম’ রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।