জঙ্গিদের নৃশংস হামলায় সেদিন নিমেষে রক্ত বন্যা বয়েছিল মুম্বইয়ের বুকে। তদন্তে নেমে একাধিক নাম সামনে এসেছিল ভারতের গোয়েন্দাদের কাছে। তারই মধ্যে একটি নাম তাহাউর রানা। ২০০৮ সালে মুম্বইতে ২৬ নভেম্বর জঙ্গি হামলার এক বছর পর ২০০৯ সালে আমেরিকায় ধরা পড়ে তাহাউর। এরপর যাবতীয় আইনি বেড়া জাল কাটিয়ে ২০২৫ সালে মার্কিন মুলুক থেকে ভারতে প্রত্যর্পণ করা হচ্ছে তাহাউর রানাকে। আমেরিকা থেকে তাহাউরের প্রত্যর্পণ মিশনের টিমের নেতৃত্বে রয়েছেন দুই দাপুটে এনআইএ অফিসার, জয়া রায় ও আশিস বত্রা।
জয়া রায়:-
ঝাড়খণ্ড ক্যাডারের ২০১১ ব্যাচের আইপিএস অফিসার জয়া রায়। বর্তমানে তিনি এনআইএ-র ডেপুটি ইনসপেক্টর জেনারেল। ২০১৯ সালে কিনি এজেন্সিতে সুপারিন্টেডেন্ট অফ পুলিশের পদে যোগ দেন। চার বছরের জন্য যোগ দিলেও, তাঁর ডেপুটেশনের মেয়াদ বাড়ে। বর্তমানে তিনি এজেন্সির সিনিয়র। যে সমস্ত হাইপ্রোফাইল কেস তাঁর অধীনে ছিল, তার মধ্যে একটি হল জামতাড়া। সাইবার অপরাধীদের ধরাশায়ী করা সেই মিশনের টিমের নেতৃত্বে ছিলেন এই মহিলা অফিসার। সেই তদন্ত নিয়ে পরে ওয়েব সিরিজও হয়।
আশিস বত্রা:-
আশিস বত্রাও ঝাড়খণ্ড ক্যাডারের আইপিএস। ১৯৯৭ সালের ক্যাডারের সদস্য তিনি। তিনি বর্তমানে এনআইএর ইনসপেক্টর জেনারেল। ২০১৯ সালে তিনিও ডেপুটেশনে এজেন্সিতে যোগ দান করেছিলেন। পরে সেই কার্যকালের মেয়াদ বাড়ে। এনআইএ-তে যোগদানের আগে, বাত্রা ২০১৮ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে ঝাড়খণ্ড জাগুয়ার, একটি বিদ্রোহ-বিরোধী ইউনিটের আইজি পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি ঝাড়খণ্ড পুলিশের মুখপাত্র হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন এবং আইজি অভিযান হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। কর্মসূত্রে তিনি জেহানাবাদ, হাজারিবাগের মতো এলাকাতেও ছিলেন।
দুঁদে অফিসাররা করবেন জেরা:-
এক সিনিয়র অফিসারের বক্তব্য তুলে ধরে ‘দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া’ দাবি করেন, তাহাউর ‘বহু জেরার মুখে আগে পড়েছে। ফলে তাকে আয়ত্তে আনা সহজে হবে না। সে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবে, কিছু ধোঁয়াশা তারি করবে। সব মিলিয়ে সময় লাগবে।’ এরকমই এক চ্যালেঞ্জ সামনে নিয়ে তাহাউরকে জেরা করতে প্রস্তুত ভারতের একাধিক এজেন্সি। জানা যাচ্ছে, এনআইএর এফিসার, গোয়েন্দা বিভাগের ২ জন অফিসার, ফরেন্সিক সাইকোলজিস্ট, যাঁরা সন্ত্রাস মোকাবিলায় আলাদা করে প্রশিক্ষিত, তাঁদের একটি টিম জেরা করবে মুম্বই হামলার চক্রী রানাকে।
জেরার লক্ষ্য কী … কোন জালের পর্দাফাঁস?
ভারতের মাটিতে তাহাউরকে এনে, দফায় দফায় জেরা করে, পাকিস্তানের গোয়েন্দা বাহিনীর সঙ্গে লস্কর ই তৈবার যোগসূত্রের পর্দাফাঁস করার চেষ্টা করবে এজেন্সি। বহু বছর ধরে ঘটনার সঙ্গে যে সমস্ত জড়িতদের নাগাল পাওয়া যায়নি, তাদের খোঁজ করাও হবে চার্গেটের একটি দিক। এছাড়াও জঙ্গি হাফিজ সইদ, জাকি উর রহমান লাকভি, সাজিদ মীরদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কেও জানার চেষ্টা করবে এজেন্সি। মনে করা হচ্ছে, এরা সকলেই পাকিস্তানে নিরাপদ বলয়ে রয়েছে।