ফ্লিপকার্ট-অ্যামাজনে ঢালাও সেল ইলেকট্রনিক ডিভাইসে। এদিকে বিশ্বজুড়ে তলানিতে চিপের জোগান। ফলে প্রভাব পড়তে পারে দামে। এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের।বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ল্যাপটপ, টেলিভিশন এবং স্মার্ট হোম সেগমেন্টের সংস্থাগুলিকে সরবরাহের অভাবে মিড-প্রিমিয়াম এবং প্রিমিয়াম ডিভাইসের দিকে মনোনিবেশ করতে হয়েছে। কিন্তু ভারতের বাজারে চাহিদা বেশি এন্ট্রি লেভেল ডিভাইসেরই। ফলে সেলেও কম দামী ডিভাইসের দামে সেভাবে হেরফের হচ্ছে না। উল্টে আগের তুলনায় ছাড়ের পরিমাণ বেশ কম।'এটি চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন সরবরাহের একটি আদর্শ উদাহরণ বলা যেতে পারে। যখন এরকম হয়, সংস্থাগুলি দামি সেগমেন্টগুলিকে অগ্রাধিকার দেয়। এমন সেগমেন্টেই বেশি জোর দেয়, যেখানে তাদের মার্জিন বেশি থাকে,' মত মার্কেট রিসার্চ ফার্ম ইন্টারন্যাশনাল ডেটা কর্পোরেশনের (IDC) রিসার্চ ম্যানেজার জয়পাল সিংয়ের। তিনি বলেন, সংস্থাগুলি জানে যাই লঞ্চ হবে, তা বিক্রি করতে সমস্যা হবে না। কারণ চাহিদা পুজোর বাজারে তুঙ্গেই থাকে। বরং কোথা থেকে এত বিপুল জোগান দেওয়া হবে, সমস্যা তাতেই।গত কয়েক বছর ধরেই সেমিকন্ডাকটর চিপের অভাবে ভুগছে উত্পাদন সেক্টর। অটোমোবাইল থেকে স্মার্টফোন, সর্বত্র দিন-দিন এই অভাব প্রকট হচ্ছে। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা চিনের বন্দরে শাটডাউন। এর ফলে সরবরাহের সময় ও খরচ দুই-ই বৃদ্ধি পাচ্ছে।ভিডিয়োটেক্স ইন্টারন্যাশনালের ডিরেক্টর অর্জুন বাজাজের মতে, রিয়েলমি, হাইসেন্স এবং তোশিবার মতো একাধিক ব্র্যান্ড টেলিভিশন প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির খরচ অনেক বেড়ে গিয়েছে। আগে জাহাজে মাল আনতে কন্টেনার প্রতি আড়াই থেকে তিন হাজার ডলার খরচ হত। এখন সেটাই বেড়ে আট-নয় হাজার মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে।এছাড়াও, মাদারবোর্ডের মতো সামগ্রীর দামও দশ থেকে পনেরো শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামিদিনে এর দাম আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। তিনি বলেন, গত কয়েক সপ্তাহে বিমান পরিবহন ৬-৭ গুণ বেড়েছে।কোডাক, থমসন এবং ব্লাউপাঙ্কট টিভির ব্র্যান্ড লাইসেন্সধারী সুপার প্লাস্ট্রনিক্স লিমিটেডের সিইও অবনিত সিংও এই বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, এই সময় ও খরচ বৃদ্ধির কারণ খোঁজা খুব জটিল বিষয়। এর সঙ্গে আন্তর্জাতিক রাজনীতি গভীরভাবে যুক্ত।তিনি বলেন, 'এই সরবরাহকারী জাহাজগুলি আন্তর্জাতিক জলের মধ্যে দিয়ে আসে। তাই এক্ষেত্রে ভারত সরকারের পক্ষে কিছু করা অসম্ভবই বলা যায়।' তিনি বলেন, 'এখানে তো তাও ভাল। চিন থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরবরাহের খরচ বেড়ে কুড়ি হাজার মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে।'এমন পরিস্থিতিতে লাভের গুড় খাচ্ছে শিপিং সংস্থাগুলি। অবনিত বলেন, '২০০৮ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে মোট যে মুনাফা হয়েছিল, গত ৬ মাসেই তার প্রায় সমান মুনাফা করেছে শিপিং সংস্থাগুলি।'