অ্যান্টার্কটিকায় একদল বিজ্ঞানী বড় বিপদের মুখে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার একটি গবেষণা কেন্দ্রে প্রায় ১০ মাস ধরে রয়েছেন ১০ জনের ওই দলটি। একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ওই গবেষক দলের একজন ই-মেলের মাধ্যমে এক সহকর্মীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর আচার-ব্যবহার হিংসাত্মক হয়ে উঠেছে। সহকর্মী শারীরিক ও যৌন নির্যাতন করছেন। এমনকী খুনের হুমকিও দিচ্ছেন। আর এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
অভিযোগকারী তাঁর ই-মেইলে জানান, সহকর্মীর আচরণ ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। তাঁর উপস্থিতিতে নিরাপদ বোধ করছি না। অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।’ তিনি আরও জানান, অভিযুক্ত ব্যক্তি অপর এক সদস্যকে মারধর করেছেন এবং খুনের হুমকি দিয়েছেন। তার ফলে ১০ গবেষকের মধ্যে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ওই গবেষণা কেন্দ্রটি দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ টাউন থেকে প্রায় ২ হাজার ৪৮৫ মাইল দূরে অবস্থিত। সেখানে পৌঁছতে ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লাগে। ফলে জরুরি পরিস্থিতিতে সহায়তা পাওয়া অত্যন্ত কঠিন।এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বন, মৎস্য ও পরিবেশ বিভাগ ওই বিজ্ঞানীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে।
সংস্থাটির মুখপাত্র পিটার মবেলেংওয়া বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি দেখছি এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি।’ অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার পরিবেশমন্ত্রী ডিওন জর্জ একই হামলার ঘটনা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি এই ঘটনার জন্য দায়ি, তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। একটি বিষয়ে মতবিরোধের জেরে এই অশান্তির সূত্রপাত হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অ্যান্টার্কটিকার চরম পরিবেশ ও দীর্ঘ বিচ্ছিন্নতা মানসিক চাপ বাড়িয়ে তোলে। এটি সংঘাতের কারণ হতে পারে। ২০২৪ সালে দক্ষিণ মেরুর দিকে ৭০০ মাইল স্কিইং অভিযান সম্পন্ন করেছিলেন অভিযাত্রী অ্যালান চেম্বার্স।
তিনি বলেন, ‘এটি একটি অত্যন্ত নিঃসঙ্গ জায়গা। সেখানে কোনও রং বা স্বাভাবিক পরিবেশ নেই। তাই ছোটখাটো ব্যাপারও সেখানে অনেক বড় হয়ে দেখা দেয়।’ এর আগে ২০১৭ সালেও মারিয়ন দ্বীপের একটি স্টেশন থেকে এক ব্যক্তি কুঠার হাতে তাণ্ডব চালালে তাঁকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। উল্লেখ্য, ১৯৬০ সালে প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকা অ্যান্টার্কটিকায় গবেষণা কেন্দ্র তৈরি করে। মারিয়ন দ্বীপ এবং গফ দ্বীপেও স্টেশন পরিচালনা করে।