'অপারেশন সিঁদুরের পর পাকিস্তান এখন ভারতের স্ত্রী।' রাষ্ট্রীয় লোকতান্ত্রিক পার্টির সাংসদ হনুমান বেনিওয়ালের বক্তব্যে হাসির রোল উঠল সংসদে।সোমবার থেকেই 'অপারেশন সিঁদুর' নিয়ে আলোচনায় সরগরম লোকসভা। শুরু হয়েছে শাসক-বিরোধী জোর তরজা। তবে রাজনীতির ভারী ভারী কথার মধ্যেও হাস্যরস খুঁজে নিয়েছেন সাংসদরা। যেমন হনুমান বেনিওয়ালের বক্তব্য শুনেই হেসে গড়িয়ে পড়লেন শাসক থেকে বিরোধী দুই শিবিরের সাংসদরাই।
লোকসভায় 'অপারেশন সিঁদুর' নিয়ে বিতর্কে অংশ নেন রাজস্থানের নাগৌরের সাংসদ হনুমান বেনিওয়াল। অপারেশন সিঁদুরের নামকরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে গিয়েই কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, 'নাম শুনে মনে হচ্ছে ভারত পাকিস্তানের সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দিয়েছে। এখন পাকিস্তান ভারতের স্ত্রী। পাকিস্তানকে তাহলে শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে আসা হোক।' অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন যেভাবে করাচি, ইসলামাবাদ, লাহৌরের মতো পাকিস্তানি শহরগুলি ভারতীয় সেনা দখল করে নিয়েছে বলে ভুয়ো খবর রটেছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বেনিওয়াল। পাশাপাশি কেন পর পর তিনবার ক্ষমতায় এসেও এনডিএ সরকার পাক অধিকৃত কাশ্মীর ফেরাতে পারল না, সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি।পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এই সামরিক অভিযানের নাম কেন অপারেশন সিঁদুর দেওয়া হল, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তার ব্যাখ্যা দিতে হবে বলেও দাবি করেন রাজস্থানের সাংসদ।
আরও পড়ুন-নেহরুর জন্যই পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের অস্তিত্ব আছে, কংগ্রেসকে 'ভুল' মনে করালেন শাহ
অপারেশন সিঁদুরের নামকরণ নিয়ে কটাক্ষ করে বেনিওয়াল বলেন, দু দিন ধরে মিডিয়ায় প্রচার চলল যে লাহৌর, করাচি দখল হয়ে গিয়েছে, ইসলামাবাদে ভারতীয় পতাকা উড়ছে। তখন মনে হচ্ছিল পাকিস্তান তো দখলই হয়ে গিয়েছে। আপানারা আবার এই অভিযানের নাম রেখেছেন 'অপারেশন সিঁদুর।' শুনে মনে হচ্ছিল ভারত পাকিস্তানের সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দিয়েছে। হিন্দু ধর্মে মহিলা নিজেদের স্বামীকেই সিঁদুর বলে মানেন। স্বামীরা মহিলাদের সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দেন। তাহলে পাকিস্তানকে সিঁদুর পরিয়ে দিলে পাকিস্তান এখন ভারতের স্ত্রী। শুধু শ্বশুরবাড়ি আসা বাকি। তাহলেই সব ঝামেলা মিটে যায়।' সাংসদের এই মন্তব্য শুনেই হাসিতে ফেটে পড়েন লোকসভায় উপস্থিত অন্যান্য সাংসদরা। এরই মধ্যে শাসক শিবির থেকে কেউ একজন বেনিওয়ালকে দ্রুত তাঁর বক্তব্য শেষ করতে বলেন। তখন আরএলপি সাংসদ বলেন, 'নিজেরা তো আধ ঘণ্টা বক্তব্য রাখলেন। এখন আমাকে বলছেন ঝটপট বক্তব্য শেষ করতে। এরমধ্যে তাঁর সময় শেষ হয়ে গিয়েছে বলে ঘণ্টা বাজান অস্থায়ী অধ্যক্ষ। তা শুনেই ফের হনুমান বেনিওয়াল বলেন, আবার কী হল? একে তো সকাল সাড়ে দশটায় বক্তব্য রাখার সময় দিয়েছেন। আমার কথা কোনও সংবাদপত্রে ছাপবে না। সোশ্যাল মিডিয়া দিয়েই কাজ চালাতে হবে। সাংসদের এই মন্তব্য শুনে ফের হাসির রোল ওঠে লোকসভায়।
আরও পড়ুন-নেহরুর জন্যই পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের অস্তিত্ব আছে, কংগ্রেসকে 'ভুল' মনে করালেন শাহ
একই সঙ্গে গোয়েন্দা ব্যর্থতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বেনিওয়াল। জঙ্গিরা যে পহেলগাঁওয়ে হামলা চালাতে পারে, আগে থেকে সেই খবর কেন গোয়েন্দারা পেলেন না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন আরএলপি সাংসদ। পাশাপাশি অগ্নিবীর নিয়োগ বন্ধ করে সেনাবাহিনীতে আগের মতোই পূর্ণ সময়ের নিয়োগ শুরু করারও দাবি জানিয়েছেন তিনি। তাঁর মতে, অগ্নিবীরদের নিয়োগ করায় সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙে গিয়েছে।