স্বাধীনতা দিবসে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর বড় দৃষ্টান্ত। লালকেল্লায় সরকারি অনুষ্ঠানে না গিয়ে বৃষ্টির মধ্যেই নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দিল্লির ইন্দিরা ভবনেই ৭৯তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করেছেন রাহুল গান্ধী এবং কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে।সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভিডিও এখন ভাইরাল। দলমত নির্বিশেষে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা তথা দেশের বিরোধী দলনেতার এই কাজের প্রশংসা করেছেন।
শুক্রবার লালকেল্লায় দাঁড়িয়ে দীর্ঘতম ভাষণ দিয়েসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আত্মনির্ভরতা, বিকশিত ভারত, থেকে অনুপ্রবেশকারী সমস্যা। নানা ইস্যুতে সুর ছড়িয়েছেন তিনি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সেই ভাষণ শুনতে উপস্থিতই ছিলেন না সংসদের দুই কক্ষের দুই বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী এবং মল্লিকার্জুন খাড়গে। বরং রাহুল গান্ধী এদিন দিল্লির ইন্দিরা ভবনে কংগ্রেস কর্মী ও নেতাদের সঙ্গে পতাকা উত্তোলন কর্মসূচিতে যোগ দেন। রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতা-কর্মীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন। সেই সময়ই দিল্লিতে তখন ভারী বৃষ্টি চলছে। কিন্তু তার জন্য জাতীয় পতাকা উত্তোলনের কর্মসূচি পিছিয়ে দেয়নি কংগ্রেস। তুমুল বৃষ্টির মধ্যেই ছাতা মাথায় ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সময় জাতীয় সঙ্গীত গাইতে থাকেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জন খাড়গে। তবে রাহুল গান্ধী একেবারে খালি মাথায় ভারী বৃষ্টির মাঝেই জাতীয় সঙ্গীত গাইতে থাকেন। আর এই ভিডিও পোস্ট করে কংগ্রেস সোশ্যাল মিডিয়া বার্তায় জানিয়েছে, 'আজ আমরা স্মরণ করছি সেই সকল স্বাধীনতা সংগ্রামীকে, যাঁদের আত্মত্যাগে দেশ স্বাধীন হয়েছে। এই স্বাধীনতাকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।'গত বছরও লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে মহারাষ্ট্রে তীব্র বৃষ্টির মাঝে রাহুলকে খালি মাথায় বক্তৃতা দিতে দেখা গিয়েছিল।
শুধু তাই নয়, সোশাল মিডিয়াতে দেশবাসীকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাহুল গান্ধী এবং মল্লিকার্জুন খাড়গে। সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে রাহুল এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, 'এই স্বাধীনতার জন্য বহু দেশপ্রেমীকে আত্মত্যাগ করতে হয়েছে। আমাদের দায়িত্ব সত্য এবং ভ্রাতৃত্বের ভিতে এই দেশকে প্রতিষ্ঠিত করা। সবার হৃদয় যেন সম্মান এবং সম্প্রীতিতে পরিপূর্ণ থাকে, সেটাও আমাদের কর্তব্য।' মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, 'আজকের দিনটা স্বাধীনতা, সুবিচার সাম্যের আদর্শ মনে রাখার দিন।'
লালকেল্লায় কেন গরহাজির রাহুল গান্ধী?
স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে কেন গেলেন না দুই শীর্ষ কংগ্রেস নেতা, তা নিয়ে দলের তরফে সরকারিভাবে কোনও কারণ দেখানো হয়নি। সূত্রের খবর, দলীয় কার্যালয়ে পতাকা উত্তোলনের জন্যই জাননি রাহুল গান্ধীরা। তবে রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, গত বছর আসন বণ্টন কেলেঙ্কারির জন্যই এবার স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে গরহাজির থেকেছেন রাহুলরা। আসলে আগের স্বাধীনতা দিবসে প্রোটোকল ভেঙে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীকে শেষের দিকের আসনে বসতে দেওয়া হয়েছিল। প্রোটোকল অনুযায়ী, লোকসভা এবং রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে প্রথম সারিতে বসার সুযোগ পান। কিন্তু রাহুলকে সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি।