'বিশ্বের বৃহত্তম এনজিও।' স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লায় দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের ভূয়সী প্রশংসা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চলতি বছর শতবর্ষ পূর্ণ হচ্ছে আরএসএসের।স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার সময়ে সেই রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের ১০০ বছর পূর্তির কথা উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
লালকেল্লার মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, '১০০ বছর আগে, একটি আন্দোলনের জন্ম হয়েছিল, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)। এক শতাব্দী ধরে, এই সংগঠন দেশের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করেছে। দেশের দরকারে সবসময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে সংঘ। ১০০ বছর ধরে নিষ্ঠা-সমর্পণের সঙ্গে দেশসেবা করে চলেছে আরএসএস। এর (আরএসএস-এর) যাত্রা এবং অবদান নিয়ে আমরা গর্বিত। এক কথায়, আরএসএস বিশ্বের বৃহত্তম এনজিও।' এর আগে আর কোনও প্রধানমন্ত্রী লালকেল্লায় দাঁড়িয়ে এভাবে কোনও সংগঠনের প্রশংসা করেছেন কিনা তা সংশয় রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী নিজেও গত ১১ বছরে সরকারি মঞ্চে সংঘ ছোঁয়াচ এড়িয়ে যাওয়ারই চেষ্টা করেছেন। কিন্তু এবার লালকেল্লায় দাঁড়িয়ে প্রতিষ্ঠা শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রী যেভাবে সংঘের প্রশংসা করলেন তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
এ বছর 'সংঘ যাত্রার ১০০ বছর - নতুন দিগন্ত' শিরোনামে একটি অনুষ্ঠানও হওয়ার কথা রয়েছে। দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে সেই অনুষ্ঠান হতে পারে। সেখানে উপস্থিত থাকতে পারেন সংঘ চালক মোহন ভাগবত। এখানে গণমাধ্যম, কূটনীতি, ধর্ম এবং শিক্ষা-সহ ১৭টি ক্ষেত্রের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে বক্তৃতা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে।এই অনুষ্ঠানে ভাগবত সমাজের বিভিন্ন অংশের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিত্বকে এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানোর কথা। শুধু দিল্লি নয় গোটা দেশের বড় বড় শহরে এই অনুষ্ঠান হতে পারে। আরএসএস-এর আদর্শকে দেশের মানুষের সামনে তুলে ধরা এই সব অনুষ্ঠানের লক্ষ্য। দিল্লির এই অনুষ্ঠানের পর নভেম্বরে বেঙ্গালুরু, এবং আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে কলকাতা ও মুম্বইতেও অনুরূপ বড় আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এসব অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হবে।
এই বৃহৎ আয়োজনে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও, পাকিস্তান, তুরস্ক এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না। কূটনৈতিক মহলে এই বিষয়টি বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তানের সঙ্গে বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের কারণে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না। অন্যদিকে, তুরস্কের সঙ্গে পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান প্রতিরক্ষা সহযোগিতার কারণে আঙ্কারাকেও এই তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা বৃদ্ধির অভিযোগ তুলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।তবে আরএসএস তাদের অনুষ্ঠানে বিরোধী দলের নেতা-কর্মী এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের তরুণ উদ্যোক্তাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছে।