ইয়েমেনে ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ডের সাজায় অনুমোদন করেছেন সেই দেশের রাষ্ট্রপতি রাশাদ আল-আলিমি। এই অবস্থায় নিমিশাকে সব ধরনের সাহায্য করার বার্তা দিয়েছিল ভারত সরকার। আর এবার রিপোর্টে দাবি করা হল, ইরান সরকারের তরফ থেকে এই ইস্যুতে ইয়েমেনের সঙ্গে কথা বলা হতে পারে। ইরানের সরকারের বক্তব্য, 'আমরা বিষয়টি ইয়েমেনের সামনে উত্থাপন করব। আমরা দেখব এই নিয়ে কী করা যায়।' ইয়েমেনের এক নাগরিককে হত্যার অভিযোগে ২০১৭ সাল থেকে ইয়েমেনের কারাগারে রয়েছেন প্রিয়া। সূত্রের খবর, এক মাসের মধ্যেই ফাঁসি কার্যকর হওয়ার কথা। এই আবহে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বলেছে যে তারা এই কেসে সমস্ত বিকল্প খতিয়ে দেখছে। আর এরই মাঝে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার বার্তা দিল ইরান। (আরও পড়ুন: সেনাকর্মী থেকে ডেলয়েটে মোটা বেতনের চাকরি, কীভাবে 'ISIS জঙ্গি' হল জব্বর?)
আরও পড়ুন: ফের বৃষ্টি হতে পারে বাংলায়, বাড়বে তাপমাত্রা, শীতের আমেজ থাকবে আর কতদিন?
আরও পড়ুন: ছুটে এল BGB! ভারতীয় ভূখণ্ডের ৬০ গজ ভিতরে কাঁটাতারেও আপত্তি বাংলাদেশের
উল্লেখ্য, নিমিশা প্রিয়া ছিলেন কেরলের পলক্কড় জেলার বাসিন্দা ছিলেন। কর্মসূত্রে ইয়েমেনে নিজের স্বামীর সঙ্গে থাকতেন তিনি। ২০১৪ সালে তাঁর স্বামী এবং মেয়ে ভারতে ফিরে আসে। এদিকে ২০১৬ সালে ইয়েমন থেকে যাতায়তে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ভারত। সেই সময় ইয়েমেনের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে কাজ করতেন। সেখানেই তলাত আবদো মেহদির সঙ্গে পরিচয় হয় প্রিয়ার। পরবর্তীতে প্রিয়াকে মেহদি একটি ক্লিনিক খোলার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কারণ ইয়েমেনে কোনও বিদেশি নাগরিক যদি ক্লিনিক খুলতে চায়, তাহলে তাকে স্থানীয় কারও সঙ্গে পার্টনারশিপে তা খুলতে হবে। সেই কারণেই মেহদিকে প্রয়োজন ছিল প্রিয়ার। এই আবহে ২০১৫ সালে মেহদির সাহায্যে ক্লিনিক খোলে প্রিয়া। (আরও পড়ুন: হিন্দুদের সরকারি চাকরি থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ নিয়ে মুখ খুলল ইউনুসের সরকার, বলল…)
আরও পড়ুন: 'বাংলাদেশ যে ভাষায় বোঝে...', বড় কথা বললেন অভিষেক, অনুপ্রবেশ নিয়ে তোপ কেন্দ্রকে
আরও পড়ুন: বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের হাতে ধৃত দুই ভারতীয় নাগরিক, অভিযোগ অনুপ্রবেশের
পরে মেহদির সঙ্গে মতপার্থক্য দেখা দেয় প্রিয়ার। মেহদি প্রিয়ার থেকে তাঁর পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেয়। এর জেরে সেই দেশেই আটকে পড়েন তিনি। এদিকে প্রিয়াকে নিজের স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিত মেহদি। এর জেরে মুসলিম দেশে পুলিশের সাহায্যও পায়নি প্রিয়া। নানান ভাবে প্রিয়াকে অত্যাচারও করত মেহদি। পরে কোনও ভাবে প্রিয়া পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছিলেন মেহদির নামে। ২০১৬ সালে গ্রেফতারও হয় মেহদি। পরে অবশ্য সে ছাড়া পেয়ে যায়। এরপর ২০১৭ সালের ২৫ জুলাই মেহদিকে ঘুম পাড়ানো ইনজেকশন দেয় প্রিয়া। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল, লুকিয়ে রাখা পাসপোর্ট ছিনিয়ে নিয়ে ভারতে ফিরে আসা। তবে সেই ইনজেকশনের ওভারডোজে মৃত্যু হয় মেহদির। প্রিয়া এক বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে মেহদির দেহটি কেটে ক্লিনিকের ট্যাঙ্কে রেখে তারা পালায়। পরে ২০১৮ সালে খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন প্রিয়া। পরে সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে ইয়েমেনের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান নিমিশা প্রিয়া। ২০১৮ সাল থেকে আদালতে লড়াই চালাচ্ছিলেন প্রিয়া। অবশ্য সেদেশের শীর্ষ আদালতেও সেই মামলায় হেরে যান প্রিয়া। এরই মাঝে প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন করেছেন ইয়েমেনের রাষ্ট্রপতি রাশাদ আল-আলিমি।