এবার কেন্দ্রীয় সরকারকে বাংলাদেশ ইস্যুতে তোপ দাগলেন তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ অভিষেক ববেলন, 'বাংলাদেশ যে ভাষায় বোঝে, সেই ভাষাতেই কেন্দ্র যেন জবাব দেয়।' বাংলাদেশ ইস্যুতে তৃণমূল কংগ্রেস কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের পাশে আছে বলে জানান অভিষেক। তবে তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার এই ক্ষেত্রে কিছুই করছেন না। উল্লেখ্য, আজ পূর্ব ঘোষণামতো নিজের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে স্বাস্থ্য শিবিরের সূচনা করেন অভিষেক। সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। বাংলাদেশ নিয়ে প্রশ্ন হলে তিনি সোজা জানান, তৃণমূল চায় যাতে কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাদেশকে ‘জবাব’ দেয়। (আরও পড়ুন: বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের হাতে ধৃত দুই ভারতীয় নাগরিক, অভিযোগ অনুপ্রবেশের)
আরও পড়ুন: নিউইয়র্কে বন্দুকবাজের হামলায় গুলিবিদ্ধ ১১, ২০২৫-এর শুরুতেই রক্তারক্তি USA-তে
অভিষেক আজ বলেন, 'বাংলাদেশ জুড়ে যে ধরনের নৃশংসতা, যে ধরনের নৈরাজ্য চলছে, তা সবাই জানে। এবং কেন্দ্রীয় সরকারের নীরবতা এই নিয়ে জল্পনা আরও বাড়িয়ে তুলছে... আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের জবাব দেখতে চাই। বাংলাদেশ যে ভাষায় বোঝে, কেন্দ্র সেই ভাষায় উপযুক্ত জবাব দিক, এটাই চাই। কে তাদের বাধা দিচ্ছে? আমাদের দলের দৃষ্টিকোণ থেকে যদি বলতে হয়, আমরা প্রথম দিন থেকেই আমাদের অবস্থান একেবারে পরিষ্কার করে দিয়েছি। এটি একটি কেন্দ্রের বিষয়। বিদেশ সংক্রান্ত বিষয়গুলি কেন্দ্রীয় সরকারের আওতাভুক্ত। কেন্দ্রীয় সরকার যে পদক্ষেপই গ্রহণ করুক না কেন - একটি দল হিসাবে টিএমসি প্রতিটি ভারতীয়ের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে সম্পূর্ণ সমর্থন করবে। আমরা চাই যারা আমাদের উপর অত্যাচার করছে এবং তাদের লাল চোখ দেখাচ্ছে তারা তাদের জবাব দেবে।' (আরও পড়ুন: 'শান্তিপূর্ণ শুনানি', চিন্ময় প্রভুর জামিনে 'না', আদালত বলল - ‘যাবজ্জীবনের সাজা…’)
এদিকে অনুপ্রবেশ ইস্যুতে বিএসএফকে কাঠগড়ায় দাঁড় করান অভিষেক। তৃণমূল সাংসদ বলেন, 'এ রাজ্যে জঙ্গি ঢোকাচ্ছে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স।' তাঁর কথায়, 'ত্রিপুরা থেকেও তো এতজন ধরা পড়েছে। ত্রিপুরা সরকার কি তৃণমূলের? ডবল ইঞ্জিন সরকার তো? অসমের মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূল করেন? ওঁরাই বলে ঘুসপেটিয়া, উল্টা লটকা দুঙ্গা, কাকে ঝোলালো? বাংলার পুলিশ না সাহায্য করলে জঙ্গি ধরা পড়ত? বাংলাকে অশান্ত করতে। জঙ্গি কে ঢুকিয়েছে? বিএসএফ। আর রাজ্যের পুলিশ জঙ্গি ধরেছে।' তিনি আরও বলেন, 'বিএসএফের নাকের তলা দিয়ে গরু পাচার হয়, কয়লা পাচার হয়। আর ওরা তৃণমূলের দিকে আঙুল তোলে। কোলিয়ারির নিরাপত্তা দায়িত্বে কে রয়েছে? সিআইএসএফ। সীমান্তে নিরাপত্তার দায়িত্বে কে রয়েছে? বিএসএফ। তা হলে কীভাবে গরু পাচার হয়? কীভাবে কয়লা পাচার হয়?'
আরও পডুন: বাংলাদেশিদের জন্যে 'ফাঁদ পাততে' নয়া চাল শাহের, ফেরানো হল 'বাংলাদেশ সেল'
উল্লেখ্য, বিগত দিনে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার জারি থেকেছে। এরই সঙ্গে আবার ভারত বিদ্বেষও বেড়েছে সেই দেশে। রাজনীতিক নেতা থেকে সরকারি পদে থাকা ব্যক্তিরা একেক সময় ভারত নিয়ে উল্টোপাল্টা কথা বলেছেন। এর আগে বাংলাদেশ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আক্রমণাত্মক অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। মমতাকে আবার কটাক্ষ করেছিলেন সেই দেশের রাজনীতিবিদ। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের অস্থিরতা ভারতের ওপর বেশ প্রভাব ফেলেছে, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির ওপর। এই আবহে বিজেপি যাতে মেরুকরণের ফায়দা না তুলতে পারে, সেই বিষয়েও বেশ সচেতন তৃণমূল কংগ্রেস। এই আবহে বাংলাদেশ নিয়ে প্রথম থেকেই কেন্দ্রের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে রেখেছে তৃণমূল। এরই মাঝে আবার বাংলাদেশ ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘নিষ্ক্রিয়তা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ঘাসফুল শিবির।