প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের স্মৃতিসৌধের জন্য জায়গা চেয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চিঠি লিখেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। কংগ্রেসের দাবি ছিল, এমন এক স্থানে মনমোহন সিংয়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হোক যেখানে তাঁর সম্মানে একটি স্মৃতিসৌধ তৈরি করা যাবে। এই নিয়ে 'রাজনীতি করার' অভিযোগও ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কংগ্রেস এবং মনমোহন সিংয়ের দাবি মেনে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর স্মৃতিসৌধের জন্যে জমি দেওয়া হবে। (আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টে কি বকেয়া ডিএ মামলার শুনানি ফের পিছিয়ে যাবে? সামনে এল বড় আপডেট)
আরও পড়ুন: আজ বৃষ্টি হবে বাংলার ৬ জেলায়, এরপর ফের ঠান্ডা কবে বাড়বে কলকাতায়?
এই নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে পিআইবি-র মাধ্যমে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের জন্যে একটি স্মৃতিসৌধ তৈরি করতে জমি বরাদ্দের আবেদন জানিয়ে ২৭ ডিসেম্বর সকালে একটি চিঠি দিয়েছিলেন কংগ্রেস সভাপতি। সকালে বিশেষ ক্যাবিনেট বৈঠকের পরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কংগ্রেস সভাপতি এবং পরিবারকে জানিয়ে দিয়েছিলেন যে স্মৃতিসৌধের জন্যে জমি দেওয়া হবে। এর মাঝে শেষকৃত্য এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হতে পারে। কারণ জমি বরাদ্দ করতে এবং স্মৃতিসৌধ তৈরির ক্ষেত্রে একটি ট্রাস্ট গঠন করতে হবে।
প্রসঙ্গত, শনিবার সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিংয়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে নিগমবোধ ঘাটে। এই শেষকৃত্যের তত্ত্বাবধানে থাকবে সেনা। এই আবহে মল্লিকার্জুন খাড়গে মোদীকে চিঠি লিখে আবেদন জানিয়েছিলেন, এমন জায়গায় শেষকৃত্য করা হোক, যেখানে স্মৃতিসৌধ করা যাবে। চিঠি লেখার আগে এদিন সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনেও কথা বলেছিলেন খাড়গে। প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠি এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে কংগ্রেস। পরে শিরোমণি অকালি দলের নেতা সুখবীর সিংহ বাদল সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দাবি করেন, মনমোহন সিংহের স্মৃতিসৌধের জন্য জায়গা চেয়েছিল কংগ্রেস এবং তাঁর পরিবার। সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে কেন্দ্রীয় সরকার।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৮টা ১০ মিনিটে মনমোহন সিংকে এইমসের ইমারজেন্সিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এরপর রাত ৯টা ৫১ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এরপরই কেন্দ্রের তরফে ঘোষণা করা হয়, শুক্রবার শোকের আবহে সমস্ত সরকারি অনুষ্ঠান বাতিল থাকবে। এছাড়াও ৭ দিনের রাষ্ট্রীয় শোকপালনের ঘোষণা করেছে মোদী সরকার। নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, সোনিয়া গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়গ, জেপি নড্ডারা মনমোহনের বাসভবনে গিয়ে তাঁকে শেষশ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন শুক্রবার।
এককালে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর থেকে ভারতের অর্থমন্ত্রী এবং পরবর্তীতে দেশের শীর্ষ নেতা হয়েছিলেন মনমোহন সিং। উল্লেখ্য, দেশের ত্রয়োদশ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মনমোহন সিং। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ১০ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। ১৯৯১ সালে অর্থমন্ত্রী হিসেবে দেশের অর্থনৈতিক সংস্কারের জন্যে সব কিছু 'বাজি রেখেছিলেন' মনমোহন সিং। আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পারমাণবিক চুক্তির জন্যে তিনি সেই একই কাজ করেছিলেন। কারণ তিনি এটাকে কেবলমাত্র একটা চুক্তি হিসেবে দেখেননি, বরং পশ্চিমি বিশ্বের সঙ্গে ভারতের 'রিসেট বোতাম' হিসেবে দেখেছিলেন। সেই সময় বামেরা তাঁর সরকার থেকে সর্থন প্রত্যাহার করলেও মনমোহন অনড় থেকেছেন নিজের অবস্থানে।