এবার কি তাহলে বদলে যাবে বাংলাদেশের সংবিধান? এই প্রশ্ন উঠছেই। কারণ, তথ্য বলছে, সেদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ৯ সদস্যের একটি বিশেষ কমিশন গঠন করেছে।
ঘোষণা অনুসারে, এই কমিশনের কাজ হবে বাংলাদেশের সংবিধান খতিয়ে দেখা এবং প্রয়োজনে তা সংশোধন করার জন্য প্রস্তাব পেশ করা।
এই কমিশনের মাথায় রাখা হয়েছে বাংলাদেশি-মার্কিন অধ্যাপক আলি রিয়াজকে। আর কমিশনের পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে, সংবিধান সংশোধন কমিশন।
অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ৯০ দিনের মধ্যেই ৯ সদস্যের এই কমিশনকে তাদের রিপোর্ট এবং প্রস্তাব সরকারের কাছে পেশ করতে হবে। বাংলাদেশ সরকার পরিচালিত সংবাদ সংস্থা বিএসএসের তরফে অন্তত এমনটাই দাবি করা হয়েছে।
সোমবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়, বর্তমানে যে সংবিধান অনুসারে দেশের প্রসাশন ও আইন চলছে, তা আদৌ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে এবং আমজনতার ক্ষমতায়নে সক্ষম কিনা, তা খতিয়ে দেখা হবে।
ঢাকা ট্রিবিউনে এই সংক্রান্ত যে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছ, তাতে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কমিশনকে সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে এবং তাদের মতমত নিয়ে নিজেদের কাজ করতে হবে।
সংবিধান সংশোধন করার জন্য কী কী প্রস্তাব দেওয়া যেতে পারে, সেটাও আলোচনার ভিত্তিতেই স্থির করতে হবে।
এই কমিশনে ছাত্রদের প্রতিনিধিকেও রাখা হয়েছে। সেই দায়িত্ব পড়েছে মেহফুজ আলমের কাঁধে। যিনি কিনা ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের বিশেষ সহকারী পদে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।
সংবাদপত্রে প্রকাশিত ওই রিপোর্টে আরও জানানো হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কমিশনের অন্যান্য সদস্যের মধ্যে রয়েছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক সুমাইয়া খাইর এবং মহম্মদ এক্রামুল হক।
এছাড়াও, কমিশনে রাখা হয়েছে, ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিকি এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. শরিফ ভুঁইয়াকে। তাঁদের সঙ্গেই রয়েছে, ব্য়ারিস্টার এম মইন আলম ফিরোজি, লেখক ফিরোজ আহমেদ, লেখক ও মানবাধিকার কর্মী মহম্মদ মুস্তাইন বিল্লাহ।
উল্লেখ্য, গত মাসেই ৮৪ বছরের মহম্মদ ইউনুস ঘোষণা করেছিলেন, বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও সংস্কারের স্বার্থে ছ'টি কমিশন গঠন করা হবে। যাদের উদ্দেশ্য হবে, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা, প্রশাসন, পুলিশ, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং সংবিধানে প্রয়োজনীয় বদল ও সংস্কার আনা।
উল্লেখ্য, গত ৫ অগাস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৮ অগাস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা পদে শপথ গ্রহণ করেন মহম্মদ ইউনুস। তারপর থেকেই একাধিকবার বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থায় সংস্কার সাধনের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন তিনি।
সোমবারের ঘোষণা এবং ৯ সদস্যের সংবিধান সংশোধন কমিশন গঠন আদতে সেই পরিকল্পনারই বাস্তব প্রয়োগ বলে ব্যাখ্যা করছেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।