ভারতের সংশোধিত ওয়াকফ আইন ইস্যুতে সম্প্রতি মুখ খুলেছে বাংলাদেশ। এপারের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আর্জি জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। এরই মাঝে আবার ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে ওয়াকফ ইস্যুতে মুখ খোলা হয়েছে। সরাসরি বাংলাদেশের মন্তব্যের জবাবে না হলেও ওয়াকফ নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়ে বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, ওয়াকফের ইস্যু পুরোপুরি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এই নিয়ে মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, 'ওয়াকফকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, আরও প্রগতিশীল করে তোলার জন্য সংশোধনী বিলটি আনা হয়েছে। এবং যাতে ওয়াকফের সুবিধাভোগীরা আরও বেশি উপকার পান, সেজন্য বেশ কয়েকটি অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি প্রস্তাব করা হয়েছে নয়া সংশোধনীতে।' (আরও পড়ুন: কর্মফল ভোগ করছে বাংলাদেশ? পড়শি দেশকে দেওয়া 'শাস্তি' নিয়ে অকপট ভারত)
আরও পড়ুন: সংশোধিত WAQF আইনের জন্যে মোদীকে ধন্যবাদ জানালেন ‘সংখ্যালঘুদের মধ্যে সংখ্যালঘুরা’
এদিকে ওয়াকফ ইস্যুতে ইউনুসের সরকারের তরফ থেকে কী বলা হয়েছে? এই নিয়ে শফিকুল বলেন, 'মুর্শিদাবাদে যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে, সেটার সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্ত করার যে কোনও প্রচেষ্টার তীব্র নিন্দা করছি। আমরা মুসলিমদের উপরে হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। যে ঘটনার জেরে প্রাণহানি এবং সম্পত্তিহানি হচ্ছে। আমরা ভারত সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সংখ্যালঘু মুসলিমদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য আর্জি জানাচ্ছি।' যদিও মুর্শিদাবাদের হিংসার ঘটনায় বাংলাদেশের হাত আছে বলে ভারত সরকারের তরফে সরকারিভাবে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা এএনআইয়ের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, প্রাথমিক তদন্তে ইঙ্গিত মিলেছে যে ওই ঘটনায় বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা জড়িত আছে। সেই কথা আবার শোনা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে। (আরও পড়ুন: ১৪টি জঙ্গি হামলায় অভিযুক্ত খলিস্তানি গ্রেফতার আমেরিকায়, ভারতের মুখে ফুটল হাসি)
উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় বিক্ষোভের জেরে হিংসা ছড়িয়ে পড়েছিল ১১ এপ্রিল থেকে। এই হিংসার জেরে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন কিশোর আছে। সে গত ১১ এপ্রিল গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। এদিকে ১২ এপ্রিল সামশেরগঞ্জে বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন স্থানীয়রা। এই আবহে ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দেহ উদ্ধার করতে গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয়েছিল। পরে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করলে তা না নেওয়ার ঘোষণা করেন নিহতের পরিবার। এদিকে এলাকায় শানতি ফেরাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে বিএসএফ।
এদিকে ১২ এপ্রিল ধুলিয়ান পুরসভাতে ভাঙচুর চালানো হয়েছিল। সেদিন একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভাঙচুর চালানো হয়েছিল এবং পরে সেখানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। ধুলিয়ানে একটি শপিংমলেও লুটপাট চালানো হয়েছিল। এদিকে ফারাক্কার বিধায়ক মনিরুল ইসলামের দাদা আলির বাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকী বিধায়ককেও হেনস্থা করা হয়েছিল বলে দাবি করা হয়। এছাড়া জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুরের অফিসেও হামলা চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। এদিকে মুর্শিদাবাদে হিংসার অভিযোগে এখনও পর্যন্ত শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।