সংসদের অধিকাংশ সদস্যই 'ওভারওয়েট' বা স্থূলকায় (মোটা)। তাই, তাঁদের স্থূলতা ও জীবনধারণ সংক্রান্ত অসুখের সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী জে পি নড্ডা। শুক্রবার (২১ মার্চ, ২০২৫) বিষয়টি নিয়ে সংসদেই উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। তাঁর প্রস্তাব, এই স্থূলতার কারণেই প্রত্যেক সাংসদের নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানো উচিত।
ভারতে ক্রমশ অসংক্রামক ব্যধির দাপাদপি বাড়ছে। এর জন্য বদলে যাওয়া জীবনশৈলীকেই দায়ী করেছে নড্ডা। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আইসিএমআর-এর পেশ করা তথ্য অনুসারে, ১৯৯০ সালে যেখানে দেশে অসংক্রামক ব্যধির পরিমাণ ছিল ৩৭ শতাংশ, ২০১৬ সালে সেটাই বেড়ে হয়েছে ৬১.৮ শতাংশ। এটা খুবই গুরুতর বিষয়। জীবনশৈলী সংক্রান্ত বিভিন্ন ওসুখ, যা খাদ্যাভ্যাস এবং রোজের রুটিনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, সেগুলিকে একত্রিতভাবে মোকাবিলা করতে হবে।'
এই প্রেক্ষিতেই কেন্দ্রের আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দির উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন নড্ডা। তাঁর দাবি, ৩০ বছরের কম বয়সীরা যাতে স্বাস্থ্যসম্মত জীবনশৈলীতে অভ্যস্থ হয়ে উঠতে পারে, তার জন্যই কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আমজনতার স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলার সময়েই সহ-সাংসদদের উদ্দেশ্য়ে নড্ডা বার্তা দেন, তাঁরা সকলেই যেন নিজেদের স্বাস্থ্যের যত্ন নেন এবং জনমানসে নিজেদের উদাহরণ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেন। নড্ডা বলেন, 'এখানে অনেকেরই ওজন বেশি। সাংসদরা যাতে নিজেরা সুস্থ থাকেন, তার জন্য তাঁদের বছরে অন্তত একবার অবশ্যই স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানো উচিত।'
এই আলোচনায় লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাও স্বতঃপ্রণোদিতভাবে অংশ নেন। তিনি বলেন, সাংসদদের এটাও নিশ্চিত করা উচিত, যাতে তাঁদের সংসদীয় এলাকায় রোজের ভিত্তিতে স্বাস্থ্যপরীক্ষার ব্যবস্থা থাকে।
এর প্রেক্ষিতে নড্ডা বলেন, 'এখানে যাঁরা বসে আছেন, তাঁদেরও তো ওজন অনেক বেশি। যদি তাঁরা নিজেরা সুস্থ থাকেন, তবেই তো মানুষের জন্য কাজ করতে পারবেন।'
প্রসঙ্গত, ভারতীয়দের একাংশের মধ্যে যে স্থূলতা বাড়ছে, সেটা একটা সমস্যা তো বটেই। নড্ডা এদিন সেই সমস্যার কথা উল্লেখ করেন। কিছু দিন আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও এই একই ইস্যু নিয়ে সরব হয়েছিলেন।
গত ৭ মার্চ (২০২৫) গুজরাতে আয়োজিত একটি সভায় ভাষণ দিতে গিয়ে মোদী উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিলেন, ভারতীয়দের স্থূলতা বৃদ্ধি একটি 'বিরাট এবং ভয়ঙ্কর চ্যালেঞ্জ'। ল্যানসেট মেডিক্যাল জার্নালের একটি প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মোদী বলেছিলেন, ২০৫০ সালের প্রায় ৪৪ কোটি ভারতীয় স্থূলতার সমস্যায় ভুগবেন।