গত সপ্তাহে দিনেদুপুরে পাটনার এক হাসপাতালে ঢুকে বক্সারের কুখ্যাত গ্যাংস্টার চন্দন মিশ্রকে গুলি করে খুন করে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা।এরপরেই প্রশ্নের মুখে বিহারের আইনশৃঙ্খলা। এই আবহে পুলিশের এনকাউন্টারে গুলিবিদ্ধ হয়েছে চন্দন মিশ্র খুনে জড়িত দুই দুষ্কৃতী।
পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সকাল ৫টা নাগাদ ভোজপুরে এনকাউন্টার হয়। জখম দুই দুষ্কৃতীর নাম বলবন্ত কুমার (২২) এবং রবিরঞ্জন সিং (২০)।পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোর রাতে খবর পাওয়া যায়, ভোজপুরে বিহিয়া-কাটিয়া রোডের পাশে নদীর ধারে বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী লুকিয়ে রয়েছে। পুলিশ ওই জায়গায় পৌঁছতেই বলবন্ত ও রবিরঞ্জন তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়।পাল্টা জবাব দেয় পুলিশও। সূত্রের খবর, রবিরঞ্জনের থাইয়ে গুলি লাগে। বলবন্তের পায়ে ও হাতে গুলি লেগেছে। এরপরেই গুরুতর জখম অবস্থায় তাদের বিহিয়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
আরও পড়ুন-আধার,ভোটার কার্ড,রেশন কার্ডে সায় নেই! SC-তে হলফনামা নির্বাচন কমিশনের
জানা গেছে, বলবন্তের বাড়ি বক্সার জেলায় লীলাধরপুরের পারসিয়া এলাকায়। রবিরঞ্জনের বাড়ি ভোজপুরের চাকরাহিয়া বিহিয়া এলাকায়। পুলিশের দাবি, ওই দুই দুষ্কৃতী চন্দন মিশ্র খুনের ঘটনায় জড়িত। গত ১৭ জুলাই পাটনার পারস হাসপাতালের আইসিইউ-তে ঢুকে যে পাঁচ দুষ্কৃতী চন্দনকে গুলি চালিয়ে খুন করেছিল, তাদের মধ্যে বলবন্ত অন্যতম। ওই দিন হাসপাতালের বাইরে রবিরঞ্জন পাহারা দিচ্ছিল বলে তদন্তকারীদের একাংশের দাবি।ইতিমধ্যে চন্দুন খুনের মেন শুটার ও প্রধান ষড়যন্ত্রকারী তৌসিফ রাজা ওরফে বাদশাকে গ্রেফতার করেছে বিহার পুলিশ। খুনের ঘটনায় কলকাতা থেকেও তৌসিফের খুড়তুতো ভাই নিশু খান-সহ ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।বলবন্ত ও রবিরঞ্জন কিছুটা সুস্থ হলে তাদেরও গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের দাবি, পাটনার সামনপুরা এলাকায় নিশু খানের বাড়িতেই চন্দনকে খুনের পরিকল্পনা করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার পাটনার পারস হাসপাতালে হুলুস্থূল পড়ে যায়। পাঁচজন দুষ্কৃতী হাসপাতালের আইসিইউ-তে ঢুকে পড়ে গ্যাংস্টার চন্দন মিশ্রকে হত্যা করে। কোনও রকম বাকবিতণ্ডা ছাড়াই একের পর এক গুলি চালায়। মুহূর্তের মধ্যেই রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন চন্দন। পরে তাঁর মৃত্যু হয়।প্রকাশ্যে এমন দাপট দেখে তাজ্জব হয়ে যায় সকলে। চন্দন মিশ্র কুখ্যাত দুষ্কৃতী। তাঁর নামে খুন-ডাকাতির মতো ২৪টি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে ১২টি খুনের মামলা। প্যারোলে মুক্তি পেয়ে ভর্তি ছিল পারস হাসপাতাল-এ। ঘটনার পর হাসপাতালের বাইরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তিনজন দুষ্কৃতী একটি বাইকে চেপে পালাচ্ছে। একজন বাইকে বসে বন্দুক দেখিয়ে অন্য হাত আকাশে তুলে কোনও বিজয় সংকেত করছে।সেই সময় পাটনার সিনিয়র পুলিশ সুপার কার্তিকেয় শর্মা জানান, চন্দন মিশ্র বক্সার জেলার বাসিন্দা। বক্সার থেকে ভাগলপুর জেলে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। চিকিৎসার কারণে প্যারোলে ছাড়া পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিল। তাঁকে গুলি করে মেরেছে প্রতিদ্বন্দ্বী গ্যাং। বক্সার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ‘চন্দন শেরু গ্যাং’-এর সদস্যদের শনাক্ত করার কাজ চলছে।
আরও পড়ুন-আধার,ভোটার কার্ড,রেশন কার্ডে সায় নেই! SC-তে হলফনামা নির্বাচন কমিশনের
উল্লেখ্য, বিধানসভা নির্বাচনের আগে উত্তপ্ত বিহার। ইতিমধ্যেই খুন হয়েছেন ব্যবসায়ী গোপাল খেমকা, বিজেপি নেতা সুরেন্দ্র কেওয়াত এবং আইনজীবী জিতেন্দ্র মাহাত। তার উপর এই হাসপাতাল-হত্যাকাণ্ড যেন আগুনে ঘৃতাহুতি