হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে এখনও সংবাদ শিরোনামেই আছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই ঘটনা নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় এখনও মিমের ছড়াছড়ি। এরই মধ্য়ে এবার রাশিয়াকে ট্যারিফ হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি!
বিশ্বের প্রতি ট্রাম্পের মরিয়া বার্তা, একমাত্র তিনিই রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ থামাতে পারেন। এবং তার জন্য যা কিছু করা যায়, তিনি করবেন। তাই এবার তিনি রাশিয়ার উপর 'বড়সড়' ট্যারিফ বা শুল্ক চাপানোর কথা ভাবছেন। একথা ট্রাম্প নিজেই জানিয়েছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্য হল, যতক্ষণ পর্যন্ত না রাশিয়া যুদ্ধবিরতি মান্য করছে এবং ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তি সমঝোতায় আসছে, ততক্ষণ পর্যন্ত রাশিয়ার উপর তাঁর সরকার এই শুল্ক বহাল রাখার কথা ভাবছে।
কিন্তু, কিছু দিন আগেও তো রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি ট্রাম্পের ভালোবাসা ও সমর্থন উপচে পড়ছিল। তাহলে হঠাৎ করে কী হল? ট্রাম্প কি শিবির বদল করলেন?
তথ্যাভিজ্ঞ মহল অবশ্য বলছে, তেমন কিছুই ঘটেনি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আসলে একজন ব্যবসায়ী। রাষ্ট্রের শীর্ষস্থানে বসেও তিনি সেই ব্যবসটাই ভালোভাবে করতে চাইছেন। কিন্তু, তাঁর খাস দরবারে জেলেনস্কি যে বেসুরে গাইবেন, সেটা বোধ হয় অনুমান করতে পারেননি তিনি। বুঝতে পারেননি, এই ঘটনার পর সমগ্র ইউরোপ তো বটেই মার্কিনিদের একটা অংশও যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকেই সমর্থন করবেন।
তথ্য বলছে, শুধুমাত্র বিভিন্ন রাষ্ট্রনেতারাই নন। ট্রাম্প-জেলেনস্কির বিবাদের পর সাধারণ বিশ্ববাসীর একটা বড় অংশও ট্রাম্পের সমালোচনা এবং জেলেনস্কিকে সমর্থন করছেন। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি হাওয়ার গতিক সুবিধের নয় বুঝেই এবার পুতিনের রাশিয়াকে চমকানোর চেষ্টা করছেন ট্রাম্প?
বিশেষজ্ঞ মহল বলছে, কারণ আও আছে। সেটা হল - এই প্রেক্ষাপটে আরও একটি ঘটনা ঘটেছে। রাতের অন্ধকারে ফের একবার আকাশপথে ইউক্রেনের উপর হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। আর ঘটনা হল, রাশিয়া এই নয়া হামলা চালানোর ঠিক আগেই ইউক্রেনের থেকে সামরিক সহযোগিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছিল আমেরিকা! তাহলে কি এই প্রশ্ন উঠবে না যে আমেরিকার পদক্ষেপের জন্যই রাশিয়া আরও বেশি প্রশ্রয় পেয়ে গিয়েছে?
বিষয়টি সামনে আসতেই ট্রাম্প তাঁর নয়া সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, 'যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনের উপর পুরোপুরি আঘাত হানার চেষ্টা করছে রাশিয়া। এটা ঘটনা। আর এই প্রেক্ষিতেই আমি ভাবছি, রাশিয়ার উপর বিরাট পরিমাণে ব্যাঙ্কিং-সহ অন্য়ান্য নিষেধাজ্ঞা, শুল্ক এবং ট্যারিফ কার্যকর করব। যতক্ষণ পর্যন্ত না রাশিয়া যুদ্ধবিরতি মান্য করবে এবং পাকাপাকিভাবে শান্তি সমঝোতায় আসবে, এই সিদ্ধান্ত কার্যকর রাখা হবে।'
এরপরই খানিকটা বড় দাদার ভঙ্গিতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের উদ্দেশে ট্রাম্প লিখেছেন, 'রাশিয়া আর ইউক্রেনকে বলছি, আরও দেরি হয়ে যাওয়ার আগে, এখনই আলোচনার টেবিলে বসুন। ধন্যবাদ!!!'