অপারেশন সিঁদুর স্ট্রেকের পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতের আবহে রোষের মুখে পড়েছিল হায়দরাবাদের সংস্থা ‘করাচি বেকারি’। দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ বিরতির পরেও হায়দরাবাদের করাচি বেকারির একটি শাখায় ফের ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, রবিবার ১০-১৫ জনের একটি দল শামশাবদের করাচি বেকারির সামনে পাকিস্তান বিরোধী স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ দেখান। ওই সংস্থার নাম পরিবর্তনের দাবি জানান তাঁরা। তারপরেই দোকানটিতে ভাঙচুর করা হয়। তবে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে। ইতিমধ্যে ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
আরও পড়ুন-২২০০ পয়েন্টের লম্বা লাফ! ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ বিরতির পর লক্ষীলাভ শেয়ার বাজারে
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিওতে দেখা গেছে, গেরুয়া রঙের স্কার্ফ পরা একটি দল করাচি বেকারির একটি শাখায় হামলা চালাচ্ছে এবং নাম পরিবর্তনের দাবি জানাচ্ছে। বিক্ষোভকারীরা লাঠি দিয়ে দোকানের নেমপ্লেট ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছিল বলে অভিযোগ। তবে বেকারির কোনও কর্মচারী আহত হননি। গুরুতর কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবরও নেই বলে পুলিশ সূত্রে খবর। হায়দরাবাদের আরজিআই এয়ারপোর্ট থানার ইনস্পেক্টর কে বলরাজু বলেন, 'আমরা বিক্ষোভের খবর পেয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিলাম। নির্দিষ্ট একটি রাজনৈতিক দলের সমর্থক ওই বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের আমরা বুঝিয়ে বেকারির সামনে থেকে সরিয়ে দিই।'
অন্যদিকে, করাচি বেকারির মালিক রাজেশ এবং হরিশ রামনানি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, তারা ১০০ শতাংশ ভারতীয় ব্র্যান্ড। কোনওভাবেই পাকিস্তানি ব্র্যান্ড নয়। ইতিমধ্যে তাঁরা তেলাঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নিরাপত্তার জন্য আবেদনও জানিয়েছেন। সাধারণ মানুষকে এই দুঃসময়ে তাদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করেছেন। তাঁরা জানান, 'আমরা মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি এবং প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে অনুরোধ করছি যে তারা যেন নাম পরিবর্তন আটকাতে সহায়তা করেন। শহরজুড়ে বেকারিগুলিতে লোকেরা তেরঙ্গা পতাকা উত্তোলন করছে। দয়া করে আমাদের সমর্থন করুন কারণ আমরা একটি ভারতীয় ব্র্যান্ড।'
আরও পড়ুন-২২০০ পয়েন্টের লম্বা লাফ! ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ বিরতির পর লক্ষীলাভ শেয়ার বাজারে
এই প্রথম নয়, এর আগেও ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে রোষের মুখে পড়েছিল করাচি বেকারি। গত সপ্তাহেই বানজারা হিল্সের শাখায় বেকারির নাম পরিবর্তনের দাবিতে ভাঙচুর করেছিল বিক্ষোভকারীরা। ভাঙচুরের পাশাপাশি কর্তৃপক্ষকে হুমকি চিঠিও পাঠানো হয়েছে বলে খবর।এই পরিস্থিতিতে এক প্রকার বাধ্য হয়েই সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করে সংস্থাটি। সেখানে তারা জানায়, ‘করাচি বেকারি ১০০ শতাংশ ভারতীয় ব্র্যান্ড। এই নাম আমাদের ইতিহাসের অংশ। এর নেপথ্যে অন্য কোনও উদ্দেশ্য নেই।’ শুধু তাই নয়, হায়দরাবাদে সংস্থাটি তাদের দোকানের প্রবেশপথে ভারতীয় পতাকাও টাঙিয়ে রেখেছে। কিন্তু তাও থামছে না বিতর্ক। প্রসঙ্গত, দেশভাগের পর ১৯৫৩ সালে পথ চলা শুরু করেছিল 'করাচি বেকারি'। খানচাঁদ রামনানি নামে এক হিন্দু অভিবাসী এর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি করাচি থেকে ভারতে এসেছিলেন। সেই সূত্র ধরেই নাম রাখা হয় 'করাচি বেকারি'।