একদিন নিখোঁজ থাকার পর এক নির্জন জঙ্গলাকীর্ণ এলাকায় এক কিশোরের আধপোড়া দেহ উদ্ধারে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। নিহত কিশোরের নাম নিশ্চিথ এ, বয়স মাত্র ১৩।ঘটনাটি ঘটেছে বেঙ্গালুরুর দক্ষিণে কাগ্গালিপুরা রোডে।ইতিমধ্যে পুলিশ দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশি এনকাউন্টারের সময় তাদের দুজনের পায়ে গুলি লাগে।
জানা গেছে, ক্লাস এইটের ছাত্র ছিল নিশ্চিথ এ, পড়ত ক্রাইস্ট স্কুলে। গত বুধবার বিকেল ৫টা নাগাদ টিউশনে যাওয়ার জন্য নিশ্চিত বাড়ি থেকে বের হয়েছিল। সন্ধে সাড়ে ৭টা বেজে গেলেও ছেলে বাড়ি না ফেরায় নিশ্চিতের বাবা জে অচিত তাঁর শিক্ষককে ফোন করেন। তিনি জানান, নিশ্চিথ নির্দিষ্ট সময়েই টিউশন থেকে বেরিয়ে গিয়েছে।আশেপাশের এলাকায় খুঁজতে গিয়েই ওই কিশোরের মা-বাবা কাগ্গালিপুরা রোডের আরেকেরে পার্কের কাছে নিশ্চিতের সাইকেল পড়ে থাকতে দেখেন। এরপরই তাঁদের কাছে ফোন আসে এবং ওপ্রান্ত থেকে বলা হয় যে নিশ্চিথকে অপহরণ করা হয়েছে। ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিলে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে।ঘটনার পরপর হুলিমাভু থানার পুলিশ একটি অপহরণ এবং নিখোঁজ মামলা দায়ের করে। শুরু হয় ফোন ট্র্যাকিং এবং এলাকায় তল্লাশি। পুলিশ জানিয়েছে, নিশ্চিথের বাবা জয়চন্দ্র আচিত একটি বেসরকারি কলেজে সহকারী অধ্যাপক।
আরও পড়ুন-ত্রিকোণ প্রেমের বলি কলেজ পড়ুয়া! চেন্নাইয়ে গ্রেফতার ডিএমকে নেতার নাতি
বৃহস্পতিবার পুলিশের তল্লাশির মাঝেই কাগ্গালিপুরা রোডের ধারে নির্জন একটি জায়গায় জঙ্গল ঘেরা এলাকায় পড়ে থাকতে দেখা যায় নিশ্চিথের দগ্ধ দেহ। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ফরেন্সিক এবং ডগ স্কয়্যাড।পুলিশ জানিয়েছে, দেহটিতে আংশিক পুড়ে গেছিল, পোশাক থেকে নিশ্চিথের পরিচয় নিশ্চিত করা যায়। এরপরেই অভিযুক্ত দুইজন গুরুমূর্তি ও গোপালকৃষ্ণকে শনাক্ত করে পুলিশ। তাদেরকে বৃহস্পতিবার রাতে কাগ্গলিপুরা রোডের কাছে, বান্নারঘাটা থানার অন্তর্গত এলাকায় গ্রেফতার করা হয়। পুলিস সূত্রে খবর, গ্রেফতারির সময় অভিযুক্তরা পুলিশের উপর হামলা করে। পুলিশ প্রথমে সতর্কতামূলকভাবে আকাশে গুলি ছোড়ে, কিন্তু অভিযুক্তরা আক্রমণ চালিয়ে যেতে থাকে। এরপর আত্মরক্ষায় পুলিশ মোট ছয় রাউন্ড গুলি চালায়। ঘটনার পর, দুই অভিযুক্তকে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য জয়নগর সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাদের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে বলে মনে করা হয়।
আরও পড়ুন-ত্রিকোণ প্রেমের বলি কলেজ পড়ুয়া! চেন্নাইয়ে গ্রেফতার ডিএমকে নেতার নাতি
ঘটনার মাস্টারমাইন্ড গুরুমূর্তি নিশ্চিথের বাড়িতে অতিরিক্ত ড্রাইভার হিসাবে কাজ করত। তার বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত ছিল। অভিযোগ অনুযায়ী, সে ওই রাতে নিশ্চিথকে অপহরণ করে খুন করে। তারপর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে মুক্তিপণ দাবি করে।পুলিশ জানিয়েছে, এই খুনের পিছনে আসল মোটিভ কী, তা পরবর্তী তদন্তে জানা যাবে।এদিকে, বেঙ্গালুরুর এক নামী স্কুলের ছাত্রের এমন মর্মান্তিক পরিণতিতে স্তব্ধ গোটা শহর। প্রশ্ন উঠছে, শহরের বুকে নিরাপত্তা ঠিক কোথায়? অভিভাবকদেরও এখন উদ্বেগ, সন্তান টিউশন পড়তে গিয়েও কি আর নিরাপদ নয়?