আসন্ন বিহার বিধানসভা নির্বাচনে ১৫২টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে লালুপ্রসাদ যাদবের নেতৃত্বাধীন রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) এবং মহাজোটে তাদের শরিক কংগ্রেস লড়বে ৯১টি আসন থেকে। নিজের কোটা থেকেই মহাজোটের অন্য দুই শরিক, মুকেশ সাহনির নেতৃত্বাধীন বিকাশশীল ইনসান পার্টি এবং কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া মার্ক্সবাদী লেনিনবাদী-এর (সিপিআই-এমএল) সঙ্গে আসন ভাগ করে নেবে আরজেডি।অন্য দিকে কংগ্রেস নিজের বরাদ্দ থেকে আসন ছাড়বে রাষ্ট্রীয় লোক সমতা পার্টি, হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা ও সিপিআই-এর জন্য। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহাজোটের এক নেতা জানিয়েছেন, ‘আসন বণ্টন সংক্রান্ত আলোচনা শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং অগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহ নাগাদ এই সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হবে, যখন আমরা জানতে পারব বিহারে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কি না। এত আগে আসন ঘোষণা করা অর্থহীন।’২০১৫ সালের বিহার বিধানসভা নির্বাচনে মহাজোটের অন্যতম শরিক জনতা দল (সংযুক্ত) ১১০টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। সমপরিমাণ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল আরজেডি-ও। পাশাপাশি কংগ্রেস লড়েছিল ৪০টি আসনে। গত নির্বাচনে রাষ্ট্রীয় লোক সমতা পার্টি এবং হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা বিজেপি-র নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের শরিক ছিল। সে বারের মহাজোটের বৃহত্তম শরিক আরজেডি ৮১টি আসনে জয়লাভ করেছিল, জনতা দল (সংযুক্ত) পেয়েছিল ৭০টি আসন ও কংগ্রেস পেয়েছিল ২৭টি আসন। মহাজোটের সাফল্যের জেরে জোটের মুখ নীতীশ কুমার ২০১৭ সালের ২৬ জুলাই বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। নতুন সমীকরণে শোনা যাচ্ছে, নিজস্ব কোটা থেকে ৩০টি আসন বিকাশশীল ইনসান পার্টিকে ছেড়ে দিতে পারে আরজেডি। আবার সিপিআইএমএল-কেও জোটে পেতে মরিয়া লালুপ্রসাদের দল। এই প্রসঙ্গে বামপন্থী দলের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী সপ্তাহে আরজেডি-কে নিজেদের প্রার্থী তালিকা দেওয়া হবে। কংগ্রেস নিজে ৪২টি আসনে প্রার্থী দেবে বলে জানা গিয়েছে। বাকি ৪৯টি আসন তারা আরএলএসপি, হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা ও বাম দলগুলির মধ্যে বণ্টন করবে বলে শোনা যাচ্ছে। বিহার রাজ্য কংগ্রেসের মুখপাত্র হরকু ঝা জানিয়েছেন, আসন বণ্টন সংক্রান্ত আলো়চনা সদর্থক পথে চলেছে। একই মত আরএলএসপি নেতা রাজেশ যাদবেরও। শুধু হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা আসন বণ্টন নিয়ে বিশেষ সন্তুষ্ট নয় বলে জানা গিয়েছে।পটনার এ এন সিনহা ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সেস-এর প্রাক্তন অধিকর্তা এবং সমাজ বিজ্ঞানী ডি এম দিবাকরের মতে, বিহারের প্রধান বিরোধী দল হিসেবে শরিকদের সঙ্গে আসন বণ্টন নিয়ে আলোচনায় জোর গলায় কথা বলার ক্ষমতা রয়েছ আরজেডি-র। তিনি বলেন, ‘বোঝাই যাচ্ছে, জোট শরিকরা বাস্তব চিত্র সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল এবং সেই কারণেই আরজেডি-র উপরে বেশ কিছুটা নির্ভরশীল। আসন বণ্টন প্রক্রিয়ায় নেতৃত্বের লাগাম রয়েছে তাদেরই হাতে।’