বাংলাদেশের ‘ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম’ বা এমআইএসের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে বর্তমানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা ১ লাখ ৯৭ হাজার ৮০০। তাঁদের মধ্যে মাসিক ভাতা পান ১ লাখ ৯৬ হাজার ৪৫৪ জন। এই পরিস্থিতিতে চলতি বছরেই বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদল হয়েছে। হাসিনা সরকারের পতনের পর এবার মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে নয়া অন্তর্বর্তী সরকার ডাক দিয়েছে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় পরিবর্তন আনার। এছাড়াও মুক্তিযোদ্ধাদের লিস্ট যাচাই করার কথাও বলেছে ঢাকা।
বাংলাদেশের ইউনুস সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম আগেই ‘অমুক্তিযোদ্ধা’দের নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। তিনি সেবার তালিকা থেকে অমুক্তিযোদ্ধাদের নাম প্রত্যাহার করার কথা বলেছিলেন। জানিয়েছিলেন, তালিকা থেকে অমুক্তিযোদ্ধারা নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিলে, তাঁকে দায়মুক্তি বা (ইনডেমনিটি) দেওয়া হবে, ফলে তিনি সাধারণ ক্ষমা পাবেন সরকার থেকে। তবে নাম প্রত্যাহার না করলে প্রতারণার দায়ে তাঁদের অভিযুক্ত করা হবে। একইসঙ্গে শাস্তির আওতায় আনা হবে। ফারুক-ই-আজমের সেই বার্তাকে মনে করিয়ে দিয়েই বিজয় দিবসের দিন ফের ইউনুস সরকারের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রক বলেছে, অমুক্তিযোদ্ধাদের স্বেচ্ছায় নাম প্রত্যাহার করে নিতে। ইতিমধ্যেই ‘অমুক্তিযোদ্ধা শণাক্তকরণ অভিযোগ ফর্ম’ মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রকের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে।
ফারুক-ই আজমের মন্ত্রক বলছে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা ও মানদণ্ড ১১ বার পাল্টেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় কখনও হয়েছে সংযোজন, কখনও হয়েছে বিয়োজন। আর তা হয়েছে মোট ৭ বার। মূলত, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা, ভাতা প্রদানের দিকটি দেখে বাংলাদেশের ‘ম্যানেজমেন্ট ইফরমেশন সিস্টেম’। উল্লেখ্য, গত ২০ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল পুনরায় গঠন হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা নির্ধারণকারী তালিকা প্রণয় বা তার সংশোধনের কাজ করে এই কাউন্সিল।
ইতিমধ্যেই এই কাউন্সিল গত ২৪ নভেম্বর ও ২ ডিসেম্বর দুটি বৈঠক করেছে। সেই বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় আলোচিত হয়েছে, তারমধ্যে ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের নামের আগে ‘বীর’ শব্দ আলোচিত হবে কি না। 'প্রথম আলো'র খবর অনুযায়ী, বর্তমান সংজ্ঞা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাজের বহু সংগঠন আপত্তি জানিয়েছে। এবিষয়ে ফারুক ই আজম বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে অনেকে চান, যুদ্ধক্ষেত্রে যাঁরা অস্ত্র ধরে লড়াই করেছেন, তাঁদেরই মুক্তিযোদ্ধা আখ্যা দেওয়া হোক। যাঁরা সহযোগিতা করেছেন বা অন্যভাবে সহায়তা করেছেন, তাঁদের আলাদাভাবে চিহ্নিত করা হোক বা সম্মানিত করা হোক বলে,তাঁরা আহ্বান জানিয়েছেন। জানা যাচ্ছে, আসন্ন সময়ে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় এই সমস্ত জিনিসকে চিহ্নিত করা হবে।