২৪ ডিসেম্বর গভীর রাতে বান্দরবানের লামা উপজেলায় সরই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ১৭ ঘর খ্রিস্টান ঘরে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। রিপোর্ট অনুযায়ী, সেখানকার সংখ্যালঘুদের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। তারপর আগুনে বাড়ির প্রায় সবকিছুই পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তবে এই ঘটনার সঙ্গে ধর্মীয় অত্যাচারের কোনও যোগ নেই বলে দাবি বাংলাদেশি মিডিয়ার। এই আবহে সেই দেশের পুলিশ এবার নড়েচড়ে বসল। এই ঘটনায় স্টিফেন ত্রিপুরা (বয়স ৫০ বছর), মশৈনিয়া ত্রিপুরা (বয়স ৪৪ বছর), জোয়াকিম ত্রিপুরা (বয়স ৫২ বছর) ও মহম্মদ ইব্রাহিমকে (বয়স ৬৫ বছর) গ্রেফতার করা হয়েছে। (আরও পড়ুন: 'সীমান্তের কিছু জায়গায় সমস্যা...', BSF-BGB শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক নিয়ে জল্পনা)
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সচিাবালয়ের আগুনে তদন্ত কমিটি গঠন করেও বাতিল, তারপর...
রিপোর্টে বলা হয়েছে, পুলিশের প্রাক্তন আইজি বেনজির আহমেদের স্ত্রী নাকি এই এলাকায় জমি লিজ নিয়ে এই খ্রিস্টানদের উৎখাত করেছিলেন। পরে হাসিনার বিদায়ের পর সেই সব খ্রিস্টান পরিবার ফের নিজেদের জায়গায় ফিরে আসেন। এই আবহে তাদের ওপর হামলা হয় ২৪ ডিসেম্বর। এই আবহে প্রশাসন পদক্ষেপ করেছে। জানা গিয়েছে, ধৃত মহম্মদ ইব্রাহিম সেই জমি দেখভাল করত প্রাক্তন আইজি বেনজির আহমেদের হয়ে। এদিকে বেনজিরের নাম উঠে এসেছে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা ও এলাকার মৌজাপ্রধান দুর্যোধন ত্রিপুরার বক্তব্যেও। (আরও পড়ুন: ১৯৯১ সালের জুন, মনমোহন তখন ঘুমাচ্ছেন, সেই একটা ফোন কল বদলে দেয় ভারতকে...)
আরও পড়ুন: '১৫০ গ্রাম'? বীর্যই তো মেলেনি… আরজি কর কাণ্ডের নেপথ্যে এক জনই? সামনে নয়া রিপোর্ট
তবে তা সত্ত্বেও সেই দেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার ওপর প্রশ্নচিহ্ন বজায় থাকছে। এর আগে সম্প্রতি বাংলাদেশের একাধিক মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। গত ২১ ডিসেম্বর নাটোর সদর উপজেলার বড়হরিশপুরে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহাশ্মশানে হামলা চালায় ডাকাতরা। সেই ঘটনায় এক সেবায়েতকে খুন করা হয়েছিল। এর আগে ১৯ এবং ২০ ডিসেম্বর ময়মনসিংয়ের হালুয়াঘাট উপজেলায় দুটি মন্দিরে হামলা চালানো হয়েছিল। ২০ তারিখ শাকুয়াই ইউনিয়নের বন্দেরপাড়া মন্দিরের দুটি মূর্তি ভাঙচুর করেছে দুষ্কৃতীরা। এদিকে ১৯ তারিখ বিলডোরা ইউনিয়নের একটি মন্দিরে মূর্তি ভাঙচুর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হালুয়াঘাট থানার ওসি। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, তিনি জানিয়েছেন যে সেই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আলালউদ্দিন নামে এক যুবককে (২৭) গ্রেফতার করা হয়েছিল। (আরও পড়ুন: 'সারা বিশ্ব স্পষ্ট ভাবে শুনুক…', ৯১'র বাজেটে কী বলে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন মনমোহন?)
তারও আগে গত ১৭ ডিসেম্বর দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ঝাড়বাড়ি শ্মশান কালী মন্দিরের পাঁচটি মূর্তি ভাঙচুর করা হয়েছে। এদিকে সম্প্রতি ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে যে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে হিন্দু-সহ সংখ্যালঘুদের উপর ২২০০টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। সেই পরিসংখ্যান অবশ্য মানতে চায়নি বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের প্রেস উইংয়ের তরফে দাবি করা হয়েছে, অতিরঞ্জিত তথ্য পেশ করা হয়েছে। আর সংখ্য়ালঘুদের উপরে যে হামলার ঘটনা ঘটেছে, সেটা মূলত রাজনৈতিক। আর তারইমধ্যে পরপর হিন্দু মন্দিরে হামলা চালানোর ঘটনা সামনে আসছে বাংলাদেশ থেকে।