দেশের কেন্দ্রীয় বাজেটে পরবর্তী এক বছরের খরচ বাবদ যে প্রস্তাবগুলি পেশ করা হয়, সেটাই যদি চূড়ান্ত ধরে নেওয়া হয়, তাহলে বুঝতে হবে, এবছরও দেশে দশকভিত্তিক জনগণনা হবে না। কারণ, এবারের বাজেটে সংশ্লিষ্ট খাতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বরাদ্দ করেছেন মাত্র ৫৭৪.৮০ কোটি টাকা। আর এত কম টাকায় দেশজুড়ে জনগণনার কাজ চালানো অসম্ভব।উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে স্থির করা হয়েছিল, ২০২১ সালে জনগণনা বা আদমশুমারি করা হবে। তার জন্য খরচ ধরা হয়েছিল - ৮,৭৫৪.২৩ কোটি টাকা।একইসঙ্গে, ওই বৈঠকে স্থির করা হয়েছিল, দ্রুততার সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পঞ্জী (এনপিআর) আপডেট করা হবে। যার জন্য খরচ ধরা হয়েছিল আরও ৩,৯৪১.৩৫ কোটি টাকা।সেই অনুসারে স্থির করা হয়েছিল, ২০২০ সালের ১ এপ্রিল থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্য়ে দেশজুড়ে জাতীয় নাগরিকপঞ্জী আপডেট করার কাজ সেরে ফেলা হবে। কিন্তু, কোভিড অতিমারির জেরে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা সম্ভব হয়নি।তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত সেই কাজ হয়নি। স্থগিত হয়ে পড়ে রয়েছে জনগণনার কাজও। কারণ, কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে নতুন করে কোনও নির্ঘণ্ট প্রকাশ করা হয়নি।শনিবার নির্মলা সীতারামন যে কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করেছেন, তাতে গণনা, সমীক্ষা এবং আরজিআই (রেজিস্ট্রার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া) খাতে মাত্র ৫৭৪.৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, ২০২১-২২ আর্থিক বছরে এই খাতে বাজেট বরাদ্দ ধরা হয়েছিল ৩,৭৬৮ কোটি টাকা। এবং সেই বছরেই প্রাথমিকভাবে জনগণনা করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ - এই হিসাব দেখেই তথ্যাভিজ্ঞ মহল মনে করছে, এবছরও দীর্ঘ দিন ধরে পড়ে থাকা ওই দু'টি প্রক্রিয়া সারার কথা ভাবছে না কেন্দ্রীয় সরকার।সরকারের সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের বক্তব্য হল, কেন্দ্র যদি সত্যিই দশক ভিত্তিক জনগণনা এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জী আপডেট করার কাজ করাতে চায়, তাহলে তার জন্য সব মিলিয়ে খরচ হবে ১২,০০০ কোটি টাকারও বেশি।যখনই এই প্রক্রিয়া সারা হবে, সেটা হবে দেশের প্রথম ডিজিট্যাল জনগণনা। যার অধীনে নাগরিকরা নিজেরাই নিজেদের আদমশুমারির অধীনে নথিভুক্ত করার আবেদন জানাতে পারবেন।তবে, যে নাগরিকরা এই নয়া ব্যবস্থার সুবিধা নিতে চাইবেন়, তাঁদের জন্য জাতীয় নাগরিক পঞ্জীতে নাম তোলাটা বাধ্যতামূলক। তবেই তাঁরা নিজে থেকে জনগণনার ফর্ম পূরণ করতে পারবেন।কিন্তু, ঘটনা হল এই গোটা পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে হলে যে বিশেষ পোর্টাল থাকা দরকার, এখনও পর্যন্ত সেটাই লঞ্চ করা হয়নি। প্রসঙ্গত, নিজে থেকে জনগণনার ফর্ম পূরণ করতে হলে আবেদনকারীকে অবশ্যই নিজের আধার ও মোবাইল নম্বর জানাতে হবে।