মানহানির মামলায় হাজিরা না দেওয়ায় কংগ্রেস সাংসদ তথা লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীকে ২০০ টাকা জরিমানা করল উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের একটি আদালত।
'লাইভ ল ডট ইন'-এর প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে 'ভারত জোড়ো যাত্রা' কর্মসূচি চলাকালীন, মহারাষ্ট্রের আকোলায় রাহুলের করা কিছু মন্তব্য বিনায়ক দামোদর সাভারকরের প্রতি 'অবমাননাসূচক' ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। এবং সেই অভিযোগকে সামনে রেখেই লখনউয়ের ওই আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলাটি করা হয়।
সেই মামলায় 'অভিযুক্ত' রাহুল গান্ধিকে হাজিরা দিতে বলা হলেও তিনি আদালতের সেই নির্দেশ মানেননি। সেই কারণেই ওই আদালত তাঁকে ২০০ টাকা জরিমানা করে।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মামলার শুনানিতে তাঁকে যাতে হাজিরা দিতে না হয়, সেই আবেদন জানিয়ে ইতিমধ্যেই আদালতের কাছে আর্জি দাখিল করেছেন রাহুল। অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় বিচারক অলোক বর্মা তাঁর সেই আবেদন মঞ্জুর করেন এবং একইসঙ্গে আদালতে হাজিরা না দেওয়ার জন্য রাহুল গান্ধীর উপর ওই ২০০ টাকার আর্থিক জরিমানা আরোপ করেন।
গত বছরের ডিসেম্বর মাসে এই মামলায় রাহুল গান্ধীকে আদালত তলব করেছিল। অভিযোগ ছিল, একটি সাংবাদিক সম্মেলনে (ভারত জোড়ো যাত্রার মাঝেই) বক্তব্য রাখার সময় রাহুল গান্ধী সাভারকর সম্পর্কে এমন সব মন্তব্য করেছেন, যা বিদ্বেষমূলক ও সমাজের পক্ষে ক্ষতিকর। রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, সাভারকর ব্রিটিশদের চাকর ছিলেন এবং তিনি ব্রিটিশদের কাছ থেকে পেনশনও নিতেন।
রাহুলের এই মন্তব্যের প্রতিবাদ করে আদালতে মামলা রুজু করেন নৃপেন্দ্র পাণ্ডে নামে এক আইনজীবী। তার ভিত্তিতেই গত বছরের ডিসেম্বর মাসে রাহুল গান্ধীকে আদালতে হাজিরা দিতে বলে নির্দেশিকা পাস করা হয়।
প্রসঙ্গত, এর আগেও রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেছিলেন ওই আইনজীবী। কিন্তু, ২০২৩ সালের জুন মাসে তাঁর সেই মামলা আদালত খারিজ করে দেয়। কিন্তু, এরপর সেশন কোর্টে ফের রিভিশন পিটিশন দায়ের করেন নৃপেন্দ্র পাণ্ডে। তাঁর মতে, সাভারকর একজন জাতীয়তাবাদী ছিলেন এবং রাহুল গান্ধী তাঁকে অপমান করেছেন।
আইনজীবীর এই আবেদন আদালত মঞ্জুর করে এবং সংশ্লিষ্ট মামলাটি শুনানির জন্য এসিজেএম-এর এজলাসে পাঠানো হয়। অন্যদিকে, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে পুণের একটি বিশেষ এমপি/এমএলএ আদালতের কাছে রাহুল গান্ধী আবেদন করেন, যাতে এই শুনানি প্রক্রিয়াটি সামারি ট্রায়ালে রূপান্তরিত করা হয়। কারণ, তিনি সাভারকর সম্পর্কে যা মন্তব্য করেছেন, তা ঐতিহাসিক তথ্যভিত্তিক বক্তব্য ছিল।