GBS or Guillain-Barre Syndrome: পুণের পর এবার বাংলাতেও গিলেন বা সিনড্রোমের (উচ্চারণ ভেদে গুলেন বেরি সিনড্রোম) থাবা। শিকার হল দুই শিশু। ইন্সটিটিউট অব চাইল্ড হেলথে ভর্তি রয়েছে ৭ ও ৮ বছরের দুই শিশু। প্রথম দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের বাসিন্দা।তাকে ২৫ দিন আগে ভর্তি করানো হয় হাসপাতালে। অন্য জন উত্তর ২৪ পরগনার বাগুইহাটির বাসিন্দা। সে ১২ দিন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। বর্তমানে দুজনেই রয়েছেন চিকিৎসক প্রভাস প্রসূন গিরির অধীনে। তবে উদ্বেগের বিষয় এই যে দুজনকেই রাখা হয়েছে ভেন্টিলেশনে। ‘এই সময়’-র রিপোর্ট মোতাবেক দুজনের অবস্থাই বেশ সঙ্কটজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
আরও পড়ুন - Guillain-Barre Syndrome: ভাত, পনির যাবে না খাওয়া! ভারতের এই রাজ্যে ত্রাস ছড়াচ্ছে গুলেন বারে সিনড্রোম
গিলেন বা সিনড্রোম আদতে কী?
চিকিৎসাবিজ্ঞান জানাচ্ছে, এই রোগটি আদতে একটি অটোইমিউন ডিসঅর্ডার। অর্থাৎ শরীরের ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শরীরের বিরুদ্ধে কাজ করে। শরীরের উপর আক্রমণ করে। এক্ষেত্রে ইমিউনিটি স্নায়ুর উপর আক্রমণ করে। স্পাইনাল কর্ডের অ্যান্টিরিয়র হর্নসেলে আক্রমণ করে এই শরীরে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি (যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অংশ)। স্পাইনাল কর্ডের থেকে বেরিয়ে আসা স্নায়ুগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার পরবর্তী ধাপে পায়ের সমস্যা শুরু হয়। খেতে, চিবোতে সমস্যা হয়। চরম অবস্থায় ডায়াফ্রামে বা মধ্যচ্ছদায় আক্রমণ করে অ্যান্টিবডি। তখন ভেন্টিলেশনে দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে রোগীকে।
আরও পড়ুন - রাজ্যে ছড়িয়েছে গিলেন বা সিনড্রোম! কী এই অসুখ? কতটা ভয়ের? কীভাবে সাবধান হবেন
কেন দেখা যায় এই রোগ?
সম্প্রতি পুণেতে ১০০ জনেরও বেশি আক্রান্ত হয়েছে গিলেন বা সিনড্রোমে। মৃত্যু হয়েছে একজনের। রোগটি যদিও সংক্রমক নয়। কিন্তু চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন সাধারণত শরীরে কোনওকিছুর সংক্রমণ ছড়ালে একধরনের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। এই অ্যান্টিবডিই পরবর্তীকালে মেরুদণ্ডের স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে। বাঁধায় গিলেন বা সিনড্রোম। এই রোগে মৃত্যু খুব বিরল। কিন্তু অসম্ভব নয়। পুণেতে সংক্রমণের কারণ হিসেবে চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, খাবার বা জল। অল্প সিদ্ধ বা কাঁচা খাবার, অপরিশুদ্ধ জল থেকে ক্যাম্পিলোব্যাকটার জেজুনি ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। তার জন্য শরীরে তৈরি অ্যান্টিবডিই গিলে এবান বার কারণ। কলকাতায় কেন আক্রান্ত হল দুই শিশু? চিকিৎসকদের একাংশের মতে, গত বছর মাম্পসের প্রকোপ হয়েছিল। ঠিক তার পরেই এই সিনড্রোমে আক্রান্ত হয় অনেক শিশু।সম্ভবত, সেই কারণেই ফের এই বছর রোগটি হচ্ছে বলে অনুমান।