সিরিয়ালের সেটে বিয়ের তোড়জোড়। নায়ক-নায়িকার বিয়ের দৃশ্যের শ্যুটিং চলছে। আচমকাই ভিড়ের মধ্য়ে অদ্ভূত আচরণ করে চলেছেন বোরখা পরা এক মহিলা। নায়কের নজর এড়ায়নি সেই বোরখা পরা মহিলা। পরে জানা যায় তিনি আর কেউ নন, নায়কের গার্লফ্রেন্ড! না সিনেমার দৃশ্যপট নয়। এমন ঘটনা বাস্তবে ঘটেছে। আর যাঁরা এই কাহিনির হিরো আর হিরোইন তাঁরা বাংলা টেলিভিশনের অতি পরিচিত মুখ- রণিতা দাস (Ranieeta Dash) এবং সৌপ্তিক চক্রবর্তী (Souptick Chakraborty)।
‘ধন্যি মেয়ে’ সিরিয়ালের সেটে আলাপ দুজনের, সেখান থেকে শুরু এই প্রেমের গল্প। দেখতে দেখতে সম্পর্কের ১৩ বছর পার করে ফেলেছেন দুজনে। তাঁদের নিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে গসিপের শেষ নেই। মাঝে সম্পর্ক ভাঙার গুঞ্জনও শোনা গিয়েছিল, তবে না পরস্পরের সঙ্গে জুড়ে রয়েছেন তাঁরা। একবার দিদি নম্বর ১-এর মঞ্চে এসে নিজেদের ভালোবাসার অজানা কাহিনি শেয়ার করেছিলেন এই টেলি জুটি।
রণিতা ও সৌপ্তিক দুজনেরই অভিনয় কেরিয়ারের শুরুটা ‘ধন্যি মেয়ে’ দিয়ে। প্রথম দেখায় সৌপ্তিককে মোটে মনে ধরেনি রণিতার। অভিনেত্রী বললেন, ‘প্রথমদিন আমি বাড়ি গিয়ে ওর নামে খারাপ খারাপ কথা বলেছিলাম। কী বাজে অ্যাটিটিউড… কথা বলে না, নাক ব্যাঁকা, কমপ্লেকশনটাও ঠিক নয়… কিছুই ভালো নয়’। তবে সৌপ্তিকের এই আচরণের কারণ পরে জানতে পারেন রণিতা। তিন মাস ধরে নাকি বিভিন্ন মেয়েকে প্রতিদিন সৌপ্তিকের পাশে দাঁড় করিয়ে ছবি তুলছিল নির্মাতারা, তবে ‘ধন্যি মেয়ে’র খোঁজ মিলছিল না কিছুতেই। তাই ভারি বিরক্ত ছিলেন সৌপ্তিক। ‘বাচ্চা মেয়ে’ রণিতাকে দেখেও প্রথমদিন খুব বেশি আশা জাগেনি সৌপ্তিকের মনে। তবে তাঁকে শেষমেশ নায়িকা হিসাবে রণিতাকে চূড়ান্ত করায় দারুণ খুশি হন সৌপ্তিক।

সৌপ্তিক-রণিতার প্রেমের বয়স ১৩ বছর!
রণিতা জানান দুজনের ব্যক্তিত্ব একদম আলাদা। তাই প্রেম টিকবে না, এমন ধারণা ছিল তাঁর। যদিও সৌপ্তিক শুরু থেকেই জোর গলায় বলে এসেছেন, ‘অপোসিট অ্যাট্রাক্টস… সবটা জেল হয়ে যাবে’। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রণিতাকে প্রোপোজ করেছিলেন সৌপ্তিক, সেই শুরু।
সিরিয়ালের সেটে হামলা প্রসঙ্গে সৌপ্তিক বলেন, ‘আমার পরের প্রোজেক্টে যখন আমার বিয়ের দৃশ্যের শ্য়ুটিং হচ্ছে আমি হঠাৎ দেখি ভিড়ের মধ্যে বোরখা পরা এক মহিলা। পরে জানা যায়, ওটা আর কেউ নয় রণিতা ছিল।’ এ কথা শুনেই হেসে কূল পাচ্ছে না কেউ। এর মাঝেই রচনা প্রশ্ন করেন, ‘হ্যাঁ, রে তুই এতটা পসিসিভ?’ রণিতা একবাক্যে মেনে নেন। সৌপ্তিক পালটা বলেন, ‘এখন একটু কমেছে।’
সম্পর্কের ১৩ বছর পার করলেও বিয়ের এখনই কোনও পরিকল্পনা নেই দুজনের। বছর খানেক আগে নিজেদের প্রযোজনা সংস্থা খুলেছেন, সেই নিয়ে ব্যস্ত তাঁরা। কবে দুজনের চারহাত এক হয় তা জানতে আগ্রহী সকলেই।