তাঁর কাজের মধ্যে দিয়েই সৃষ্টিশীল মানুষের স্মৃতিতে অমর হয়ে থাকবেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। প্রিয় অভিনেতার প্রয়াণে এই মন্তব্য করেছেন খ্যাতিমান অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ।সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয় দক্ষতার তিনি বিশেষ গুণগ্রাহী, বহু দিন আগেই ঘোষণা করেছিলেন নাসিরুদ্দিন। রবিবার প্রবীণ অভিনেতার প্রয়াণে সে কথা ফের একবার মনে করিয়ে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অভিনেতা। স্মৃতিচারণায় তিনি জানিয়েছেন, সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় একের পর এক ছবিতে সৌমিত্রর অভিনয় তাঁকে বার বার মুগ্ধ করেছে। পাশাপাশি, সত্যজিতের প্রিয় নায়ক হিসেবে বিশ্বখ্যাত একাধিক ছবির অংশ হওয়ার জন্য নিভৃতে তাঁকে হিংসা করতেন বলেও স্বীকার করেছেন নাসির। আবার প্রিয় ‘সৌমিত্রদা’র সঙ্গে একত্রে অভিনয়ের ইচ্ছাও বেশ কিছুদিন পোষণ করেছিলেন বলে তিনি জানিয়েছেন। সেই ইচ্ছা পরবর্তীকালে পূর্ণতা পায় পরিচালক শৈবাল মিত্রের ছবি ‘আ হোলি কন্সপিরেসি’ ছবিতে ডাক পেয়ে। নাসির জানিয়েছেন, পরিচালকের থেকে স্ক্রিপ্ট পাওয়ার পরে তিনি ছবিটির বিষয়ে আগ্রহী হন। পরে মুম্বইয়ে শৈবালের সঙ্গে আলোচনার পরে তিনি অভিনয়ের পাকা কথা দেন। পরে যখন তিনি জানতে পারেন, সেই ছবিতে তাঁৎ সহ-অভিনেতা হিসেবে রয়েছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, তখন আনন্দিত হয়েছিলেন নাসির। খুশি হয়েছিলেন সৌমিত্রও।২০১৯ সালের ২ জুন কলকাতায় সেই ছবির শ্যুটিংয়ে ফ্লোরে দাঁড়িয়ে সৌমিত্রের অনাবিল বিদগ্ধতায় আরও একবার মুগ্ধ হন নাসিরুদ্দিন শাহ। তাঁর ও সৌমিত্রর মুখোমুখি মেকআপ রুম ছিল। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে টানা একমাস শ্যুটিং করেছিলেন সৌমিত্র-নাসির। গরম ও শারীরিক অসুস্থতার ধকলে দিনে ৩-৪ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে পারতেন না প্রবীণ অভিনেতা। একই কারণে ক্লান্ত শিল্পী মাঝে মাঝে তাঁর সহজাত অভিনয় প্রতিভার প্রতি সুবিচার করতেও অসুবিধায় পড়তেন বলে মনে করেছেন নাসিরুদ্দিন। খুব কাছে থেকে দেখার অভিজ্ঞতায় নাসিরুদ্দিন জানিয়েছেন, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয় প্রতিভা ছাড়াও অসামান্য রুচিজ্ঞান, বিদগ্ধ মনন, সুভদ্র ব্যবহার এবং সামগ্রিক আভিজাত্য অন্যদের তুলনায় বরাবর তাঁকে ভিন্ন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ইতিহাসও তাঁকে চিরকাল মনে রাখবে একই কারণে, বলছেন নাসিরুদ্দিন শাহ।