আট দশক দীর্ঘ তাঁর সঙ্গীত জীবন। নব্বইয়েও নট আউট আশা তাই! আগের মতোই প্রাণোচ্ছ্বল-সুরের সাগরে ভেসে চলা ‘তরুণ তুর্কি’ তিনি। বলিউড মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির অভিভাবক তথা লতা মঙ্গেশকের সুযোগ্য সহোদরের জীবন এবার মলাটবন্দি হল। তারকাখচিত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সামনে এল আশা ভোঁসলের জীবনী 'স্বরস্বামিনী আশা'। এই বই লঞ্চ ইভেন্টে উপস্থিত ছিলেন খোদ আশা তাই। আরও পড়ুন-দু-বার বিয়ে, ডিভোর্সে বিশ্বাসী নন প্রথম স্বামীর হাতে অত্যাচারিত আশা ভোঁসলে
এছাড়াও দেখা মিলল আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত, অভিনেতা জ্যাকি শ্রফ এবং গায়ক সোনু নিগমের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের। এই অনুষ্ঠানের একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
সেখানে দেখা গেল আত্মজীবনী প্রকাশের আগে নবতিপর গায়িকার পা গোলাপ জলে ধুয়িয়ে দিলেন সোনু নিগম। পা মুছিয়ে আশার পায়ে চুমু খান সোনু। অনুজ গায়কের এই কাণ্ড দেখে লজ্জায় লাল আশা, শুরু থেকেই অস্বস্তি প্রকাশ করছিলেন তিনি। কিন্তু ছাড়বার পাত্র নন সোনু। তাঁকে আর্শীবাদে ভরিয়ে দিলেন আশা ভোঁসলে।
আশা ভোঁসল ও সোনু নিগমের এই মন ছোঁয়া মুহূর্তকে গুরু-শিষ্য পরম্পরার আদর্শ নিদর্শন বলল নেটপাড়া। তবে ট্রোল পুলিশদের শান্তি নেই এক্ষেত্রেও। অনেকেই সোনুর এই কাণ্ডকে ‘নাটক’ বলে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি।
আশা ভোঁসলকে নিয়ে ৯০ জন লেখকের রচনার সংকলন এই জীবনী। যা তাঁর ভক্তদের জন্য নিঃসন্দেহে বড় প্রাপ্তি হতে চলেছে। এই বইয়ে আশার জীবনের নানান অজানা গল্প, তাঁর স্ট্রাগল, সঙ্গীতশিক্ষার নানান দিক উঠে আসবে। থাকবে বেশ কিছু বিরল ফটোগ্রাফও।
অভিনেতা জ্যাকি শ্রফও লঞ্চে উপস্থিত ছিলেন এবং আশা ভোঁসলের পা ছুঁয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছিলেন। এমনকি তিনি কিংবদন্তি গায়িকাকে একটি ফুলের টব উপহার দিয়েছিলেন।
দিদি লতার পদচিহ্ন অনুসরণ করে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে পা রেখেছিলেন আশা ভোঁসলে। নাট্য-সঙ্গীত জগতের একজন খ্যাতনামা শিল্পী দীনানাথ মঙ্গেশকরের সেজ মেয়ে আশা। লতা ও আশার মেজো বোন মীনা। আশার পরের বোন ঊষা আর সবার ছোট ভাই হৃদয়নাথ।
কিশোরী আশা বয়সে প্রায় দ্বিগুণ লতার সেক্রেটারির হাত ধরে পালিয়েছিলেন! ৩১ বছরের গণপত ভোঁসলের সঙ্গে ছোট বোন আশার অসম বয়সী বিয়ে মেনে নিতে পারেননি লতা। মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয় দুজনের।
উচ্চবংশীয় স্বামীর সঙ্গে আশার সংসার খুব বেশি সুখের হয়নি। তবে আশার মিউজিক্যাল কেরিয়ারের পিছনে গণপত ভোঁসলের অবদান অনস্বীকার্য। প্রথম সন্তান হওয়ার পরে আশা প্লে-ব্যাক ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন, তাঁর সুপারস্টার স্ত্রীকে গান গাইতে একপ্রকার বাধ্য করতেন গণপত।
১৯৬০ সালে আলাদা হন দুজনে। ৬ বছর পর মৃত্যু হয় গণপত ভোঁসলের। আইনি বিচ্ছেদ হয়নি তাঁদের। এরপর ১৯৮০ সালে দ্বিতীয় বিয়ে করেন কিংবদন্তি গায়িকা। বয়সে ছোট আরডি বর্মনকে বিয়ে করেছিলেন শিল্পী। বাঙালি বাড়ির পুত্রবধূ হয়েছিলেন। আরডি বর্মনেরও এটা ছিল দ্বিতীয় বিয়ে। একসঙ্গে কাজের সূত্রেই তাঁদের ঘনিষ্ঠতা। তবে শেষজীবনে আশার সঙ্গে থাকতেন না আরডি বর্মন।