ফের কি শাসকের রোষের মুখে শিল্প? এই প্রশ্নই ফের উস্কে দিলেন টলিগঞ্জের ‘গোয়েন্দা জুনিয়ার’ ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়। অভিনেতার একটি ফেসবুক পোস্ট ঘিরে এখন চাঞ্চল্য শুরু হয়েছে নানান মহলে। সেই বিস্ফোরক ভিডিয়ো পোস্ট ঋতব্রতর অভিযোগ শুক্রবার কল্যানীর নাট্য চর্চার কেন্দ্রে তাঁর নির্দেশনায় একটি নাটক মঞ্চস্থ হওয়ার কথা ছিল। নাটকের নাম ‘দেশের নামে’। তবে রাজনৈতিক এই নাটক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে প্রসাশনের চাপে। ঋতব্রত বিস্ফোরক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লেখেন, ‘যাঁরা আয়োজন করেছিলেন, আমন্ত্রণ করে নিয়ে যাচ্ছিলেন আমাদের, তাদের বলা হয় উপরমহল থেকে, এই নাটকটি করবেন না, আপনাদের ভালোর জন্যই বলছি!’ শান্তিলাল মুখোপাধ্যায় পুত্র আরও জানান, ‘দেশের মাটি’ নাটকে একটি সংলাপ রয়েছে- ‘মানুষের জন্য, দেশের জন্য কিছুই করেনি। যা করেছে নিজেদের জন্য।’ এই ডায়লগ ঘিরেই নাকি যত গণ্ডোগোল। তিনি আরও বলেন, নাটক মঞ্চস্থ হওয়ার আগে তাঁকে ফোন করে তৃণমূল এবং বিজেপি দুই শিবিরের নাম করেই নাটকের বিষয়বস্তু জানতে চাওয়া হয়েছিল। এরপরই ‘উপরমহল’-এর অভিযোগ এনে শো বাতিল করে দেওয়া হয়। যদিও আয়োজকদের মুখে অন্য সুর। তাঁরা বলছেন, এটা বন্ধ নয় স্থগিত হয়েছে। ভোটের তারিখ ঘোষিত হয়ে যাওয়ায় এখন কোনও নাটক করাই নাকি ঠিক হবে না, কারণ লাগু হয়ে গিয়েছে মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট- এমনটাই বক্তব্য তাঁদের। ঋতব্রত বলেন, ‘উপরমহল’ কে সেটা কেউ বলছে না। আর অনুমতি নেওয়া থাকলে সেটা তো আরও আগে থেকে জানানো উচিত ছিল। তবে যতই চমকানো কিংবা ধমকানো হোক না কেন, হার মানতে রাজি নন ঋতব্রত। তিনি জানান, 'আমাদের নাটকের বার্তা ঠিক জায়গায় পৌঁছেছে! ওরা ভয় পেয়েছে আমাদের। আমরা সব কলেজ স্টুডেন্ট, তাদের নাটককে ভয় পেয়ে বন্ধ করে দিলো। বললো 'রাজনৈতিক' নাটক করা যাবে না! এই জন্যই নাটক করি, ওদের একটু নাড়িয়ে দিলাম। যতদিন পারবো এটা করেই যাবো। এই ভয় দেখানো, ধমাকনোর উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে আমরা যেটা পারি করেই যাবো।'২০০২ সালে ‘ভুইঙ্কেল টুইঙ্কেল’ নাটকের শো বন্ধ করা হয়, ২০১১ সালে ‘পশু খামার’ নাটকের প্রদর্শন বন্ধ করে দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট পুলিশের তরফে। তৃণমূল জমানাতেও বহু নাটক ‘নাট্যমেলা’য় ডাক না পাওয়ায় বারবার আমরা-ওরার অভিযোগ উঠেছে। এবার কি সেই তালিকায় যোগ হল ঋতব্রতর ‘দেশের মাটি’? প্রশ্নটা রয়েই গেল।