মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের পর একসময় টলিপাড়ায় তাঁকে নিয়েই চর্চা কিছু কম ছিল না। তাঁর সৌন্দর্যে মুগ্ধ ছিলেন সিনেমাপ্রেমীরা। তবে তাঁর অভিনয় প্রতিভা যেমন প্রশংসিত হয়েছে, তেমনই সমালোচিত হয়েছে তাঁর বেপরোয়া জীবন। আর তাঁর সেই জীবনধারাই একসময় কাল হয়ে ওঠে। গত ২২ জুলাই, রবিবার ছিল মহুয়ার মৃত্যুবার্ষিকী। সেই দিনই মহুয়াকে নিয়ে মুখ খুলেছিলেন তাঁর কাছের বান্ধবী রত্না ঘোষাল।
সেদিন ইটিভি ভারতকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রত্না ঘোষাল বলেন, ‘মউ মদ খেতে খুব ভালোবাসতো…. গোলাকেও খাওয়াতো। আমি বলতাম, তোরা বাচ্চাটাকে তুই খাওয়াচ্ছিস কেন? বলত, ওর বাবা-মা খায় ও খাবে না? তখন কত বয়স হবে গোলার দু থেকে আড়াই বছর…’। রত্না ঘোষালের এমন মন্তব্যের পর বেজায় বিরক্ত মহুয়া অনুরাগীরা। এই ঘটনায় চটেছেন প্রযোজক রানা সরকারও। কারণ তিনিই এবার মহুয়ার জীবনীচিত্র তৈরি করছেন প্রযোজক।
অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, সত্যিই যে মহুয়া রায়চৌধুরী ২ বছকরের ছেলেকে মদ খাওয়াতেন তার প্রমাণ কি? আর রত্না ঘোষাল যে সত্যি বলছেন, তারও তো কোনও নিশ্চয়তা নেই! এধরনের কথা উঠার পর ফের মুখ খুললেন রত্না ঘোষাল। আনন্দবাজারকে এবার রত্না বলেন, ‘নিজের চোখে দেখা ঘটনা মিথ্যা বলতে যাব কেন!’ রত্নার কথায়, ‘আমার বাড়িতে বসে, আমার সঙ্গে মদ্যপান করত মৌ। অনেক সময় ওঁর স্বামী তমাল চক্রবর্তী ও গোলাও থাকত। ওর ছেলের বয়স তখন দু'বছর। আড্ডা দিতে দিতে মহুয়া অনেক সময়ই ছেলেকে চামচে করে মদ খাইয়েছে'।
এদিকে তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে সম্প্রতি প্রযোজক রানা সরকারের বিরক্ত প্রকাশের ঘটনা রত্না ঘোষাল জানান, তিনি কিন্তু রানার কাছে যাননি, রানাই তাঁর কাছে এসেছিলেন। তাঁর কথায় প্রযোজক যদি মনে করেন, তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ করবেন না, সেটা তাঁর বিষয়।
এমনকি মাত্র ২৭ বছরে মহুয়ার অপমৃত্যুর জন্য অভিনেত্রীকেই দায়ী করেছেন রত্না ঘোষাল। তাঁর কথায়, ‘অবশ্যই দায়ী। গোঁয়ার ছিল সে। রত্না বলেন, বাংলাদেশের ছবিতে নায়িকা হওয়ার সুযোগ পেয়ে সেটা নিয়েই নাকি মেতে উঠেছিলেন নায়িকা। মহুয়ার মাথায় কিছু ঢুুকলে সহজে সেটা আর বের হত না। তবে সেসময় ভিসা পাওয়া সহজ ছিল না। আর তাই ভিসা না পেয়েই নাকি মহুয়া আরও বিরক্ত, হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। তাই মদ্যপানের মাত্রাও নাকি বেড়ে যায়। নিজেকে সংযত রাখতে না পেরে রাগের মাথায় নাকি তিনি গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন। এদিকে মহুয়ার মৃত্যুর দু’দিন বাংলাদেশ থেকে চিঠি এসেছিল, ভিসার ব্যবস্থা হয়ে গিয়েছে জানিয়ে। তবে ততদিনে তো সব শেষ। মহুয়া রায়চৌধুরীর আর বাংলাদেশ যাওয়া হয়নি।