রাজনৈতিক ইস্যুতে বরাবরই সরব থাকেন গীতিকার তথা রিয়ালিটি শো-এর পরিচিত মুখ মনোজ মুনতাশির। এবার জেএনইউ-এর সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদী ‘তেরি মিট্টি’ খ্যাত লেখক। জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়ালে দিন চারেক আগেই নজরে এসেছে ‘ব্রাহ্মণ-বিরোধী’ স্লোগান। সেখানে স্পষ্ট লেখা হয়েছে, ‘ব্রাহ্মণরা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে চলে যাও’, কিংবা ‘ব্রাহ্মণ ভারত ছাড়ো।’ আবার কোথাউ হুঁশিয়ারি দিয়ে লাল অক্ষরে লেখা, ‘এখানে রক্ত ঝরবে।' জেএনইউ-এর মধ্যে এই জাতি-বিদ্বেষী স্লোগান নিয়ে রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। চলে ভাঙচুরও।
টুইটারে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে প্রতিবাদী মনোজ মুনতাশির (Manoj Muntashir) জানান, গতানুগতিকভাবে ধরে নেওয়া হয় ব্রাহ্মণ মানেই ‘লোভী এবং শয়তান’, এটা ঠিক নয়। তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের অংশ নন, একথা স্পষ্ট করে মনোজ মুনতাশির বলেন ব্রাহ্মণদের নিয়ে মানুষের ভুল ধারণা ভাঙতেই এই ভিডিয়ো।
জেএনইউ (JNU)- এর ঘটনায় ইতিমধ্যেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে এখনও পর্যন্ত কেউই ঘটনার দায় শিকার করেনি। মনোজকে ভিডিয়োতে বলতে শোনা যায়, কেমনভাবে বিদেশি শক্তির দ্বারা ভারতীয়বার বারবার ধ্বংসলীলার মুখে পড়েছে, এবং প্রত্যেকবার ভারত ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এই ঘুরে দাঁড়ানোর পিছনে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছে ব্রাহ্মণরা। তিনি মনে করান, মঙ্গল পাণ্ডে থেকে চাণক্য সকলেই ব্রাহ্মণ ছিলেন। রাজাকে তাঁর সিংহাসনে বসার যোগ্য করে তুলেছেন ব্রাহ্মণরা। তাঁরা কোনওদিন ক্ষমতার পিছনে ছোটেন না। মহর্ষি বৈশিষ্ঠ্য কোনওদিন অযোধ্যার সিংহাসন দখল করতে চাননি। পুরানে উল্লেখিত দধীচি মুনির আত্মত্যাগ থেকে রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের কথা উঠে আসে তাঁর ভিডিয়োয়। রাণী লক্ষ্মীবাই থেকে পেশোয়া দ্বিতীয় বাজিরাও-এর আত্মহত্যাগ-সবই স্মরণ করান লেখক। মনোজ মুনতাশিরের কথায়, ব্রাহ্মণরা সমাজে জাতিভেদ প্রথা নিয়ে এসেছে, এই ধারণা ভুল। তাঁরা বরাবরই ভারতের মাথা হিসাবে সম্মানিত, এবং আমাদের দায়িত্ব সেই মাথা যেন নত না হয়। ভিডিয়োয় নিজেকে গর্বিত ব্রাহ্মণ হিসাবে উল্লেখ করেন মনোজ।
এর আগেও জেএনইউ-তে দেশ-বিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছে। গেরুয়া শিবির তথা বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তরফে বারবার অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর দিকে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ জানিয়েছে, ব্রাহ্মণ সমাজের বিরুদ্ধে এই হুমকি বরদাস্ত করা হবে না। তবে বামপন্থী এজেন্ডা কোনওদিনই জেএনইউ-তে সফল হবে না, কারণ বিশ্ববিদ্যালয় এখন জাতীয়তাবাদ এবং সামাজিক ঐক্যের আর্দশে দীক্ষিত।