আরজি করের নির্যাতিতা তরুণীর বিচার চেয়ে শুরু থেকেই পথে নেমেছেন লগ্নজিতা চক্রবর্তী। সকল সংবেদনশীল মানুষের মতো লগ্নজিতাও এই ঘটনায় মর্মাহত প্রথমদিন থেকে, তবে যবে থেকে জানতে পারেন নির্যাতিতার সবচেয়ে পছন্দের গান ছিল তাঁরই গাওয়া ‘আমাদের স্বপ্নগুলো অল্প সময় ঘর পাতালো…’। তবে থেকে অদ্ভূতভাবে ওই চিকিৎসক তরুণীর সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন গায়িকা।
মহামিছিলে হেঁটেছেন, সোমবার রাতে লালবাজারে প্রতিবাদী জুনিয়র চিকিৎসকদের রাত দখলের জমায়েতেও সামিল হন লগ্নজিতা। সারা রাত লগ্নজিতা লালবাজারের বাইরে অবস্থান বিক্ষোভ করেছেন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। লোহার ব্যারিকেডের সামনে বসে পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগ চেয়েছেন।
সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে গায়িকা বলেন, সন্দীপের গ্রেফতারি সবে শুরু, বিচারের জন্য অনেকটা পথ হাঁটা বাকি। এবিপি আনন্দকে সঙ্গীতশিল্পী বলেন, ‘জাস্টিস ডিলেড ইজ জাস্টিস ডিনাইনড, এটা ঠিক কথা। কিন্তু আমরা দেখেছি বিচারের জন্য পরদিন কাকে কাঠগড়া তোলা হয়েছে। সেটা কী আমরা চাই, আমরা চাই না। আমরা অপেক্ষা করছি, আরও করব। কিন্তু সবটা যেন সুষ্ঠভাবে হয়’।
৯ অগাস্ট আরজি কর হাসপাতালে নির্যাতিতার দেহ উদ্ধারের রাত থেকে একদিনের জন্যও 'ছুটি' নেননি লগ্নজিতা, মিছিলে হেঁটেছেন, প্রতিবাদ জমায়েতে অংশ নিয়েছেন। ঠিক ছিল সোমবারটা একটু বিশ্রাম নেবেন। কিন্তু জুনিয়র ডাক্তারদের লালবাজারের সামনে বসে থাকতে দেখে নিজেকে আটকাতে পারেননি। আরও একটা রাত প্রতিবাদ করেই পথে কাটালেন।
জুনিয়র চিকিৎসকরা সিপি-র পদত্যাগ চাইতে হাজির হয়েছিল প্রতীকি শিরদাঁড়া ও একটি গোলাপ নিয়ে। এই ভাবনাকে সাধুবাদ জানান লগ্নজিতা। বলেন, ‘শিরদাঁড়ার ভাবনাটি দেখে আমি অভিভূত। ডাক্তাররা তো উজ্জ্বল মনের মানুষ, অনেক পড়াশোনা করলে তবেই কেউ ডাক্তার হতে পারে তাই না?’
গানে-কবিতায়-স্লোগানে মুখরিত লালবাজার চত্বর দেখল নতুন ভোর। লগ্নজিতা জানালেন,'মনে হচ্ছে সিস্টেমে একটা গণ্ডগোল আছে। পুরো সিস্টেমটা বাজে নয়। সব পুলিশ খারাপ নয়। তাহলে একটা সিস্টেম চলে কী করে'।
সোমবার ফিয়ার্স লেনে আন্দোলনকারীদের আটকে দেয় কলকাতা পুলিশ। প্রায় ২২ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার , লোহার ব্যারিকেড সরায় পুলিশ। লালবাজারে পৌঁছে গিয়েছে জুনিয়র ডাক্তারদের মিছিল। জুনিয়র ডাক্তারদের ২২ জনের প্রতিনিধি দল কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের সঙ্গে দেখা করবেন তাঁরা। বাকিরা বাইরে অবস্থান করবেন। দাবি না মানলে অবস্থান বিক্ষোভ উঠবে না, ইঙ্গিত তেমনটাই।