বিতর্কের কালো মেঘে জড়িয়ে রয়েছেন জাক্তার-অভিনেতা কিঞ্জল নন্দ। আরজি কর আন্দোলনে সক্রিয় প্রতিবাদের মুখ হিসেবে সামনে আসার পর থেকেই, নানা ধরনের কথা তাঁকে নিয়ে। এমনকী, ব্যক্তিগত আক্রমণের শিকার হন কিঞ্জলের স্ত্রী নম্রতাও। যদিও ট্রোলকে বিশেষ পাত্তা দিতে রাজি নন দম্পতি। শুক্রবার ডাক্তার বউয়ের সঙ্গে একটি রোম্যান্টিক ফোটো ভাগ করে নিলেন কিঞ্জল।
ছবিতে দেখা গেল পিছনে পড়ন্ত সূর্য। আকাশের রং কমলা-হলুদ। কিঞ্জল বা নম্রতা কারও মুখই স্পষ্ট নয়। নম্রতার চোখ আটকে স্বামীর দিকেই। ছবির ক্যাপশনে কিঞ্জল লিখেছেন, ‘কিছু না, এমনিই’। নানাবিধ বিতর্কে জড়িয়ে, ট্রোলকে দূরে রাখতে মাসখানেক আগেই কমেন্ট সেকশন রেস্ট্রিকটেড করে দিয়েছেন তিনি।
দেখুন সেই পোস্ট-
আরজি কর আন্দোলনে যোগ দেওয়ায় কিঞ্জলকে আক্রমণ করা হয়েছিল তাঁর শ্বশুরকে নিয়ে। অর্থাৎ নম্রতার বাবা। ২০১৪ সালে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া একটি যৌন হেনস্থার মামলা টেনে এনে কিঞ্জলকে বলা হয়েছিল, 'আরজি কর কাণ্ডের নির্যাতিতা বা নিজের শ্বশুরকে বেছে নিক কিঞ্জল।'
নভেম্বর মাসে ‘জুনিয়র ডাক্তার অ্যাসোসিয়েশন’-এর পক্ষ থেকে কিঞ্জলের শ্বশুরের বিরুদ্ধে হওয়া ১০ বছর পুরনো মামলা সামনে আনা হয়। সেই সময় নিজের বাবার উপর আসা এই আঘাত রীতিমতো বিপর্যস্ত করেছিল নম্রতাকে। তিনি তা নিয়ে পোস্টও করেন সোশ্যালে। তারপর থেকেই কার্যত সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা এড়িয়ে চলছেন তিনি। যদিও কিঞ্জলের সোশ্যাল মিডিয়া ওয়ালে মাঝেমাঝেই আসে পরিবার।
‘জুনিয়র ডাক্তার অ্যাসোসিয়েশন’ অ্যাসোসিয়েশনের দাবি ছিল, ২০১৪ সালে কিঞ্জলের শ্বশুর প্রসন্ন কুমার ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ দায়ের হয়েছিল পুলিশে। সেই মামলার শুনানি এখনও চলছে। ডঃ প্রসন্ন কুমার ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছিল গড়িয়াহাট থানায়। পুলিশি রিপোর্টে দাবি করা হয়, ১২৩এ রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ের এনজি মেডিকেয়ারের চিকিৎসাকেন্দ্রে ঘটেছিল সেই যৌন হেনস্থার ঘটনা। শুধু তাই নয়, ‘জুনিয়র ডাক্তার অ্যাসোসিয়েশন’ দাবি করে প্রসন্ন কুমার নাকি ব্যাপারটা ধামাচাপা দেওয়ারও চেষ্টা করেন। জানানো হয়, ২০১৫ সালের ৮ অগস্ট পুলিশ চার্জশিট জমা দেয় অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। সেই মামলার শুনানি এখনও চলছে।
বাবার নামে ওঠা কুৎসায় সেইসয় ফেসবুকে মুখ খোলেন নম্রতা। একটি লম্বা পোস্ট লেখেন বাবাকে নিয়ে। ‘প্রত্যেকটি মেয়ের কাছে তার বাবা হিরো। আমার ছোটবেলায় মনে হত আমার বাবাকে পুরো উত্তমকুমার এর মতো দেখতে..গোঁফটা না থাকলেই হুবহু.. যত বড় হলাম বাবাকে দেখে বুঝলাম আসলে হিরোরা এরকমই হয় হয়তো।’, লিখেছিলেন তিনি।
‘ছোটবেলায় খুব রাগ হত। জন্মদিন, বিয়ে বাড়ি, পুজো, বেড়াতে যাওয়া সব জায়গায় বাবা লেট। এখন নিজে ডাক্তার হয়ে বুঝি কেন। আমার বিয়ের দিনও রোগী দেখেছেন উনি। ….অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই টা শিখেছি ওনার থেকেই, আর সেটা করে যাওয়ার চেষ্টা করব আজীবন। তখন এত লবি টবি বুঝতাম না কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে এত বছর বাবা লড়াই করেছেন তাদের নাম গুলোই এখন উঠে এসেছে নানান দুর্নীতিতে। তখন থেকেই অনেক বার নানা ভাবে malign করা, harrass করা বা বাবার খ্যাতিকে কালিমালিপ্ত করার নানান প্রচেষ্টা হয়েছে। কিন্তু বাবাকে কোনো দিন বিচলিত হতে দেখিনি। বলতেন “কাজ করতে গেলে এসব হবেই, তাই বলে কি কাজ করব না? তাহলে দায়িত্ব কে নেবে?" সেই ঠিক কাজ গুলো করার খেসারত আজও দিচ্ছো.. আমাদের লড়াইয়ের জন্যও তোমাকে এই বয়সেও হেনস্থা হতে হচ্ছে আবার তাদের থেকে যারা তোমার ডিগ্রি গুলো হয়তো উচ্চারণই করতে পারবে না।’, আরও লিখেছিলেন নম্রতা।