পাখির চোখ ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচন। তার আগেই কি সময়ের দাবি মেনে বদলে যাচ্ছে সিপিআইএমের সংস্কৃতি? গণসঙ্গীতকে সরিয়ে জায়গা করে নিচ্ছে বাণিজ্যিক গান। আর এটা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে খোদ বাম দলের অন্দরে। অবাক হচ্ছে। সাধারণ কর্মী থেকে নাগরিকরাও।
এতদিন মূলত সিপিএমের কোনও অনুষ্ঠান, প্রচার, ইত্যাদিতে গণসঙ্গীতের ব্যবহার হতেই দেখা গিয়েছে মূলত। এখন সেখানে জুড়ে গিয়েছে হিন্দি ছবির গানও। বর্তমানে গোটা রাজ্য জুড়ে চলছে বামেদের ইনসাফ যাত্রা। আর সেই ইনসাফ যাত্রার বিভিন্ন ক্লিপের সঙ্গে হিন্দি ছবির গান জুড়ে সেটাকে রিল বানিয়ে পোস্ট করা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কখনও অরিজিৎ সিং, কখনও কেকে কখনও আবার প্রীতমের গান ব্যবহার করা হচ্ছে ভিডিয়ো প্রচারের জন্য। আর এটা দেখেই অনেকেই অবাক হয়েছেন। কট্টরপন্থীরা আবার বিরক্তও হয়েছেন বটে। তাঁদের মতে পার্টির ধারায় বদল আনলে চলবে না। বামেদের সংস্কৃতি মেনে একমাত্র গণসঙ্গীতকেই ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু যুবদের মতে হিন্দি গানের ব্যবহারেও তো ক্ষতি নেই। উদ্দেশ্য মানুষের কাছে পৌঁছানো। ফলে এটা নিয়ে যে দলে মধ্যেই একটা বিভেদ তৈরি হয়েছে সেটা স্পষ্ট।
আরও পড়ুন: রণবীরের জুতো চেটে কি মহিলাদের অপমান করলেন? জানুন কী সাফাই দিলেন তৃপ্তি
আরও পড়ুন: আর্চিসের প্রিমিয়ারে একসঙ্গে, তারপরই ঐশ্বর্যকে ইনস্টাগ্রামে আনফলো করলেন অমিতাভ?
ডিওয়াইএফআইয়ের উদ্যোগে চলছে এই ইনসাফ যাত্রা। এটি শেষ হবে বিগ্রেড সমাবেশ দিয়ে। সেটার বিভিন্ন ক্লিপে কখনও ৮৩ ছবির লেহরা দো গান ব্যবহৃত হয়েছে, কখনও আবার অন্য কোনও গান। ২০২১ এর বিধানসভায় শূন্য আসন পাওয়ার পর বামেদের লক্ষ্য যে মানুষের সমর্থন ফিরে পাওয়া সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর সেটা করতেই, প্রাসঙ্গিকতা ফিরে পেতে এই নতুন গানকে তাঁরা বেছে নিয়েছেন বলেই অনেকে মনে করছেন।
সংবাদ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা হান্নান মোল্লা এই প্রসঙ্গে বলেন, 'সিপিএমের যেটা ঐতিহ্য, সংস্কৃতি সেটা কেন ভুলে যাব? একই সঙ্গে যুব সমাজের কাছে গান আর সুস্থ সংস্কৃতির মাধ্যমে তাঁদের মতো করে আমাদের ভাবনা তুলে ধরব। খালি গণসঙ্গীত গাইতে হবে এমনটা তো কোথাও ঠিক হয়নি।' প্রায় একই মত যুবনেতা কৌস্তভ চট্টোপাধ্যায়ের। তাঁর কথায়, 'গানের মাধ্যমেও মানুষের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। গণসঙ্গীত যেমন আছে, হেমাঙ্গ বিশ্বাস, সলিল চৌধুরীদের গান যেমন আছে আবার আজকের সময়ের ছেলেমেয়েদের জন্য নতুন যুগের গানও আছে। এতে অসুবিধা তো কিছু নেই।'
আরও পড়ুন: 'অনির্দিষ্ট পথচলা শুরু', শেষের পথে ‘রাঙা বউ’, অন্তিম কলটাইম পেয়ে আবেগঘন হয়ে পড়লেন শ্রুতি
তবে দলের একাংশ যতই হিন্দি গানের ব্যবহারকে সমর্থন করুন না কেন কট্টরপন্থীরা কিন্তু বিষয়টাকে মোটেই ভালো চোখে দেখছেন না। তাঁদের মতে, 'নতুনকে বরণ করতে গিয়ে যেন গণসঙ্গীতের ঘরানাকে ভুলে যাওয়া না হয়। কমিউনিস্ট আন্দোলনের একটা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আছে সেটা মনে রাখতে হবে।'