ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে তিনি কাটিয়েছেন ফেলেছেন প্রায় ১৪-১৫বছর। এর মাঝে এসেছে নানা বদল। প্রথমে ঋতুপর্ণ ঘোষের 'গানের ওপারে'-র দামিনী হয়ে নজরকাড়ে মেয়েটি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে 'বয়েই গেল', 'মন নিয়ে কাছাকাছি', 'আসা যাওয়ার মাঝে', 'তখন কুয়াশা ছিল'-সহ নানা মেগা ও ছবির হাত ধরে হয়ে উঠেছেন একজন বিচক্ষণ অভিনেত্রী। সম্প্রতি তাঁকে দেখা যাচ্ছিল 'কার কাছে কই মনের কথা'-তে। কিন্তু কিছুদিন আগেই শেষ হয়েছে ধারাবাহিকের শ্যুটিং, তাই এখন তিনি পাকা 'রাঁধুনি'। সবটা নিয়ে তাঁর পথ চলাটা ঠিক কেমন ছিল? সে কথাই হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন অভিনেত্রী বাসবদত্তা চট্টোপাধ্যায়।
অনেকদিন পর সঞ্চালনা কেমন লাগছে?
বাসবদত্তা: আমার ক্যারিয়ার শুরুই হয়েছিল সঞ্চালনা দিয়ে, তবে কুকারি শোতে এই প্রথমবার। অনেকটা দিন গ্যাপের পর আবার 'রাঁধুনি'র সঞ্চালিকা হয়ে বেশ ভালো লাগছে।
ইন্ডাস্ট্রিতে কান পাতলে শোনা যায়, আপনি নাকি খুব বেছে কাজ করেন, সেখানে 'রাঁধুনি'কে বেছে নেওয়া কারণ ?
বাসবদত্তা: আমি বেছে কাজ করতে অবশ্যই পছন্দ করি। আর 'রাঁধুনি'-কে বেছে নেওয়ার প্রধান কারণ হল, আমি রান্না করতে ভীষণ ভালোবাসি। পাশাপাশি প্রথমবার এরকম একটা কুকারি শো হোস্ট করছি। অন্যরকম একটা অভিজ্ঞতা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বন্ধু হয় নায়িকারাও! ছুটি কাটালেন আশিতিপর আশা, হেলেন, ওয়াহিদা, ৩ জনে গেলেন কোথায়?
তার মানে বাসবদত্তা নিশ্চয়ই খুব পাকা রাঁধুনি?
বাসবদত্তা: তা জানি না, তবে সব রকম খাবার মোটামুটি রান্না করার চেষ্টা করি। চাইনিজ, থেকে স্যান্ডউইচ, বাঙালি রান্না যেমন লাউ চিংড়ি, শুক্তো, চিংড়ি মাছের মালাইকারি, চিংড়ি মাছের ভাপা সব রকমই রান্না করতে পারি। বাঙালি রান্নাগুলো করতে বেশি ভালোবাসি।
রান্না তো অনেক কিছু করেন, কিন্তু আপনি কী খাদ্য রসিক নাকি ডায়েট ফ্রিক?
বাসবদত্তা: আমি ব্যালেন্স ডায়েটে বিশ্বাসী। শরীরে প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট সব দরকার। তাই কোনও কিছু ভীষণ খেতে ইচ্ছে করছে, কিন্তু না খেয়ে আত্মাকে কষ্ট দিয়ে, আমি ডায়েটে আছি বলতে পারব না। আমি সব রকম খাবার খাই। রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফুচকাও খাই, আবার আমার খুব পছন্দের খাবার পেস্ট্রি সেটাও খাই। তবে সেটা রোজ নয়। যদি একদিন খুব বেশি খাওয়া হয়ে যায়, তাহলে পরের দিন বাড়ির হালকা খাবার খেয়ে সেটাকে ব্যালেন্স করেনি। আমার মনে হয়, একটা নির্দিষ্ট সময় ছাড়া এই ধরনের খাবার আমরা খেতে পারি। একটা ব্যালেন্স ডায়েটে থেকে, যদি ওয়ার্ক আউট করা যায় তাহলেই পুরো বিষয়টাকে ব্যালেন্স হয়ে যায়।
আচ্ছা, বাসদত্তা মানেই অনেকের কাছে বাকি অভিনেত্রীদের থেকে আলাদা, তারপর আবার ঋতুপর্ণ ঘোষের সঙ্গে প্রথম কাজ, এই সব কি কখনও কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলেছে?
বাসবদত্তা: দর্শকের ভাবনা চিন্তার ওপর নির্মাতাদের ভাবনা-চিন্তা তো নির্ভর করে না। কিন্তু অনেকেই আমাকে ভালো মা, ভালো মেয়ে বা তথাকথিত ভালো চরিত্র দেখতে পছন্দ করেন। তাই পরিচালকদের কাছ থেকে অনেক সময়ই আমাকে শুনতে হয়েছে যে আমার মতো চরিত্র পেলে দেওয়া হবে। আমার মতো চরিত্রটা ঠিক কী? আর একটা ধরনের চরিত্রের মধ্যে যদি অভিনেতাকে বেঁধে দেওয়া হয়, সেটা অনেক সময়ই ভালো লাগে না তাঁর করতে। সেটা করতে করতে একঘেয়ে বোধ হয়। তাই একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সব রকম চরিত্র করতেই ইচ্ছা করে। তাই কোথাও গিয়ে যখন কেউ ভেবে নেন যে, আমাকে একই ধরনের চরিত্র দেখা যাবে, সেই ভাবনাটাতে আমার একটু আপত্তি রয়েছে।
তাছাড়া, আমি অন্যরকম পোশাক পরলেও দর্শকরা সবসময় বলে থাকেন, যে আমাকে শাড়িতেই ভালো লাগে। কিন্তু আমাকে কোনটায় ভালো লাগবে বা কোনটায় ভালো লাগবে না, সেটা অন্যরা ঠিক করে দেবেন এটা তো হতেই পারে না। আমার সিদ্ধান্তটা আমি নেব।
আরও পড়ুন: ‘এটা খুব মিষ্টি…’ এপি ধিলোনের সঙ্গে প্রেম করার প্রসঙ্গে মুখ খুললেন বনিতা
তবে আপনি মেগাতে যে কাজগুলো করেছেন সেইগুলো তো বেশ ভিন্ন স্বাদের…
বাসবদত্তা: হ্যাঁ, 'বয়েই গেল', 'মন নিয়ে কাছাকাছি', 'গানের ওপারে' এগুলোর জন্য দর্শকরা এখনও আমাকে ভালোবাসেন, পছন্দও করেন।
এই ধরনের কাজ আবার করে করতে ইচ্ছে করে না, বিশেষ করে লিড?
বাসবদত্তা: আমি লিডের অফার অনেক পাই, কিন্তু সময় দিতে পারি না। ওই ২৫-২৬ দিনের যে কনট্র্য়াক থাকে সেটা আমার পক্ষে একটু সমস্যার। কারণ মেগাতে লিড করলে আর অন্য জায়গায় কাজ করতে পারব না। আমাকে কেউ কোথাও বেঁধে দেবে সেটা আমার জন্য বেশ সমস্যার। কোনও একটা কাজ হয়তো আমার করতে খুব ইচ্ছে করছে, কিন্তু মেগার নির্মাতারা আমাকে ছাড়তে পারছেন না। কোথাও কাজ করতে গেলে এই যে চ্যানেলের, নির্মাতাদের অনুমতি নিতে হবে, সেটা আমি একদম পছন্দ করি না। তাই ফ্রি থাকা ভালো, আমি ফ্রিল্যান্স করছি, আমার যখন যেটা ইচ্ছা হবে করব। এক্ষেত্রে আমি আমার নিজের বস। আর তাছাড়া এখন বাড়িতে আমার সন্তান আছে, ফলে আমার মনে হয় বাড়িতেও সময় দেওয়াটা খুব দরকার।
কিন্তু লিড না করে সোজা নেতাজির মা, টাইপ কাস্ট হয়ে যাওয়ার ভয় কাজ করেনি?
বাসবদত্তা: না, তখন আমার সেটা মনে হয়নি। নেতাজির মায়ের চরিত্র করতে পারাটা আমার কাছে খুব চ্যালেঞ্জিং মনে হয়েছিল। এই কারণ, ওখানে আমাকে বলা হয়েছিল, নেতাজির তিনটি বয়সেই আমাকে থাকতে হবে। একদম ছোট যখন সুভাষ তখন, তারপর যুবক সুভাষ এবং তারপর নেতাজি যখন হবেন তখন। ফলে সবটা শুনে আমার কাছে খুবই চ্যালেঞ্জিং মনে হয়েছিল। আমি যেটা না বা যে বয়সের না, সেই বয়সের কাজ করতে পারব। একটা কাজের মধ্যে তিনটে ধরণ আনতে পারব সেটা আমাকে কাজটা করতে খুব উৎসাহ দিয়েছিল।
কিন্তু সমস্যা হয়েছে তারপরে। এরপর থেকে যত রকমের মনীষীর গল্প আসছিল, সমস্ত রকম চরিত্রের মায়ের জন্য আমার কাছে অফার আসা শুরু হয়েছিল। তার ফলে পরবর্তীকালে আমার একটু অসুবিধা হয়। কিন্তু নেতাজির মায়ের চরিত্র করে আমার কোনও অনুশোচনা নেই, এটা আমার ভীষণ পছন্দের একটা চরিত্র। তবে এই টাইপ কাস্টের বিষয়টা না সবার ক্ষেত্রেই হয়। যদি একবার কোনও একধরনের চরিত্র করে কেউ জনপ্রিয় হয়ে যান, তাঁর কাছে সেই ধরণের চরিত্রই বারবার আসতে থাকে। এক্ষেত্রে আরও একটা মুশকিলের ব্যাপার হল। আমাদের জেনারেশনের যারা, তাঁরা এখন বড্ড বেশি মায়ের চরিত্র করছেন।
কিন্তু সেটা কি বাকিদের কাজে প্রভাব ফেলছে?
বাসবদত্তা: অবশ্যই, আমাদের সমবয়সী বা আমাদের থেকে মাত্র কয়েক বছরের বড় তাঁরা মায়ের চরিত্র করতে রাজি হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই চ্যানেল বা প্রোডাকশন হাউস বাকিদের কাছেও সেই ধরণের চরিত্র নিয়ে আসছেন। আর আমরা তা করতে না চাইলে তখন বলা হচ্ছে, অমুক যদি করতে পারছেন, তুমি কেন করবে না? কিন্তু তাঁরা এটা বুঝতে পারছেন না, যে দুটো ব্যক্তি আলাদা। তাঁদের ইচ্ছেটা একরকম হবে না। আর এর জন্য সমস্যায় পড়ছে আমাদের পরের জেনারেশনকে। তাঁরা দাদু-দিদার চরিত্রও করতে পারছেন না, আবার বাবা কিংবা মা হতে পারছেন না। ফলে অনেকেই কাজ না পেয়ে বসে থাকতে হচ্ছে। আর লিড বলতে তো এখন সব অল্প বয়সী মুখ।
হ্যাঁ, কিন্তু লিডের ক্ষেত্রে কেন এত অল্প বয়সীদের ভিড়?
বাসবদত্তা: এখন অল্প বয়সে ছেলে মেয়েদের নেওয়া হচ্ছে তার প্রধান কারণ হল এঁদের যা বলা হবে, এঁরা সেটা করবেন। একটা নতুন ছেলে-মেয়ে তো মুখের উপর কিছু বলতে পারবেন না। আমরা যারা ১৪ থেকে ১৫ বছর কাজ করেছি ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁদের সবটা চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। পাশাপাশি কিছু কিছু মানুষের সঙ্গে আমাদের একটা সুন্দর সম্পর্কও তৈরি হয়েছে, ফলে তাঁরা সবটাতে আমাদের জোরও করতে পারবেন না। আর তাছাড়া নতুন ছেলে-মেয়েরা কম টাকায় কাজ করবে। আমি আমার অনেক সিনিয়ারদের থেকে শুনি, তাঁরা যে পারিশ্রমিকটা দাবি করেন, সেই টাকাটা প্রোডাকশন হাউজ থেকে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেওয়া সম্ভব হবে না, বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। ফলে তাঁরা কাজ পাচ্ছেন না। আসলে সবই কস্টকাটিং, লকডাউনের পর থেকে এটা আরও বেশি করে হচ্ছে। শুরুর সময় তাঁরা যে টাকায় কাজ করেছেন, সেই টাকা না পাওয়ায় তাঁরা রাজি হচ্ছে না। আর তাঁদের পরিবর্তে আমাদের সমবয়সীরা মা বা বাবা হয়ে যাচ্ছেন।
কিন্তু আপনি তো 'কার কাছে কই মনের কথা'-এ অন্যরকম চরিত্রে কাজ করলেন...
বাসবদত্তা: হ্যাঁ, কিন্তু 'কার কাছে কই মনের কথা'-এ আমায় যে চরিত্র দেখা গিয়েছে সেটা অনেকেরই ভালো লাগেনি। বলা ভালো অনেকেই এটা পছন্দ করেনি। কিন্তু এক্ষেত্রে তাঁদের মনে হওয়ায় কোনও দোষ দেখি না, এটা খুবই স্বাভাবিক। কারণ গল্পটা যেভাবে শুরু হয়েছিল, বলা হয়েছিল পাঁচটা মেয়ের আলাদা আলাদা গল্প দেখানো হবে। কিন্তু সেটা আর করা হয়নি। যারা আমার কাজ দেখতে পছন্দ করেন, তাঁদের কাছে এটা অবশ্যই একটা আক্ষেপের জায়গা। অনেকেই বলেছেন 'তুমি কেন এই চরিত্রটা করলে?'
আসলে আমি যখন কাজটা নিয়েছিলাম তখন তো অন্যরকম শুনেছিলাম। এইরকম হবে জানলে হয়তো কাজটা নিতাম না আমি। কিন্তু একবার নিয়ে যখন ফেলেছি, তাই মাঝপথে ছেড়ে দিয়ে কাউকে সমস্যার মধ্যে ফেলতে চাইনি। পাশাপাশি আমার কাজে পরিবেশটাও খুব ভালো ছিল। সঠিক সময় কাজ শেষ হয়ে যেত। শনি-রবিবার ছুটি থাকত। শুরুতে তো এই ছুটি পাওয়া বা ১৪ ঘণ্টা কাজ এইসব ছিলই না।
হ্যাঁ, অনেকটা তো বদল এসেছে ইন্ডাস্ট্রিতে... কিন্তু সেটা কি ভালো না খারাপ, আপনার কী মনে হয়?
বাসবদত্তা: ইন্ডাস্ট্রিতে ভালো-খারাপ দু'টো দিক থেকেই পরিবর্তন এসেছে। ভালো দিক বলতে আমি যে সময় কাজ করতাম সে সময় ২০-২২ ঘন্টা কাজ করতে হত, কোনও ছুটি নেই, ভীষণ কষ্ট করেছি। কিন্তু এখন যারা লিড করছেন তাঁদের সেই সমস্যাটার মুখোমুখি হতে হয় না। আবার আমাদের সময় কাজের পরিবেশটা খুব ভালো ছিল, খুব আন্তরিক ছিল। বসে কথা বলা, গল্প করা, কাজের ফাঁকে আড্ডা মারা সব হত। এখন সবাই মোবাইলে ব্যস্ত। কেউ কারও সঙ্গে কথা বলছে না। আমাদের পরের জেনারেশনের মধ্যে কাজের প্রতি ভালোবাসাটার থেকে কটা শো করলাম, কটা ফিতে কাটলাম, কটা গাড়ি কিনে নিলাম, কটা পার্টি করলাম এটাই আসল ব্যাপার।
সিনিয়রদের সামনেই তাঁরা সিগারেট খাচ্ছেন। কোনও সংযম নেই, বড়দের প্রতি শ্রদ্ধা নেই। আমরা এটা করব কখনও ভাবতেই পারি না। আমরা শ্যুটিংয়ে গিয়ে স্ক্রিপ্ট পড়তাম। এঁরা এসে আগে ট্রেন্ডিং গান খোঁজে, রিল করার জন্য। কাউকে কিছু জিজ্ঞাসা করে না, তাঁদের ভাবটাই এমন, যে 'আমি সব জানি'। পরিচালকদের কথাও শোনেন না এঁরা। তবে হ্যাঁ সকলে যে এরকম সেটা বলছি না।
তাই কি এত আত্মহননের প্রবণতা বেড়েছে?
বাসবদত্তা: তা তো খানিকটা বটেই। একটা সিরিয়াল করে প্রচুর অ্যাড পাচ্ছে, প্রচুর শো পাচ্ছে, ফিতে কাটছে ফলে হঠাৎ অনেকটা আয় হচ্ছে। তখন হাতে এত টাকা পেয়ে বড় বাড়ি, গাড়ি কিনে ফেলছেন তাঁরা। আর তার উপর এখন তো সব স্যোশাল মিডিয়ায় দেখানো চাই। আমি একটা গল্প শুনেছিলাম যে 'পরশপাথর' করার সময়, যখন তুলসী চক্রবর্তীর জামার মাপ নেওয়া হয়েছিল, তখন সেটা ওঁর কাছে একটা বিরাট বড় ব্যাপার ছিল। কিন্তু এখন এই ছোট ছোট বিষয়গুলো কোনও ব্যাপারই না। এখন তো সবাই ব্রান্ডের জামা-কাপড় পরছেন। আগেকার যেসব অভিনেতারা কাজ করতেন তাঁরা কত টাকাই বা পারিশ্রমিক পেয়েছেন, কিন্তু এখন যারা নতুন আসছে তাঁরা অনেকটা একসঙ্গে পেয়ে যাচ্ছেন। এখন সবটাই প্রদর্শন করতে হবে। এই জায়গাটা কাজ যে সব সমায় থাকবে সেটা তো নয়। ফলে নিজের ব্র্যান্ড ধরে রাখার জন্য তাঁদের ঘাড়ে একটা বিরাট মাপের বোঝা চাপছে, সেখান থেকেই ডিপ্রেশন হচ্ছে। আর তারপর চূড়ান্ত পদক্ষেপ।
তাহলে আপনি স্যোশাল মিডিয়াকেই মূলত দায়ি করছেন?
বাসবদত্তা: না না, আমি নিজে যেটা ব্যবহার করি সেটাকে তো খারাপ বলতে পারি না। কিন্তু কীভাবে ব্যবহার করছি সেটাই আসল। আমার নতুন কী কাজ আসছে, আমি সেটা নিয়ে আপডেট দিলাম। এর মাধ্যামে আমি আমরা কাজ নিয়ে আরও বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে পারি। যেটা খুবই পজেটিভ একটা দিক। কিন্তু এর খারাপ দিকও আছে। ও সে বললাম প্রদর্শন প্রভাব সেটা নিজেরো ক্ষতি করে পাশাপাশি অন্যেরও। আসলে সবটাই না নিজের উপর নির্ভর করছে। আমি কীভাবে ব্যবহার করব। কোনও জিনিসের খারাপ দিকটা নেব, না ভালোটা সেটা আমার উপর নির্ভর করছে। আমি কোনও বিষয় নিয়ে কিছু মতামত রাখতে পারি স্যোশাল মিডিয়ায়, কিন্তু কটা ফ্ল্যাট কিনলাম, কটা বাড়ি করে ফেললাম সেগুলো মনে হয় দেখানো দরকার নেই। তবে এগুলো দেখিয়ে অনেকেই অবশ্য ফলোয়ার বৃদ্ধি করেন।
কিন্তু এখন শোনা যাচ্ছে ফলোয়ার দেখেই কাজ দেওয়া হচ্ছে?
বাসবদত্তা: ফলোয়ার দেখে যারা কাজ দিচ্ছেন তাঁদের বোধহয় একটু ভাবনা চিন্তা করা দরকার। কারণ ফলোয়ার বেশি থাকা মানে যে সে খুব ভালো অভিনেতা বা অভিনেত্রী এমনটা কিন্তু নয়। এমন অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রী আছেন, যারা বহুদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় ছিলেন না। অপু দা মানে শ্বাশত চট্টোপাধ্যায় তিনি তো বহুদিন পর্যন্ত স্যোশাল মিডিয়ায় ছিলেন না। কিন্তু তিনি কত বড় অভিনেতা তা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না।