গত বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে চূড়ান্ত ব্যস্ত ছিলেন তিনি। ভোটের প্রচারে দিন-রাত এক করে দৌড়াদৌড়ি করছিলেন। কিন্তু এ বার ছবিটা একেবারেই আলাদা। সব কিছু থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন দীপেন্দু বিশ্বাস। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে গেলেও ওখানকার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছেন না। তাই আপাতত রাজনীতি থেকে ছুটি নিয়ে পরিবারের সঙ্গেই সময় কাটাচ্ছেন দীপেন্দু।গত বার বসিরহাট দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী হয়েছিলেন ভারতের প্রাক্তন ফুটবলার দীপেন্দু। তবে খুব সামান্য ব্যবধানে তিনি জিতেছিলেন। এ বার তাঁর জায়গায় তৃণমূল প্রার্থী করেছে চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এই খবর জানতে পেরেই একেবারে ভেঙে পড়েন দীপেন্দু। ক্ষোভে, অভিমানে তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দেন। কিন্তু গেরুয়া বাহিনীতে যোগ দিলেও সে ভাবে মানিয়ে নিতে পারছেন না। হয়তো তাঁর আদর্শগত একটা বিরোধ থেকে যাচ্ছে বিজেপি-র সঙ্গে। সে কারণেই সম্ভবত নিজেকে আপাতত রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন। দীপেন্দু বলছিলেন, ‘আমি এখন বাড়িতেই রয়েছি। কিছুই ভাল লাগছে না। বিজেপি-তে যোগ দিয়েছি ঠিকই। তবে সে ভাবে সক্রিয় নই।’এর পরই একরাশ অভিমান বেরিয়ে এল দীপেন্দুর গলায়, ‘আমার একটা বিষয়ে খুব কষ্ট হয়েছে। আমাকে যে তৃণমূল প্রার্থী করবে না, সেটা আগে থেকে একবার জানালে কী ক্ষতি হত? আমি প্রার্থী না হলেও নির্বাচনের সব কাজ করে দিতাম। কিন্তু আমাকে আগে থেকে কিছু না জানিয়ে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হল। সেই সময়ে আমি জানতে পারলাম, আমাকে প্রার্থী করা হচ্ছে না।’ কথাগুলো নাগাড়ে বলছিলেন বিদায়ী বিধায়ক। কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর আবার বললেন, ‘তৃণমূলের বিরুদ্ধে আমার কোনও অভিযোগ নেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরও কোনও রাগ নেই। আমি ওঁকে খুব সম্মানও করি। তবে যন্ত্রণার জায়গাটা ভুলি কী করে!’ফুটবল মরসুম কার্যত শেষ। রাজনীতি থেকেও নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন। এখন কী ভাবে সময় কাটাচ্ছেন দীপেন্দু? তাঁর ভবিষ্যত পরিকল্পনাই বা কী? বিদায়ী বিধায়ক বলছিলেন, ‘এখনও কিছুই ভাবিনি। তবে ফুটবল মাঠে তো ফিরবই। ওই একটা জায়গা আমাকে শান্তি দেয়। এমন নয় যে, রাজনীতি করার সময়ে ফুটবলের থেকে দূরে ছিলাম। প্রত্যক্ষ ভাবেই ফুটবল মাঠের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছিলাম। তবে রাজনীতি করা নিয়ে এই মুহূর্তে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে চাই না। আপাতত রাজনীতি থেকে নিজেকে দূরে সরিয়েই রাখছি।’