বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন। অথচ, এখনও মহারাষ্ট্রের সবক'টি কেন্দ্রে আসন ভাগাভাগি পাকা করতে পারল না রাজ্যের ক্ষমতাসীন মহাযুতি জোট। সমস্যা মেটাতে বৃহস্পতিবার দিনভর ম্য়ারাথন বৈঠক চলে।
সেই বঠকে ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ স্বয়ং। দীর্ঘ আলোচনার পর বাদবাকি কেন্দ্রগুলি নিয়ে মতবিরোধ দূর হলেও, মূলত মুম্বই ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের ১২টি আসন নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো সম্ভব হয়নি।
এই প্রেক্ষাপটে যাতে জোটসঙ্গীরা কেউ বিদ্রোহ না করে এবং যাতে ওই কেন্দ্রগুলিতে তাদের মধ্য়ে কোনও 'বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই' না হয়, তা নিশ্চিত করতে একটি যৌথ অঙ্গীকার করেছে মহাযুতি জোটের সদস্যরা।
বিজেপি, শিবসেনা (শিন্ডে) এবং এনসিপি (অজিত পাওয়ার) স্থির করেছে, আপাতত ওই ১২টি আসনে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না। অন্তত মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ পর্যন্ত তারা এই সিদ্ধান্ত মেনে চলবে।
যদি কোনও জোটসঙ্গী এই ঘটনায় নিজেকে বা নিজেদের প্রতারিত বলে মনে করতে শুরু করে, তারা যাতে শেষ মুহূর্তে জোট ছেড়ে বেরিয়ে না যায়, তার জন্যই এমন কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
সূত্রের খবর, সব মিলিয়ে এবারের মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ১৫৫টিরও বেশি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে। শিন্ডে সেনা লড়তে পারে ৮০ থেকে ৮৫টি কেন্দ্রে। যদিও তারা এর থেকে বেশি আসনে লড়তে চেয়েছিল। বাকি আসনগুলিতে প্রার্থী দেবে অজিত পাওয়ারের এনসিপি।
উল্লেখ্য, মহাযুতি জোট এখনও পর্যন্ত ১৮২টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। তার মধ্যে বিজেপি ৯৯ টি, শিন্ডে সেনা ৪৫টি এবং অজিত পাওয়ারের এনসিপি ৩৮টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। যদিও, এই জোট এখনও ১০৬টি আসনে কোনও প্রার্থী ঘোষণা করেনি।
উল্লেখ্য, গত রবিবার মহারাষ্ট্রের ৯৯টি বিধানসভা আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে বিজেপি। তারপরই বিরোধ প্রকাশ্যে আসে। শিন্ডে সেনার তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, কল্যাণ পূর্ব, থানে, নবি মুম্বই এবং মুরবাদ - অন্তত এই চারটি কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী দেওয়া নিয়ে তাদের আপত্তি রয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে বিরোধ মেটাতে আসরে নামতে হয় অমিত শাহকে। সূত্রের দাবি, দলের রাজ্য নেতৃত্ব তাঁকে আশ্বস্ত করেছে যে তারা জোটধর্ম মেনে চলবে। এবং যে সূত্রের ভিত্তিতে আসন ভাগাভাগির ব্যবস্থা করা হয়েছে, সেই সূত্রও মেনে চলা হবে। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে বিদ্রোহীদের কোনওভাবেই সমর্থন করা হবে না।
এখানে আরও একটি বিষয় লক্ষ্যণীয়। তা হল, অজিত গোষ্ঠীর এনসিপি নেতা নবাব মালিককে সম্ভবত প্রার্থী করা হবে না। কারণ, বিজেপি ও শিন্ডে সেনার তাঁকে নিয়ে অস্বস্তি রয়েছে। সূত্রের দাবি, নবাব মালিকের বিরুদ্ধে যেহেতু বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে, তাই তিনি ভোটে দাঁড়ান, এটা বিজেপি বা শিন্ডে সেনা চায় না।
যদিও, তাঁর মেয়ে সানা মালিককে এনসিপি প্রার্থী করতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। এবং এখনও পর্যন্ত যে প্রার্থীতালিকা মহাযুতি জোট ঘোষণা করেছে, তাতে কোনও পরিবর্তন করা হবে না।