আজ, শনিবার দেশে শুরু হয়ে গিয়েছে ষষ্ঠ দফার নির্বাচন। উৎসবের মেজাজে ভোট চলছে সর্বত্র। বাংলায় যেমন ভোট চলছে তেমন অন্য রাজ্যে ভোট চলছে। এই আবহের মধ্যেই আজ পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, কাঁথি, মেদিনীপুর, তমলুক, ঘাটাল এবং বিষ্ণুপুরে ভোট শুরু হয়ে গিয়েছে। নির্বাচনের সকালে বিষ্ণুপুরের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সুজাতা মণ্ডলের নিশানায় সৌমিত্র খাঁ। প্রাক্তন স্বামীকে খুনি বলে তোপ দাগলেন তিনি। এমনকী এবার ভোটাররা সৌমিত্রকে বিদায় জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেও প্রাক্তন স্বামীকে খোঁচা দিলেন সুজাতা। আজ সকালে একটি ভিডিয়ো বার্তা দেন সৌমিত্র খাঁ। তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্দেশে বিজেপি প্রার্থী বলেন, ‘সত্যি মাইরি! তিন লাখ ভোটে হারাব, তিন লাখ। লিখে রাখ।’ যদিও তা যাচাই করে দেখেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা ডিজিটাল। যদিও তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।
এদিকে নির্বাচনী প্রচার পর্ব থেকেই বাকযুদ্ধে জড়াতে দেখা গিয়েছে বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের যুযুধান দুই প্রার্থীকে। আজ, শনিবার ভোট–ষষ্ঠীর সকালেও সেই ধারা অব্যাহত থাকল। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁয়ের বিরুদ্ধে লড়ছেন তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল। কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপে ভোট হলেও বিষ্ণুপুরের কিছু এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে গোলমালের খবর মেলে। সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপও করে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সৌমিত্র খাঁ বলেন, ‘সারেশ্বর বাবা খুব জাগ্রত। তাই বাবার কাছে পুজো দিয়ে গেলাম। এবার তৃণমূলের সব রিগিং বন্ধ হয়ে যাবে।’ পাল্টা হেসে সুজাতার কথায়, ‘এবারে আর এসব করে লাভ হবে না। ওকে কেউ বাঁচাতে পারবে না। কারণ, বিষ্ণুপুরের মানুষ এবারে ওকে বিদায় জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে।’
আরও পড়ুন: বুথের ভিতরে রণংদেহি মেজাজে জুন মালিয়া, বিজেপির এজেন্ট–জওয়ানের বিরুদ্ধে অভিযোগ
অন্যদিকে নির্বাচনের সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়েই প্রাক্তন স্বামীকে নিশানা করলেন সুজাতা। সৌমিত্র খাঁয়ের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুললেন তিনি। সুজাতা দাবি করেন, ‘এখনকার স্ত্রীর প্রথম স্বামীর মৃত্যুতে হাত রয়েছে সৌমিত্রর। ওই মহিলার কারণেই সৌমিত্রর সঙ্গে আমার সংসার ভেঙেছে। তবে জয় নিয়ে আমি নিশ্চিত। বিজেপি প্রার্থীকে আমি প্রতিপক্ষ হিসেবে মনেই করছি না। কারণ, গত ১০ বছরে সাংসদ হিসেবে উনি এলাকায় কোনও কাজই করেননি।’ সুজাতার হয়ে যখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রচারে এসেছিলেন তখন এই তথ্যই তুলে ধরেছিলেন। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, সুজাতা যে কি করে ওরকম একটা ছেলেকে বিয়ে করল জানি না।
এছাড়া সৌমিত্রর দাবি, বিষ্ণুপুরের মানুষ এবারেও তাঁকেই সমর্থন করবেন। গতবারের লোকসভা নির্বাচনে সৌমিত্রর হয়ে ভোট প্রচার করেছিলেন সুজাতা। তারপরে অবশ্য বিষ্ণুপুরের রাজনীতিতে অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। বিবাহবিচ্ছেদ ঘটেছে সৌমিত্র এবং সুজাতার। বাড়ির চার–দেওয়াল ছেড়ে রাজনীতির আঙিনায় পা রেখেছেন সুজাতা। এই নির্বাচন হয়ে উঠেছে চ্যালেঞ্জের। এখন একে অপরের বিরোধী। ভোটযুদ্ধে সমানে সমানে টক্কর দিচ্ছেন। গড় কি ধরে রাখতে পারবেন সৌমিত্র? প্রাক্তন স্বামীকে কি পরাজিত করতে পারবেন সুজাতা? উত্তর মিলবে ৪ জুন।