ইডেন গার্ডেনে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে কলকাতা নাইট রাইডার্স ওপেন করতে পাঠিয়েছিল সুনীল নারিনকে। সেই ম্যাচে নারিন ব্যর্থ হন। ৪ বলে ২ রান করে সাজঘরে ফিরে গিয়েছিলেন তিনি। যে কারণে সেই ম্যাচের পর কেকেআর মেন্টর গৌতম গম্ভীর সোশ্যাল মিডিয়ায় সমর্থকদের তীব্র ক্ষোভের মুখে পড়েন। তবে গম্ভীর কিন্তু নিজের পরিকল্পনা থেকে সরেননি। বিশ্বাস রেখেছিলেন নারিনের উপর। আর তাই শুক্রবারও তিনি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেও ওপেন করতে পাঠান নারিনকে। আর তার পরের ঘটনা তো কারও অজানা নয়। চিন্নাস্বামীতে একেবারে ঝড় তুলে কেকেআর-এর জয়ের ভিত তৈরি করে দেন নারিন। মাত্র ২২ বলে ৪৭ রানের দুরন্ত একটি ইনিংস খেলেন তিনি। ব্যাট হাতেই নিন্দুকদের যোগ্য জবাব দেন নারিন। মান রাখেন গম্ভীরের।
২০১৭ সালে বিগ ব্যাশ লিগ এবং ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে শীর্ষস্থানীয় অর্ডারে পিঞ্চ-হিটার হিসেবে নারিনের সাফল্যের পরে, কেকেআর-এর তৎকালীন অধিনায়ক গম্ভীর আইপিএল-এও একই ধারা অনুসরণ করেছিলেন। সেই সময়ে নারিন ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়েও ওপেন করতেন। এই কৌশলটি প্রাথমিক বছরগুলিতে কেকেআরকে তাৎক্ষণিক সাফল্য দিয়েছিল। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নারিনকে ফের ব্যাটিং লাইন-আপের টেল এন্ডারে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে T20 WC-এর জন্য ভারতের দল ঘোষণা করবে BCCI- রিপোর্ট
গম্ভীর মেন্টর হিসেবে কেকেআর-এ ফিরতেই নারিন আবারও ব্যাটিং লাইন আপের ওপেনার হিসেবে উন্নীত হন। এবং ওপেনার হিসেবে দলের প্রথম ম্যাচে সাফল্য না পেলেও, দ্বিতীয় ম্যাচে তিনি ঝোড়ো ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরাও নির্বাচিত হন। এবং তাঁর গড়ে দেওয়া ভিতে দাঁড়িয়েই ১৮৩ রান তাড়া করতে নেমে কেকেআর সহজেই ১৯ বল বাকি থাকতে ৭ উইকেটে জয় ছিনিয়ে নেয়। নারিনের ৪৭ রানের ইনিংস সাজানো ছিল পাঁচটি ছয় এবং ২টি চারে।
নারিন যে ছক্কা হাঁকাতে ওস্তাদ, তা কারও অজানা নয়। চিন্নাস্বামীতে তাঁর পাঁচটি ছয়ের মধ্যে রয়েছে পাওয়ারপ্লে-র শেষ ওভারে যশ দয়ালের তৃতীয় এবং চতুর্থ বলে পরপর দু'টি ছক্কা। আর নারিনের এই লম্বা দু'টি ছক্কা দেখে গম্ভীর ডাগআউটে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েছিলেন। তিনি উচ্ছ্বাস চেপে রাখতে না পারেননি। নিজের চেয়ারে বসেই শান্ত স্বভাবের গম্ভীর আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন। প্রায় চেয়ার ছেড়ে লাফিয়ে ওঠার উপক্রম হয়েছিল। নারিন প্রথম ছয়টি মেরেছিলেন ডিপ মিডউইকেটের উপর দিয়ে এবং দ্বিতীয়টি হাঁকিয়েছিলেন বোলারের মাথার উপর দিয়ে।
ম্যাচের পরে কেকেআর অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার স্বীকার করেন যে, নারিনকে ওপেনার হিসেবে খেলানো নিয়ে ম্যানেজমেন্টের কিছুটা দ্বিধা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁকে দিয়েই ওপেন করানো হয়। আর যার সুফল হাতেনাতে পেয়েছে কেকেআর। ক্যারিবিয়ান তারকার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে শ্রেয়স বলেছেন, ‘নারিন যখন ওপেন করতে নামে, তখন ওর একটাই কাজ, বল মাঠের বাইরে পাঠানো। ওকে দিয়ে ওপেন করাব কিনা, ম্যাচের আগে তা নিয়ে দোলাচল ছিল, কিন্তু ও অসাধারণ পারফরম্যান্স করেছে। দারুণ খেলেছে।’