শ্রেয়স আইয়ার এবারে দশম আইপিএলে খেলছেন, তবে তিনি কখনও সেঞ্চুরি পাননি। আইপিএল ২০২৫-এ পঞ্জাবের প্রথম ম্যাচে শ্রেয়সের কাছে শতরান করার সুযোগ চলে এসেছিল। আইপিএলের মেগা নিলামে ২৬.৭৫ কোটি টাকায় শ্রেয়সকে দলে নেওয়ার পর পাঞ্জাব কিংসের অধিনায়ক হিসাবেও তাঁকে বেছে নেওয়া হয়। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে গুজরাট টাইটানসের বিপক্ষে ১৭তম ওভার শেষে ৩৮ বলে ৯০ রানে ছিলেন শ্রেয়স। ১১৭ ম্যাচ খেলার পর তার প্রথম আইপিএল সেঞ্চুরির দেখা পেতে অধির আগ্রহে বসেছিলেন দর্শকরা। পরের তিন ওভারে অবশ্য শ্রেয়স সুযোগ পান মাত্র চার বল খেলার। শেষ পর্যন্ত ৯৭ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। যদিও তাতে লাভবান হয় পঞ্জাব, কারণ শশাঙ্ক সিং নেমে তাঁদের স্কোরকে অনেকটাই এগিয়ে দেন।
১৬ বলে ৪৪ রান করেন শশাঙ্ক
বয়সভিত্তিক দলে একসঙ্গে খেলায় শ্রেয়স আইয়ার জানতেন, শশাঙ্কের হিট করার ক্ষমতা সম্পর্কে। তাই পঞ্জাব অধিনায়ক তাকে স্পষ্টভাবে বলেছিলেন যে তার সেঞ্চুরি নিয়ে চিন্তা না করে বাউন্ডারির সন্ধানে সর্বাত্মক চেষ্টা করতে। ম্যাচের ১৭তম ওভারে তিনটি ছক্কা হাঁকানোর পর শ্রেয়স শশাঙ্ককে বলে দিয়েছিলেন, নিজের নরম্যাল খেলাই যেন তিনি খেলেন। এরপর শশাঙ্ক সিং নিজের ইনিংসে ছয়টি মার এবং দুটি ছয় মেরে ১৬ বলে ৪৪ রানে অপরাজিত থাকেন।
ইনিংস বিরতিতে ভারতের প্রাক্তন প্রধান কোচ তথা ধারাভাষ্যকার রবি শাস্ত্রী শশাঙ্ককে জিজ্ঞাসা করেন তাঁর অধিনায়ক শ্রেয়সের ৯৭ রানে আটকে যাওয়া নিয়ে। এরপর শশাঙ্কা বলেন, ' সত্যি কথা বলতে, প্রথম বল থেকেই শ্রেয়স আমাকে বলেছিল, ‘শ্রেয়স বলেছিল, আমার সেঞ্চুরির কথা ভেবো না। শুধু নিজের শটগুলো খেলার চেষ্টা করো এবং ভালোভাবে ইনিংস শেষ করো। ও যেভাবে আমায় আমার স্বাধীন ক্রিকেট খেলতে দিয়েছে, তাতে ওকে কুর্নিশ।’ পঞ্জাব শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটে ২৪৩ রান করে, গুজরাট ১১ রান দূরে থেমে যায়।
শ্রেয়সকে নিয়ে কোহলিকে কটাক্ষ?
শশাঙ্কের উত্তর শুনে রবি শাস্ত্রী এরপর দলের প্রয়োজনের দিকে তাকানোর চেয়ে ব্যক্তিগত মাইলফলককে বেশি মূল্য দেওয়া ক্রিকেটারদের কটাক্ষ করেন। শ্রেয়সের মনোভাবের প্রশংসা করে শাস্ত্রী বলেন, ‘দলগত খেলায় এটাই উচিত’। শাস্ত্রী কারও নাম নেননি, তবে তাঁর ইঙ্গিত ছিল বিরাট কোহলির ব্যক্তিগত মাইলফলক অর্জনের প্রচেষ্টার দিকে, মনে করছেন অনেকে।
Indian Cricket- দলীপ ট্রফিতে ফিরছে পুরনো ফরম্যাট! ৪ দল নয়, এবছর খেলবে ৬ দলই! আসর বসছে বেঙ্গালুরুতে
বিরাটের ভিডিয়ো ভাইরাল
আইপিএল ২০১৯-এ আরসিবি বনাম কেকেআর ম্যাচে দুই বল বাকি ছিল, তখন কোহলি ৯৬ রানে ব্যাটিং করছিলেন। মার্কাস স্টইনিস একটা ডবল রান নেওয়ার চেষ্টা করলেও কোহলি এক রান নিয়ে নিজের কাছে স্ট্রাইক রাখেন। পরের বলেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শতরান করেন বিরাট, যদিও শ্রেয়সের নিঃস্বার্থ ক্রিকেটের পর বিরাটকে নিয়েই সমালোচনা করছেন অনেকে।
প্রসঙ্গত বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ম্যাচেও নিজের সেঞ্চুরিকে প্রাধান্য দেওয়ার জন্য সমালোচিত হয়েছিলেন কোহলি। যদিও কষ্ট করে দলকে কঠিন পরিস্থিতি থেকে টেনে তুলে কোনও ক্রিকেটার যদি শতরান করার চেষ্টাও করেন, তাহলেও সেটাকে স্রেফ স্বার্থপরতা বলা যায় না বলেই মনে করছে ক্রিকেটমহলের একাংশ।