রবিচন্দ্রন অশ্বিনের অবসর গ্রহণের মধ্যে দিয়ে কী শুরু হয়ে গেল ভারতীয় ক্রিকেটের পরিবর্তনের অধ্যায়? অন্তত তেমনটাই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে ক্রিকবাজের এক রিপোর্ট থেকে। আগামী দিনে হয়তো আরও কিছু সিনিয়র ক্রিকেটার অশ্বিনের দেখানো পথে হাঁটতে পারেন, জায়গা করে দিতে পারেন তরুণ প্রজন্মকে। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া সফরে রয়েছে ভরতীয় ক্রিকেট দল। সেখানে ৫ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ৩টি টেস্ট সম্পন্ন হয়েছে। এই সিরিজই শেষ সিরিজ হতে পারে সিনিয়র ক্রিকেটারদের জন্য। বুধবার ব্রিসবেনে তৃতীয় টেস্টটি ড্র ঘোষণা হওয়ার পর অধিনায়ক রোহিত শর্মার সঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে নিজের অবসরের কথা ঘোষণা করেছিলেন অশ্বিন।
অশ্বিন সেই সব কোর ক্রিকেটারদের মধ্যে একজন যারা ২০১২-২০১৩ সালে একে একে রাহুল দ্রাবিড়, সচিন তেন্ডুলকরের মতো ক্রিকেটারদের অবসর গ্রহণের পর দলের নিয়মিত সদস্য হয়ে উঠেছিলেন। সময়ের নিয়মে আজ তাঁরা সিনিয়র ক্রিকেটার। এবার সময় এসেছে সচিন-রাহুলদের মতো তাঁদের অবসর গ্রহণের। এই কোর টিম ইন্ডিয়ার তালিকায় রয়েছে রোহিত শর্মা, অজিঙ্কা রাহানে, চেতেশ্বর পূজারা, বিরাট কোহলি এবং রবীন্দ্র জাদেজা। যদিও ক্যাপ্টেন রোহিত বারবার সবাইকে মনে করিয়ে দিয়েছেন যে যারা পারফর্ম করছে তাদের জন্য ‘দরজা খোলা’। তবে অশ্বিনের অবসর নিয়ে অনেক রকমের কথা ঘুরে বেড়াচ্ছে। কোনও রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, অশ্বিনের অবসর গ্রহণের বিষয়টা আগে থেকেই জানত টিম ম্যানেজমেন্ট। আবার এক জায়গায় এও দাবি করা হয়েছে, ভারতের এই অলরাউন্ডারের অবসর গ্রহণের বিষয়টা নিয়ে অবাক BCCI এবং নির্বাচক কমিটি।
ক্রিকবাজের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘এই সিদ্ধান্তের কতটা পরিকল্পিত, স্বেচ্ছায় বা সূক্ষ্মভাবে নেওয়া হয়েছে তা নির্ধারণ করা কঠিন, তবে সম্ভবত ২০২৫ সালের গ্রীষ্মে ইংল্যান্ডে ভারতের পরবর্তী টেস্ট সিরিজ শুরু হওয়ার আগে ভারতীয় দল শীঘ্রই একটি পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে… যে কেউ খোলাখুলিভাবে স্বীকার করবে যে এটি একটি ধাক্কা ছিল, তবে এবার প্রথম নয়, এরকম ঘটনা ২০০৮ সালেও ঘটেছিল, যখন বেশ কয়েকজন সিনিয়র খেলোয়াড় একসঙ্গে অবসর নিয়েছিল। সেই সময় ম্যানেজমেন্টের তরফে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বার্তা পাঠানো হয়েছিল বলে মনে করা হয়, যাতে তারা একটা পরিবর্তনের মঞ্চ তৈরি করে।’
নির্বাচকদের তরফে অশ্বিনের প্রতি কোনও চাপ সৃষ্টি করা হয়নি, তবে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাঁর আশানুরূপ ফল না হওয়ায় ড্রেসিংরুমে চর্চা শুরু হয়েছিল। অশ্বিন নিজেও ইঙ্গিত বুঝতে পেরেছিলেন। সবচেয়ে বড় ইঙ্গিত পাওয়া যায় যখন প্রথম টেস্টে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী বোলারকে বেঞ্চ করা হয়। এর আগেও বিদেশে বেঞ্চ হয়েছিলেন অশ্বিন, এমনকী এটাই বিগত ৫-৬ বছর ধরে নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তবে তার জায়গায় অন্য কোনও অফস্পিনার খেলেননি। অশ্বিনের ক্ষেত্রে, কোথায়, কখন, বা এমনকি তাকে কোনও বার্তা পাঠানো হয়েছিল কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। একজন ক্রিকেটার যিনি অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন, তাঁর পক্ষে প্রথম টেস্টে দল থেকে বাদ হওয়ার বিষয়টা হজম করা কঠিনই ছিল। এই বিষয়টিকে ধরে আগামী বছর যদি আরও অনেক ক্রিকেটারকেই টেস্ট দলে দেখা না যায় সেক্ষেত্রে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। হয়তো আগামী বছর ইংল্যান্ড সফরে ভারতকে নেতৃত্ব দিতে নতুন কোনও অধিনায়ককে দেখা যেতেই পারে।